ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শীতের পিঠা আড্ডায় শিক্ষার্থীরা

আলী ইউনুস হৃদয়
🕐 ১২:৪৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২০

শীতের সন্ধ্যায় চাদর মুড়ি দিয়ে মাটির চুলার পাশে বসে মায়ের আদর মাখা হাতে বানানো ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা, চিতই পিঠার স্বাদ-গন্ধ-স্মৃতি আর আড্ডা অনেকেরই মনে পড়ে। পিঠা খাওয়ার এ দৃশ্য গ্রাম বাংলায় দেখা গেলেও যান্ত্রিক নগরে তা প্রায়ই অসম্ভব। এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঠিকই পিঠার দোকানগুলোর সামনে দেখা গেলো শিক্ষার্থীদের আড্ডা বসেছে। চিতই আর ভাপা পিঠার উষ্ণতায় সেই আড্ডা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে। আবার দোকানগুলোর সামনে পিঠার জন্য দলবেধে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষাও করছে। এভাবেই শীতের পিঠা আড্ডায় ক্যাম্পাসের বিকেল-সন্ধ্যা গড়িয়ে যাচ্ছে।

এমনই দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রোকেয়া হলের সামনে। আর বিকেল ৪টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে পিঠা খাওয়া আর আড্ডা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, খালেদা জিয়া হলের সামনে পিঠার দোকান বসেছে। তবে রোকেয়া হলের সামনের পিঠার দোকানেই শিক্ষার্থীদের গল্প-আড্ডা চোখে পড়ার মতো। বিকেল হতেই পিঠার দোকানের আশেপাশে ও বটতলায় বসে ছোট-বড় আড্ডার আসর।

দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, একযোগে চৌদ্দটি চুলায় একসাথে তৈরি হচ্ছে পিঠা। পিঠা ব্যবসায়ী শুকুর আলীসহ আরো ১০ জনের কেউ বানাচ্ছেন ভাপা পিঠা কেউ বানাচ্ছেন চিতই পিঠা। আতপ চাউলের আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চিতই পিঠা আর সিদ্ধ চাউলের গুড়া দিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি হচ্ছে।

গরম গরম পিঠা শিক্ষার্থীদের আড্ডার আসরে পৌঁচ্ছে দিচ্ছেন তিনজন কর্মচারী। তাদের একজন সাত রকমের ভর্তা তৈরি করে প্লেট সাজাচ্ছেন। সাত রকম ভর্তার মধ্যে রয়েছে চিংড়ি মাছের শুটকি, বেগুন, কাঁচা মরিচ, ধনিয়া পাতা, কালোজিরা ভর্তা। পিঠার সঙ্গে ভর্তার প্লেটও চলে যাচ্ছে আড্ডায়। ক্যাম্পাসের পিঠার দোকানে বন্ধুরা মিলে যখন একসঙ্গে পিঠা খাচ্ছে তখন নিজের অজান্তেই ক্ষণিকের জন্য মনে পড়ে যায় গ্রামের বাড়িতে চুলার ধারে বসে মায়ের হাতের পিঠা খাওয়ার কথা। পিঠা খেতে আসা রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী এ্যানি বলেন, এখানকার পিঠা খেতে অসাধারণ। তাই তো বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খেতে এসেছি। আর সঙ্গে চলছে আড্ডা। আমরা আমাদের পরিবারের সঙ্গেও পিঠা খেয়ে থাকি। কিন্তু সেখানকার মজা আর এখানকার পিঠা খাওয়ার মজা আলাদা। আর পিঠার দামও অনেক কম। তাই ক্যাম্পাসে আড্ডার এখন অন্যতম জায়গা এই পিঠার দোকানগুলো।

বিশ^বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু নাঈম বলেন, পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি এখানে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। এটা দেখতে এসেছি বন্ধুদের সঙ্গে। এছাড়া এখানকার পিঠা খেতে ভালো লাগে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খেতে এসেছি।

পিঠা বিক্রেতা শুকুর আলী বললেন, আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে চার বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি। এখানে ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি করি।

প্রতিদিন ভাপা পিঠার জন্য ১৮-২০ কেজি আর চিতই পিঠার জন্য ৩০-৩৫ কেজি আটা লাগে। দিনে আট থেকে নয় হাজার টাকা বিক্রি করতে পারি।

 
Electronic Paper