ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সুনসান নীরবতা

জেলি আক্তার
🕐 ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২০

একটা ভুল সিদ্ধান্তে জীবন থেকে এক বছর হারিয়ে ফেলার পর চারপাশে সবকিছু যেন নিজেকে চোখ রাঙাতো। জড়িয়ে পড়েছিলাম একটা ভুল সিদ্ধান্তের গোলক ধাঁধায়। তবে অনেক উত্থান পতন অনেক হোঁচট খাওয়ার পর পরিচয় হল প্রিয় ক্যাম্পাসের সঙ্গে সেই প্রিয় নাম কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ।

মহামারি করোনার কারণে সবকিছু যেন থমকে গেছে, থমকে গেছে অনেক চঞ্চলতা, তবে দুই বছরে ক্যাম্পাসে কাটানো সময়গুলো এখন শুধুই স্মৃতি। বাসা থেকে কলেজের দূরত্ব প্রায় ২৬ কি.মি. প্রথম প্রথম এতটা দূরত্ব নিজের ভেতর ক্লান্তি আর অনীহা সৃষ্টি করেছিল কিন্তু তার রেশ ছিল স্বল্প সময়। যখন বন্ধু-বান্ধবী আর প্রিয় শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গে পরিচয়ের বয়স বেড়ে গেল তখন যেন ক্লান্তি অনীহা সবই অবসর নিয়ে নিল।

বছর দুয়েকে কত স্মৃতি জমে গেছে, একদিন পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল দুজন বান্ধবীর। তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসা করছিল, কতটুকু পড়া হয়েছে? যেহেতু আমরা উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী গাছপালার বৈজ্ঞানিক নাম আলোচনা করছিলাম, বৈজ্ঞানিক নাম আমাকে জিজ্ঞেস করার পর আমি যা বলছি তা হাস্যকর ছিল ভীষণ, কারণ দশটা নামের মধ্যে প্রায় আটটা নাম বলতে পেরেছি। তবে মজার বিষয় প্রায় ছয়টা উচ্চারণ ছিল অদ্ভূত ধরনের এই নিয়েই সে কি হাসাহাসি যদিও সে হাসি আমাকে ছোট করার জন্য ছিল না। তারপর অবশ্য শিখেছিলাম। 

এছাড়া ক্যাম্পাসে কত আড্ডা দেওয়া, পুকুর পাড়ে বসে বাদাম খাওয়া ঝালমুড়ি খাওয়া, কখনো বরই কিংবা জলপাইয়ের আচার খাওয়া কিংবা অবসরে সময় কাটানোর জন্য গল্পের হাট বসানো, আবার বসার জন্য পুকুর পাড়ে গাছের ছায়া খোঁজা, ঘন দূর্বাঘাস খোঁজা নিয়ে হৈ চৈ, অথবা তালতলার সেই ফুচকা, চটপটি খাওয়ার সময় সেলফি প্রতিযোগিতার সময়গুলো আজ ভীষণ মনে পড়ে। মনে পড়ে ক্লাসে বসে আমার এলোমেলো প্রশ্নে বান্ধবীদের জ্বালানো কিংবা মাঠে বসে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য উপভোগ করা সময়গুলো। যখন ২৬ কি.মি. পাড়ি দেওয়া একটা নিয়ম হয়ে উঠল। যাতায়াতের ১০ টাকা করে বাঁচিয়ে ছোট চায়ের দোকান কিংবা হোটেলে বসে একটা শিঙাড়া আর সমুচা খাওয়া নিয়ম করে শিখে গেলাম তখনই হঠাৎ সব যেন স্থবির হয়ে গেল।

দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে কলেজ যাওয়া হয়ে ওঠে না। আজ শুধু মোবাইল ফোনের গ্যালারি জুড়ে কিছু ছবি যা দেখলেই মনে হয় আবার কবে আমাদের দেখা হবে আবার কবে আমরা ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দেব নতুন করে। মাঝে মাঝে মনে প্রশ্ন জাগে কেমন আছে প্রিয় ক্যাম্পাস আচ্ছা প্রিয় ক্যাম্পাসের কি ভালো লাগে সুনসান নীরবতা?

 
Electronic Paper