সমুদ্রের ডাকে কুবিসাস
জয়নাল আবেদিন
🕐 ১২:৫৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৭, ২০২১
মানুষ আর সমুদ্রের মধ্যে গভীর মিতালি সে প্রাচীনকাল থেকে। বায়ু পরিবর্তনের জন্য কিংবা নিছক আনন্দের জন্য বন্ধু-পরিজন নিয়ে কোথাও যাওয়ার কথা উঠলেই মনে পড়ে যায় সমুদ্রের কথা। সমুদ্রের সঙ্গে এই যে আত্মার বন্ধন, তা চাইলেও তো ছিন্ন করা যায় না। এ আনন্দ লাভের জন্য এবার সমুদ্রের ডাকে সাড়া দিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির যাত্রা কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। সম্প্রতি কুবিসাসের সাবেক ও বর্তমানের মধ্যে আনন্দের মেলা বসে কক্সবাজারে। ৪৮ জনের বহর নিয়ে দুইদিন যাত্রা শেষে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। শিক্ষক, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বনভোজনটি। বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় বাস ও মাইক্রোবাস দুইটি কক্সবাজারে পৌঁছে। রুমে চেকিং ইন করার পর সকালের নাস্তা শেষ করার পর যেন তর সয়না সবার। বিশ্রাম না নিয়ে ছুটে যায় সমুদ্রে গা ভিজাতে। এ যেন সমুদ্রের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। লোনা জ্বলে গা ভিজানো কত আনন্দ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ দেখান সদ্য বিদায়ী সভাপতি জাহিদুল ইসলাম । তিনি বলেন, ক্যাস্পাস ছেড়ে গেছি কিন্তু বন্ধনের মায়া এখনো সজীব।
বনভোজনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্ব আর সৌহার্দ্যতা আরও গভীর হবে। কুবিসাসের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক আহসান হাবিব ও তার স্ত্রী নাজনীনের সমুদ্রের সঙ্গে মিতালির খুনসুটি চমকপ্রদ ছিল। সমুদ্রে গা ভিজিয়ে সবার চোখে মুখে আনন্দ যেন বলে দেয় ভ্রমণের দিনগুলোই আমাদের। বিকেলের সময়টা যেন সমুদ্রের আভায় শিহরণ করে নেয়। সূর্যাস্তের সঙ্গে ছবির তোলার হিড়িক যেন সরগম। কেউ কেউ সূর্যকে হাতে, কেউ মুখের মধ্যে ছবি ধারণ করা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
শেষ দিন দর্শনের জন্য রাখা হয় রামু বৌদ্ধবিহার আর রাবার বাগান। রামুর উত্তর মিঠাছড়ির পাহাড় চূড়ায় ১০০ ফুট লম্বা গৌতম বুদ্ধের সিংহশয্যা মূর্তি দেখে থমকে দাঁড়াতে হয়। স্থানীয়দের মতে, এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড়। এর আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য ছোট-বড় বৌদ্ধবিহার। রাবার বাগানের সারি সারি রাবার গাছগুলো সত্যিই মনোমুগ্ধকর। রাবার ছড়ানোর কারুকার্যগুলো সামনাসামনি না দেখলে না বোধগম্য্য হতো না।একটু সামনে গেলে বাগানের ভিতরে দেখা যায় বাসভবন। তার পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে শতবর্ষের বটগাছ। তারাই যেন কালের সাক্ষী হয়ে স্বতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় পাহারা দিচ্ছে পুরো রাবার বাগান। আর এদিকে আবার শিক্ষকদের একটা অংশ রোহিঙ্গাদের দেখতে চলে যায় উখিয়ায়। রোহিঙ্গাদের জীবন ব্যবস্থা কাছ থেকে অবলোকন করেন তারা। কুবিসাসের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক আহসান হাবিব বলেন, সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কটা একান্তই আত্মিক। এর প্রতিটি কলাকুশলী আত্মার স্বজন। যেকোনো সম্পর্ককে অধিকতর হৃদ্যতাপূর্ণ করতে ভ্রমণের মতো ‘ইনফর্মাল আয়োজনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এবারের এই সফরও সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। সম্পর্কের এই নতুন মাত্রা কুবিসাসের আগামী পথচলাকে সমৃদ্ধতর করবে, এমনটাই প্রত্যাশা।
ক্লান্তি আর বিষণ্ণতা থেকে হাফ ছেড়ে বাঁচতে ও সজীবতা পেতে প্রতিবছর বনভোজনের আয়োজন করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।