সাফল্যের গল্প
লক্ষ্য নির্ধারণের সময় সচেতন ছিলাম
এ বি এস ফরহাদ
🕐 ১:৩০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৭, ২০১৯
প্রতিটি মানুষ একটি স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠে। কখনো নিজের স্বপ্নকে ছেড়ে বাবা-মার স্বপ্নপূরণই জীবনের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর সে স্বপ্নপূরণ জীবনের বড় প্রাপ্তিগুলোর মাঝে অন্যতম। তেমনি একজন হলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমান শিক্ষক আমেনা বেগম। যিনি তার সময় সচেতনতা ও নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায়ের ফলে অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ ফলাফল। ফলস্বরূপ পেয়েছেন ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ স্বপ্নপূরণ করে হয়েছেন একই বিভাগের শিক্ষক।
জন্ম কুমিল্লার বরুড়া থানার নলুয়া গ্রামে। স্কুলশিক্ষক বাবা মাওলানা মো. হানিফ ও গৃহিণী মা আয়েশা বেগমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয় আমেনা। স্কুলশিক্ষক বাবার স্বল্প বেতনে পাঁচ ভাইবোনকে শিক্ষা দেওয়া ছিল অনেক কষ্টের। তারপরও বাবা তাদের পাঁচ ভাইবোনকে শহরে পড়াশুনা করিয়েছেন। পাঁচ ভাইবোনের সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। আমেনা বলেন, গ্রাম থেকে উঠে আসা সম্ভব হয়েছে শুধু আমার বাবার অক্লান্ত পরিশ্রম ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন বলে।
ছোটবেলা থেকে আইটি সেক্টরে কাজ করার ইচ্ছা ছিল বলে কম্পিউটারবিষয়ক বিভাগে পড়তে চেয়েছি। আমার পড়ার ইচ্ছা ছিল কম্পিউটার সায়েন্সে, কিন্তু বাবা নিজের ইচ্ছায় ভর্তি করিয়ে দেন আইসিটি বিভাগে। তিনি চেয়েছিলেন এই বিভাগের শিক্ষক হতে সহজ হবে প্রথম ব্যাচে ভর্তি হলে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন থেকে স্বপ্ন দেখি আমার বিভাগের শিক্ষক হব, যেটি আমার বাবার স্বপ্নের দ্বারা প্রভাবিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বড় আপু একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজা আক্তারের গাইড লাইনে ধীরে ধীরে স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যাই। উল্লেখ্য, স্নাতকে তার ফলাফল ৩.৯৬ এবং স্নাতকোত্তরে ৪.০০। যা প্রকৌশলী অনুষদে তার সেশনে সর্বোচ্চ ফলাফল। যার ফলেই তিনি সম্মানজনক ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৬’ পুরস্কারে ভূষিত হন এবং বর্তমানে একই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
স্বর্ণপদক প্রাপ্তির চেয়ে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন বাবার স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হব আমি সে স্বপ্নপূরণ করতে পেরেছি। বাবার স্বপ্নের দ্বারা প্রভাবিত ছিলাম বলে আমার স্বপ্নপূরণ হয়েছে আজ। আমাদের শিক্ষক পরিবারে আমিও আজ শিক্ষক হতে পেরেছি। এতে আমি বাবা-মা ছাড়াও আমার সব শিক্ষক, ভাইবোনদের অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের স্বপ্নপূরণ করতে হলে প্রথমে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। সময় সচেতনতা সবচেয়ে বেশি দরকার, নিরবচ্ছিন্ন পড়াশুনা করতে হবে। শিক্ষক, বাবা-মার পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে। নিজের জীবনকে গড়ার তাড়না থাকতে হবে। নিজেকে গড়তে পারলে স্বপ্নপূরণ সম্ভব হবে।