সমাবর্তন তারুণ্যের উচ্ছ্বাস
ইসরাত জাহান
🕐 ৩:৫৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২০
চারিদিকে উৎসবের আমেজ। একে একে সবাই কালো টুপি আর কালো গ্রাউন পড়ে গন্তব্যে বেরিয়ে পড়ে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্র্যাজুয়েটদের মিলন মেলায় পরিণত হয় প্রিয় ক্যাম্পাস। যেখানে দীর্ঘদিন পর আজ আবার ফেলে আসা পুরনো স্মৃতিগুলো সজীব হয়ে উঠবে। দেখা হবে দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিক্রম করা সেই বন্ধুদের সঙ্গে। এসব ভেবেই সবার চোখে মুখে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। কিন্তু সেই হাসি মুখ ক্ষণিকেই মলিন হয়ে যায়, আজ যে তাঁদের সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঁটানো সেই সোনালী দিনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি।
বলছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত ১ম সমাবর্তনের কথা। আর এই সমাবর্তনকে সামনে রেখে সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করেছে উৎসবের আমেজ। শুক্রবার থেকেই বিতরণ করা হয় সমাবর্তনের পোশাক ও গিফট সামগ্রী। কালো গ্রাউন পরে শিক্ষার্থীদের মাঝে চলে সমাবর্তন প্রস্তুতি। কেউ ছবি তুলছেন, আবার কেউ বন্ধুদের নিয়ে মেতে উঠছেন উৎসবে। আর এই উৎসবের সামিল হয়েছেন গ্র্যাজুয়েটদের বাবা-মা, এবং তাঁদের ছোট্ট শিশুরাও।
প্রতিটি শিক্ষার্থীরই ইচ্ছে থাকে কালো গ্রাউন গায়ে জড়িয়ে গ্র্যাজুয়েট সম্মাননা অর্জনের। এ সম্মাননা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সমাবর্তনে ২ হাজার ৮৮৮ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী ১ হাজার ২২২ জন এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ১ হাজার ৬৬৫ জনকে ডিগ্রি প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া শিক্ষায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৪জন শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয় চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক।
শিক্ষা জীবনের শেষ দিনটাকে আরো স্মৃতিময় করে রাখতে অনেকে নিয়ে এসেছেন বাবা-মাকে। কেউ গ্রাউন আর টুপি পরিয়ে ছবি তুলছেন তাদের সঙ্গে। আবার কেউ নিচ্ছেন পদধূলি। এমনি ভাবে বাবাকে গ্রাউন পরিয়ে ছবি তুলছিলেন ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নূরুল আমীন। বাবার থেকে দোয়া নিতে নিতে বলছিলেন, ‘বেশ কয়েকবছর আগে আমার বাবা আমাকে ভর্তি করিয়ে দিতে এসেছিলেন এই ক্যাম্পাসে, আর এখন আবার আসলেন আমার সাথে সমাবর্তনে। বাবাকে এই আনন্দের সময়ে পাশে পেয়ে অসাধারণ লাগছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ এই অসাধারণ আয়োজন করার জন্য।’
সময় বয়ে চলে তাঁর আপন গতিতে। এসময় গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। শেষ হয় সমাবর্তনের মূল আনুষ্ঠানিকতা।