ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নতুন ভোরের অপেক্ষা

রেজাউল ইসলাম রেজা
🕐 ১:২১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২০

আর কত অপেক্ষা। কবে আসবে সুদিন। দেখা হবে প্রিয় ক্যাম্পাসের সাথে, প্রিয় মানুষগুলোর সাথে। ক্যাম্পাস ছেড়ে যেদিন বাসায় আসা, সেসময় কখনোই ভাবিনি, এই ছুটির মেয়াদ এতটা দীর্ঘ হবে। স্বাধীন জীবনেও বেজে উঠবে পরাধীনতার সুর। শিকলবন্দি জীবনে পা দিতে হবে আমাদের। এইত আর কটা দিন এরকম শুনতে শুনতেও আজ আমরা বড্ড ক্লান্ত। উজানের বিপরীতে সাঁতরে সাঁতরে শরীরও অবস হয়ে আসছে। থমথমে জীবন থেকে রেহাই মিলবে কবে। কে দিবে এই প্রশ্নের উত্তর।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জন্য এক নতুন আলোর সঞ্চার করে। যে আলোয় জীবন পাল্টে যায়, পায় গতিময়তা। বাড়িতে থাকলে সবসময় এক অদৃশ্য শাসনের বেড়াজালে থাকতে হয়। কিন্তু হল জীবনে তার ছিঁটে ফোঁটাও থাকে না। বন্ধু, বড় ভাই, আপু, শিক্ষক-শিক্ষিকারাই হয় আত্মার আত্মীয়। নতুন পরিবার। সেই পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা যে কতটা কষ্টদায়ক, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেছি এখন। সকাল হলেই এক সাথে ক্লাসে যাওয়া, আবার ক্লাস শেষে রুমে আসা।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা, গান-বাজনা, হৈ-হুল্লোরে কেটে যায় দিন রাত। উৎসবের আনন্দে মেতে কখন যে সময় কেটে যেত তার খেয়াল থাকতো না। বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার অনাবিল আনন্দ যেন এখনও চোখের সামনে ভাসছে। মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা। গভীর রাতে সাত কিমি সাইকেল চালিয়ে ক্যাম্পাস থেকে লেবুখালীর বিখ্যাত ফরাজীর মিষ্টি খেতে যাওয়া, আবার কখনো গরম রুটি খাওয়ার জন্য ব্যাকারিগুলোয় হানা দেওয়া। বন্ধুরা মিলে বাজার করে একসাথে রান্না করে খাওয়া। 

করোনার কারণে এবছর রমজান মাস বাড়িতেই থাকতে হয়েছে। গত রমজানগুলোয় সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ছিল সারাদিন রোজা রেখে সবার সাথে ইফতার করা। হলগুলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বড় একটা অংশজুড়ে থাকে। প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীরা একে দ্বিতীয় হোম নামে বিবেচনা করে।

হল লাইফে সবচেয়ে বেশি আনন্দের ব্যাপার হলো, দিনশেষে সবার সাথে একবার হলেও দেখা হওয়া, কথা হওয়া। সিনিয়র, জুনিয়র সবাই যেন একই সুতোয় বাঁধা।

বিশেষ করে ফুটবল বা ক্রিকেট বিশ্বকাপ অথবা অন্য কোনো জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোয় টিভিরুমগুলো হয় আরেক প্রতিযোগিতাময় সময়ের সাক্ষী। এর থেকে আনন্দের সময় হয়তো আর নেই। সেসব আজ শুধুই স্মৃতি। মনে করলেই বুকের কোণে শূন্যতায় ভরে যায়। বুকভরে নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। প্রত্যেকটি মুহূর্ত এখন শুধুই হতাশা। তবুও প্রিয় ক্যাম্পাসে ফেরার অপেক্ষায় আমরা। অপেক্ষা করি, করোনাহীন নতুন ভোরের।

 

 
Electronic Paper