পড়াশোনার পাশাপাশি করছেন কর্মসংস্থান
আবু বকর রায়হান
🕐 ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২০
সবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়েন। একবছর আগে নিজ উদ্যোগে শুরু করেন অনলাইন টি-শার্টের প্রতিষ্ঠান টি-মার্চ। বছর ঘুরতেই তার কারখানায় ২০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ধীরে ধীরে বাড়ছে পরিসর। প্রতি জেলায় গড়ে উঠছে টি-শার্টের ফেঞ্চাইজি। বলছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসরুল বারী সিয়ামের কথা।
পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষার্থীরা যেখানে চাকরির পেছনে ছুটে চলে। সেখানে ব্যতিক্রম এ শিক্ষার্থী নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি শুরু করেছেন অন্যদের কর্মসংস্থানের কাজ। বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টি-শার্টের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। শুরুতে টি-শার্টে বিভিন্ন ডিজাইনের কাজ করলেও বর্তমানে সারা দেশে উদ্যেক্তা তৈরির কাজ করছেন।
শিক্ষার্থী সিয়াম জানান, বাংলাদেশে কেউ যদি মার্কেট থেকে টি-শার্ট কিনতে যায়, তাহলে দেখা যাবে টি-শার্টে বিভিন্ন ধরনের লিখা। কিন্তু একজন মানুষ তার নিজের ইচ্ছেমতো কিছু লিখে টি-শার্ট পরতে পারে না। আর যদিও নিজের প্রিয় কিছু লিখতে চায় একটি টি-শার্টে তা সম্ভব হয় না। আর তাই আমি সে সুযোগ করে দিতে কাজ করছি। একজন ব্যক্তি তার পছন্দ অনুযায়ী লেখা মাত্র একটি টি-শার্টে লিখতে পারবে। বর্তমান সময়ে ব্যবসা করার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। আর তাই তো পুঁজি না থাকায় ইচ্ছে থাকার পরও ব্যবসা করতে পারছেন না অনেক মানুষ। তাদের জন্যই ব্যবসায়িক মডেল নিয়ে কাজ করছেন কুবি পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী। একজন মফস্বল শহরের মানুষ, যার কাছে পুঁজি নেই। তবে ব্যবসার ইচ্ছে আছে। তিনি ইচ্ছে করলে টি মার্চের ওয়েবসাইটে তার ডিজাইন জমা দিতে পারবেন। জমা দেওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যেই সারা দেশে এই ডিজাইনের টি-শার্ট পাওয়া যাবে। যা থেকে আয়ের অর্ধেক মুনাফা ডিজাইন প্রদানকারী পাবেন। বিনা বিনিয়োগে এমন ব্যবসায়িক মডেল সবার কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, বর্তমানে মানুষ যে কাজকে উদ্যোক্তা বলে তা আসলে ব্যবসা। উদ্যোক্তা মানে হলো নিজস্ব আইডিয়ার মাধ্যমে ব্যবসার নতুন রূপ দাঁড় করানো। আর আমাদের সিয়াম তা করে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক মানুষের তার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে। টি-মার্চের মডেল অনুযায়ী সামনে এগিয়ে যেতে পারলে দেশ ছাড়িয়েও আলোচিত হবেন তিনি।
সারা দেশের মানুষের কাছে নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসার সুফল পৌঁছে দিতে এর মধ্যে বিভিন্ন জেলা শহরে সাতটি ফেঞ্চাইজি গড়ে তুলেছেন সিয়াম। কোনো শো-রুম ছাড়াই একজন কাপড়ের দোকানি জেলা শহরে ফেঞ্জাইজি নিতে পারেন। যাতে করে একজন উদ্যোক্তা সহজে ফেঞ্জাইজির মাধ্যমে নিজ জেলায় কাজ করতে পারবেন।
শিক্ষার্থী নাসরুল বারী সিয়াম বলেন, ‘আমাদের দেশে দিন দিন শিক্ষিত বেকারের হার বাড়ছে। পড়াশোনা শেষ করেই আমরা চাকরির পেছনে ছুটতে শুরু করি। কিন্তু আমরা ভাবি না নতুন কর্মসংস্থান না হলে কিভাবে বেকারত্বের বোঝা থেকে দেশ মুক্ত হবে। তাই আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি দেশের বেকারত্ব ঘোচাতে কাজ শুরু করেছি।’