ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দেড়যুগ পূর্তি উৎসব

আনোয়ার কাজল
🕐 ৩:২১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২০

ঢাকার অদূরে ছায়াঘেরা, পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ছায়া সুনিবিড় শান্তিময় পরিবেশ আশুলিয়া। সেখানে ১৫০ একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় গত ২২-২৫ জানুয়ারি চার দিনব্যাপী ‘অষ্টাদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়।

 

উৎসবের প্রথম দিন ২২ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনের অংশ হিসেবে ১০০টি ঘুড়ি উড়িয়ে এ উৎসব উদযাপনের উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, এমপি। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য সাংবাদিক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ। তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু।

সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের সামনে অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রুবানা হক। এছাড়াও তিনি আনিসুল হক ভবনের উদ্বোধন করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের বোন জেসমিন ওয়াফা।

ঢাকার অদূরে, পাখির কলকাকুলিতে ভরা, শহরের কোলাহলমুক্ত, ছায়া সুনিবিড়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যম্পাস পরিপূর্ণ হলো শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের এক মিলনমেলায়। প্রতি বছর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব একদিনে অনুষ্ঠিত হলেও এবারই প্রথম চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো এ আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের অধীনে চার দিন ধরে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম দিনের আয়োজনে উৎসবে মেতে উঠেছিল প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিন ছিল এলাইড হেলথ সায়েন্স অনুষদ এবং মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের যৌথ আয়োজন। তৃতীয় দিন ছিল ব্যবসায় ও উদ্যোক্তাবৃত্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের উৎসব এবং চতুর্থ ও সমাপনী দিনে ছিল বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি অনুষদের আয়োজন। প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যন ড. মো. সবুর খান। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিন অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

কেউ ব্যস্ত ছিল তাদের নিজেদের বিভাগের বৈচিত্র্য অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী ও অতিথিদের কাছে তুলে ধরতে, কাউকে দেখা যায় মঞ্চে গান ও নাচ পরিবেশন করতে আবার কেউ অভিনয় দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করছে।

শেষ দিনে সকাল ৯-৩০ মিনিটের মধ্যেই ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর পদভারে ও ব্যাপক উচ্ছ্বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠে। সকলের মাঝেই একটা সাজ সাজ রব পরিলক্ষিত হয়। সকল শিক্ষার্থীর কাছে ক্যাম্পসের মূল আকর্ষণ ছিল সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও অপূর্ব নির্মাণ শেলীতে ভাস্কর ও নান্দনিক সৌন্দর্যের আধার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন।

সারাদিন মান এ ভবনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের কৌতুহলের অন্ত ছিল না। চলতে থাকে অবিরাম ফটো সেশন। ক্যাম্পাসের সম্মুখভাগ, প্রশস্ত সিঁড়ি, দোতলা তিনতলা যে যেখানে পারছে, ক্যাম্পাসকে একান্ত আপনার করে ক্যামেরা বা মোবাইলে ছবি তুলে নিচ্ছে। কেউ কেউ আবার শুরু করে বাস্কেট বল খেলা, কেউ আবার বিশাল দাবাকোর্ট নিয়ে ছিল ব্যস্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গান আর সুরের মূর্ছনা শিক্ষার্থীদের দারুনভাবে মাতিয়ে তোলে একে একে অনেকগুলি গান পরিবেশনের পর বিশালের সূর্য তার লাল আভা ছড়াতে থাকে। ক্রমে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই বেজে উঠে বিদায়ের সুর। ভাঙ্গে মিলন মেলা। ক্লান্ত পাখিরাও ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা একে একে অপেক্ষমান বাসগুলোতে করে আপন গন্তব্যে ফিরে এসেছে। আবার এক বছর পর এমনি আরও একটি সফল আয়োজনের প্রত্যাশায় সবাই বাড়ি ফিরে। ১৫ হাজার শিক্ষার্থী পুরো দিনটিকে রঙ্গিন করে স্মৃতির পাতায় আটকে রাখবে অনেক দিন।

 
Electronic Paper