ফিরে দেখা শিক্ষাঙ্গন ২০১৯
ওয়ালিয়ার রহমান
🕐 ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
সময়ের আবর্তে আর দুদিন পরে বিদায় নেবে ২০১৯ সাল। বিদায়ী বছরে দেশের সরকারি প্রাথমিক থেকে শুরু করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছিল অস্থিরতা। বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে একের পর এক বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করতে দেখা গেছে। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যও ছিল লক্ষণীয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের নৈরাজ্য ও আদিপত্য বিস্তার এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সারা দেশে আলোচনায় উঠে আসে।
ছাত্রলীগ কর্তৃক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ছিল বছরের সবচেয়ে আলোচিত ও কলঙ্কজনক অধ্যায়। বার বার ডাকসুর ভিপি নুরুল হকের ওপর হামলা কম নাটকীয়তার জন্ম দেয়নি। বছরের শেষ দিকে এসেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপির ওপর হামলা বিভিন্ন মহলে নেতিবাচক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনেক দিন ধরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আন্দোলন করেন। এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি বিরোধী আন্দোলন ছিল আলোচনায়। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুষের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস হয়। দীর্ঘদিন ধরে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া দেশের ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজেও। ছাত্রলীগ কর্তৃক রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ছিল আলোচিত।
তবে ২০১৯ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্যও কমতি ছিল না। বছরের শুরুর দিকে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। সাফল্যের মধ্যে রয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা। দীর্ঘদিন পর ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নতুন করে এমপিওভুক্ত করা হয়। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা, বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট মডেম সরবরাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি, ঝরে পড়া রোধ, সময় মতো শতভাগ ছাত্রছাত্রীর মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত উপবৃত্তি ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধি, স্কুলে মিডডে মিল চালু ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। গত বছরে বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিশুর শতকরা হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় শতভাগ উন্নীত হয়েছে।
সরকারের শিক্ষাবান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষার হার। বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৩.৯ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষার প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বছরের শেষ দিকে এসেও চাঁদপুর ও হবিগঞ্জে দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এছাড়া সম্প্রতি সরকারিকৃত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের আত্তীকরণ বিষয়টি চলমান রয়েছে।