ফিরতে চাই ভালোবাসার রাজ্যে
নিশি পারভিন
🕐 ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ, জুন ০৭, ২০২০
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নাম ‘গণরুম’। রুম নম্বর ১০৯। ছোট্ট একটি রুম। ছোট ছোট বিছানা। তাতে কি! ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এই রুমটিই আমাদের কাছে একটি রাজ্য। যে রাজ্যে আমরা সবাই রাজা। যে রাজ্যে আমার বলে কিছু নেই। রয়েছে নিজ নিজ স্বাধীনতা, নেই কোন বাঁধা। আমরা রুমে ৮জন থাকি। যেন ছোট খাটো একটি পরিবার। আয়শা, সাদিয়া, অন্তরা, তানি, আফসানা, খুশি, মিম মিলে আমরা সকলেই একটি পরিবার। অগনিত স্মৃতি, খুনসুটি, ভালোবাসা জড়িয়ে আছে তা ছোট পরিসরে বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
সবাই মিলে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়া, একসাথে ট্রুথ-ডেয়ার খেলা, একই রুমে থেকেও ভিডিও কলে কথা বলা, মাঝ-রাতে নাচ-গান করা, রাত জেগে আড্ডা দেওয়া। আহা! সব যেন আজ স্মৃতির পাতায় স্থান পেয়ে পেয়ে গেছে। সাদিয়া ছিল আমাদের নাচের গুরু। অনেক ভালো নাচ করে, যখনই ওর মন খারাপ হতো তখনই নাচতো, ওর ধারণা ছিল নাচলে মনের মধ্যে চাপা কষ্টগুলো দূর হয়।
মিম ছিল রান্নায় সেরা, বাহারী রকমের নান্না জানতো সে। রুমের ঘুম কুমারী ছিল খুশিমনি। সারা দিনরাত ঘুমালেও ক্লান্তি তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। একদম বাচ্চাদের মতো করে কথা বলতো সে, আর তার সাথে রুমে মাঝে মাঝেই পাঁচকড়ি খেলতাম। আমার বাসা পাবনা। আমাকে রাগিয়ে তোলার জন্য তানি একটু পর পরই বলতো এই নিশি, তোর বাসাটা যেন কোথায়? আমিও মজা করে তাকে উত্তর দিতাম। বলতাম পামপা। বন্ধুদের খুবই মিস করছি।
জানি না কবে করোনা নামের এই অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশ! কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কবেই বা আবার ফিরতে পারবো আমার ভালোবাসার রাজ্যে।
আবারও ফিরতে চাই প্রিয় রুমে। ফিরতে চাই ভালোবাসার মানুষদের কাছে। সেই সোনালী দিনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছি প্রতিনিয়ত।