সাফল্যের গল্প
চবি ক্যাম্পাসের শারমিন
রুমান হাফিজ
🕐 ১:৫০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০১৯
ক্লাসে এসে স্যার জিজ্ঞেস করলেন, আজকে এই পাঠের রিডিং কে পড়বে? বলার সঙ্গে সঙ্গে সবার আগে একটা মেয়ে হাত তুলল। পড়তেও লাগল। একটি বারের জন্যও স্যারকে বলতে হয়নি, এই লাইনটা আবার পড়ো কিংবা এই শব্দটা এভাবে। মেয়েটির নাম জেবুন নাহার শারমিন।
কুমিল্লায় জন্ম হলেও নৌবাহিনীতে বাবার চাকরির সুবাদে ছোট থেকেই চট্টগ্রাম শহরে বসবাস। পড়ালেখায় ভালো করার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও ছিল শারমিনের ভালো দখল। তবে সমাজের আর সবার মতো পড়ালেখার বাইরের কাজে বাধা যে একদম ছিল না তা নয়। তবে শারমিনের আগ্রহের কাছে বাধাগুলো হার মানে।
কলেজের পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতক আর সদ্য শেষ হলো তার স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফাইনাল। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম থেকেই যুক্ত হন সাংস্কৃতিক সংগঠন চবি আবৃত্তি মঞ্চের সঙ্গে। সেই থেকে নিজেকে মেলে ধরছেন অন্য এক শারমিন রূপে। টিভিতে সংবাদ পাঠ শুরু হওয়া মাত্রই সব রেখে টিভির সামনে এসে হাজির হতাম। পুরো সংবাদ না শুনে আমি উঠতামই না। ভালো লাগতো। আর মাঝে মাঝে বিজ্ঞাপন দেখে ভাবতাম যদি আমিও ওদের মতো করতে পারতাম! বলছিলেন শারমিন। ঠিক ওদের মতো না হলেও কিছুটা তো সফল এক্ষেত্রে তাই না? প্রশ্নের উত্তরে হাসলেন তিনি। বলতে লাগলেন, আবৃত্তি মঞ্চে যুক্ত হওয়ার পর থেকে নিয়মিত সব প্রোগ্রাম, ক্লাসে অংশ নিতাম। ওখানে ভালো করাতেই আস্তে আস্তে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আয়োজনে উপস্থাপনা করার সুযোগ হলো। তবে ক্যাম্পাসের প্রথম উপস্থাপনা করার সুযোগ হয় আমার বিভাগের একটা অনুষ্ঠানে। বাবা মো. ইউনুছ আর মা রশিদা বেগম। তিন মেয়ে আর দুই ছেলের মধ্যে সবার ছোট শারমিন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি মঞ্চের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ইয়েস (YES) সহ দলনেতা হিসেবে টিআইবিতেও কাজ করছেন। আবৃত্তি অঙ্গনে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার পাশাপাশি উপস্থাপনা শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো উপস্থাপনা করছেন বেশ সুনামের সঙ্গে। বিভিন্ন সংগঠনের কর্মশালায় আবৃত্তি ও উপস্থাপনার ওপর ক্লাসও নিয়ে থাকেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বেতারের তালিকাভুক্ত আবৃত্তিশিল্পী এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম শাখায় আবৃত্তি, উপস্থাপনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন তিনি। সামনের দিনগুলো নিয়ে কী ভাবছেন শারমিন। প্রশ্ন করতেই ওপাশ থেকে হাসিমুখে উত্তর দিলেন, সরকারি কিংবা বেসরকারি সেক্টরের একটা চাকরি তো করব। পাশাপাশি আবৃত্তি, উপস্থাপনা আর সংবাদ পাঠে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চান বলেও জানান এই উদ্যমী তরুণী।