ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ইবি সোহানের গল্প

অনি আতিকুর রহমান
🕐 ১২:০৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯

ইমানুল ইসলাম সোহান। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কৃষ্ণবর্ণের মিষ্টি ছেলেটি ইমানুল সোহান নামেই ক্যাম্পাসে বেশি পরিচিত। একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে ‘সাহিত্যের ছাত্ররা নাকি খুব রোমান্টিক হয়’। সম্ভবত সোহানদের কারণেই এই ধরনের কথার প্রচলন হয়েছিল। বহুগুণ সমেত দারুণ রোমান্টিক একটি ছেলে। একজন মানুষের এতগুলো গুণ হতে পারে তা ওকে না দেখলে বোঝা যেত না।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েই মন দেয় বিভাগের পড়াশোনায়। প্রয়োজনীয় নোট-বই জোগাড় করে শুরু হয় পড়াশোনা। ক্লাসের পড়ার পাশাপাশি লেখালেখিতে ইচ্ছে জাগে। কলেজ লেভেলে থাকতে নিয়মিত পত্রিকা পড়া হতো। সফলদের কাহিনী পড়া এবং সেই ফিচারগুলো ‘বুকশিট’ করে সংরক্ষণ করা ছিলো প্রিয় শখের একটি। 

ক্যাম্পাসে এসে সেই কথা মনে পড়তেই ইচ্ছে জাগে নিজের লেখা পত্রিকার পাতায় দেখার। সংযুক্ত হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাথে। এর ফাঁকে সৃজনশীল লেখা আর বইপড়ায় মনযোগ দিতে যুক্ত হয় সাহিত্য সংগঠন ‘স্বপ্ন’র সঙ্গে। তাছাড়া রোভার স্কাউট, ডিবেটিং সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের জড়িত হয় সোহান। পড়াশোনা, সাংবাদিকতা আর সাহিত্যচর্চা চলতে থাকে সমানতালে।

খেলার মাঠেও দুরন্ত ইমানুল সোহান। ক্রিকেট-ফুটবল দুটোই ওর পছন্দ। ফুটবলে মিডফিল্ডার আর ক্রিকেটে অলরাউন্ডার। বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট ফুটবল দুই দলেই করেছে নিজ ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধিত্ব। নিজের খেলোয়াড়ি দক্ষতা দিয়ে নজর কেড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বন্ধুদের আড্ডায় বেশ চনমনে সোহান। সহপাঠীরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

এ তো বাস্তব দুনিয়া। ভার্চুয়াল জগতেও সক্রিয় সোহান। আপদমস্তক একজন অনলাইন এক্টিভিস্ট। জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আলোচিত ইস্যুতে সরব তার কণ্ঠ। ফেসবুক, টুইটার অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি রয়েছে নিজস্ব ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এসব মাধ্যমেই প্রকাশ করে নিজের মতামত। ক্যাম্পাসের ভাল-মন্দ ঘটনাও দৃষ্টি এড়ায় না সোহানের। ফেসবুক লাইভ কিংবা ভিডিও ধারণ করে সাক্ষী হয় সেসব দৃশ্যের। ক্রিয়েটিভ লেখালেখিতেও দিন দিন হয়ে উঠছে ঝানু।

দেশের প্রথম সারির দৈনিকগুলোতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে লিখেছে ইতোমধ্যে অর্ধশত কলাম। ফটোগ্রাফি দারুণ পছন্দ সোহানের। আড়মোড়া ভোর, তপ্ত দুপুর কিংবা ঘন কালো রাত কোনো কিছুই থামাতে পারেনা অদম্য সোহানকে। ইতোমধ্যে বিবিসি বাংলার সেরা ফটোগ্রাফিতে স্থান করে নিয়েছে সোহানের তোলা একাধিক ছবি।

সোহান স্বপ্ন দেখে একজন সৎ সাংবাদিক হওয়ার। টিভি সাংবাদিকতা ওর বেশি পছন্দ। দিনাজপুরের ছেলে সোহানের পরিবারে বাবা-মাসহ তিনজন। বাবা সরকারি চাকুরে। মা গৃহিণী। সুসন্তান সোহানকে নিয়ে বাবা মায়ের তেমন দুশ্চিন্তা নেই। তারাও তাই বিশ্বাস রাখেন, ছেলে নিশ্চয়ই একদিন সফল হবে। সোহানের জন্য শুভকামনা।

 
Electronic Paper