ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নোবিপ্রবি শিক্ষক পেলেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

আব্দুল কবীর ফারহান
🕐 ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ০৭, ২০২০

নোয়াখালী  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন এবার নোয়াখালীর হাতিয়া উপকূলের জলাভূমি থেকে ‘গ্লাইসেরা শেখমুজিবিথ’ (Glycera sheikhmujibi)  নামে আরেকটি নতুন পলিকীট প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন। তাঁর এই সাফল্য যাত্রায় গবেষণার সঙ্গী হিসেবে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়াম রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পলিকীট বিজ্ঞানী ড. প্যাট হ্যাচিংস। এর আগেও তিনি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে নেফটাইস বাংলাদেশি (Nephtys bangladeshi), নিউমানিয়া নোবিপ্রবিয়া (Neumania nobiprobia) ও অ্যারেনুরাস স্মিটি (Arrenurus smiti), এবং ব্রুনাইয়ের সমুদ্র এলাকা থেকে ভিক্টোরিয়োপিসা ব্রুনেইয়েনসিস (Victoriopisa bruneiensis) নামের আরো চারটি নতুন অমেরুদ-ী প্রজাতি আবিষ্কার করেন।

প্রাণিজগতের এনেলিদা ( Annelida) পর্বের অন্তর্ভুক্ত এই হাল্কা গোলাপী বর্ণের অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও নলাকৃতির নতুন প্রজাতির নামকরণ করেছেন বাংলাদেশের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী ও বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা ও গবেষণা ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্য অবদান চিরস্মরণীয় করে রাখতে এই নামকরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক ড. বেলাল। 

সদ্য আবিষ্কৃত ৪২ মি.মি. দৈর্ঘ্যের পলিকীটটি সর্বমোট ১৫৮ টি খন্ডে খন্ডিত এবং দেহের মধ্যভাগে ২.২ মি.মি. প্রস্থ। এই ক্ষুদ্রাকৃতি প্রাণীর অন্যতম শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো এর একটি ঘন্টাকৃতির দীর্ঘায়িত চোষক মুখ রয়েছে যা নলাকার ও নমনীয় এবং প্যাপিলা দ্বারা আবৃত কিন্তু কোন চোখ থাকেনা। চোষকের প্রান্তিক অংশে চারটি কালো হুকের মত চোয়াল রয়েছে। চোষকে তিন ধরণের প্যাপিলা থাকে। চোষকের দুই জোড়া চোয়াল শক্ত ত্রিকোণাকৃতির এইলেরনের সাথে যুক্ত থাকে। এছাড়া দেহের মধ্যখানে সমান আকারের অঙ্গুালাকৃতির লোব বিদ্যমান। 

এটি সংগ্রহ করা হয় হাতিয়ার নিকটবর্তী মেঘনা নদীর মোহনা থেকে। পলিকীটের নতুন এই প্রজাতিটি সাধারণত লোনা কর্দমাক্ত জলাশয়ের তলদেশের মাটিতে বসবাস করে এবং মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ছাড়া জীবজগতের প্রতিটি প্রাণিখাদ্যর জন্য একে অপরের উপর নির্ভরশীল তাই খাদ্যচক্রে এরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ড. বেলাল জানান, বাংলাদেশের পলিকীট জীববৈচিত্র্য নিয়ে তিনি গত পাঁচ বছর পৃথিবীর বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়াম রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ড. প্যাট হ্যাচিং-এর সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা করছেন।

ড. বেলাল বলেন, এই পর্যন্ত পৃথিবী থেকে প্রায় দশ হাজার প্রজাতির পলিকীট আবিষ্কৃত হয়েছে। অথচ প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৩০টি প্রজাতির তালিকা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও জীববৈচিত্র্য নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা হওয়া দরকার।

 
Electronic Paper