ফেলে আসা স্মৃতি
ফজলে এলাহী ফুয়াদ
🕐 ৩:১৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২০
এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফেরার পথে প্রতিদিনই নোবিপ্রবির সামনে দিয়ে আসতাম আর স্বপ্ন দেখতাম, একদিন ঘুরে দেখব পুরোটা। ১০১ একর, কী আছে এখানে? তখন একদমই মাথায় আসেনি যে, মাত্র কয়েক দিন পরে এই জায়গায় হবে আমার নিজের ঠিকানা! ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর। সকাল ৮টায় ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে উপস্থিত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একটি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী ইদ্রিস আলী নামের বিশাল অডিটোরিয়ামে।
জীবনের নতুন এক অধ্যায়, নতুন সব মুখ। নোবিপ্রবি নিয়ে কল্পনাটা ছিল একটু ভিন্ন। এখানে ক্লাস করার চেয়ে ঘোরাফেরা এবং আড্ডা দেওয়া বেশি। স্কুল কলেজের মতো নিয়মের বাধাধরাও নেই। কিন্তু কোথায় কিসের কল্পনা, এসে দেখি এ এক নতুন জগত! প্রথম দিনের প্রথম ক্লাসেই স্যারের নিয়ম কানুন নিয়ে বিশাল এক লেকচার। ঠিক সময়ে না আসলে ক্লাস এ টুকতে দেওয়া হবে না, উপস্থিতির জন্য ৫ নম্বর বরাদ্দ আছে, এ কথা শুনে তো রীতিমতো চোখ কপালে!
সাদী বলেন, লাল সাদা বাসের কথায় মনে পড়ে গেল কিছু সুখকর স্মৃতি সে দিন সোনাপুর দিয়ে আমাদের নোবিপ্রবির লাল বাসের দোতলায় বসে গান গাইছি আমরা, হঠাৎ চোখ পড়ল রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক বাবার দিকে। তার পেছনে অবশ্যই যথেষ্ট কারণ আছে। এই ভদ্রলোক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই ছিলেন আজ তার ছেলেকে আঙুল দিয়ে আমাদের বাসের দিকে কী যেন দেখাচ্ছেন।
হয়তো বলছেন বাবা তোমাকে এ বাসে চড়তে হবে। শান্তি নিকেতনে বসে চায়ের কাপে ঝড় তোলা, সালাম হলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখা, ব্যাকলগ বনে বসে ক্লাস মিস দেওয়া, নীল দীঘির পাড়ে জন্মদিন সেলিব্রেশন করা, বাসের সিট রাখতে হুড়োহুড়ি করা এসব আমাদের দৈনিক রুটিনে ছিল।
এমন সব চিন্তা করতে করতে আর সব নিয়ম কানুনের বেড়াজালে ৪টি বছর পার হয়ে গেল। অবশেষে শুরু হলো সমাপ্তির সূচনা। চার বছরের এত স্মৃতি, এত সুখ দুঃখ, হাসি কান্না; সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় বিদায় বেলায়।