ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তারুণ্যের চোখে স্বাধীনতা

রুমান হাফিজ
🕐 ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৯

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর। মধ্যখানের ৯টি মাস ছিল গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের স্বাধীনতা সহজে অর্জিত হয়নি। এর পেছনের ইতিহাস অত্যন্ত বেদনার, নির্মমতার। যুদ্ধ, রক্ত, সংগ্রাম আর বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কী ভাবছে আমাদের তারুণ্য? তাদের কথা জানাচ্ছেন রুমান হাফিজ

 

 

স্বাধীনতা শব্দটি শুনলেই আমদের মনের কল্পনার রাজ্যে ভেসে ওঠে ডানা মেলে উড়তে থাকা মুক্তবিহঙ্গের ছবি।

ঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নকে সামনে নিয়ে বাঙালি জাতিকে স্বাধীন করেছিলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সেই অর্জিত স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করতে পারেনি বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ।

বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ডেও অবিশ্বাসের জায়গা এখনো বিদ্যমান।

এসব জায়গায় সংশ্লিষ্টদের বিশেষ নজর অত্যন্ত জরুরি। বিনাবিচারে যেন আর কাউকে চোখের জল ফেলতে না হয় এই স্বাধীন দেশে, এটাই চাওয়া।

স্বাধীনতা! মুক্তির নিঃশ্বাস, মুক্ত চিন্তাচেতনা, আর বিকশিত মানবিক বোধ একেই আমি মনে করি স্বাধীনতা।

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়েও স্বাধীনতার মিষ্ট স্বাদ আস্বাদন করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। লাখো মানুষের রক্তের মূল্য আমরা অনুভব করতে ব্যর্থ হচ্ছি প্রতিনিয়ত।

তত দিন আমরা স্বাধীন নই যত দিন মেয়েদের পুতুল আর রান্নাবাটির খেলনা হাতে ভবিষ্যতের জীর্ণ সংসারের দায়িত্ব সপে দিচ্ছি, ছেলেদের নারীর প্রতি শ্রদ্ধার মান না বাড়াতে পারছি, বৃদ্ধ বাবা-মাকে আশ্রমে পাঠাচ্ছি। এসব সংকীর্ণ মনোভাব এবং প্রাচীন সংস্কার লুপ্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে গেলে নিশ্চয় উন্নতি অবধারিত।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটলেও পূর্ব বাংলাকে সহ্য করতে হয়েছে আরও ২৪ বছর শোষণ আর বঞ্চনা।

পশ্চিম পাকিস্তানিদের অবজ্ঞা, অবহেলা আর শাসন-শোষণের অবসান ঘটিয়ে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য পূর্ব দিগন্তে উঠেছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ, যার সূচনা জাতির জনকের স্বাধীনতা ঘোষণার মাধ্যমে। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও স্বাধীনতাকামীদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ফারাক রয়ে গেছে; তবুও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তাল মেলাচ্ছে বিশ্বের সঙ্গে।

স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ আস্বাদনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশকে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের শিখরে আরোহণের যাত্রায় স্ব-স্ব অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।

প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের একে-অপরকে দোষারোপ, নিজের সুবিধা অনুযায়ী জাতীয় ইতিহাস বিকৃত করে উপস্থাপন করার প্রবণতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুসহ সব জাতীয় বিষয়াবলিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থের চেষ্টা করার মতো পদক্ষেপগুলোই তরুণ প্রজন্মকে তার শেকড় সম্পর্কে সচেতন হওয়া থেকে দূরে রেখেছে।
তবে আশার বাণী এই, তরুণ প্রজন্ম এখন সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছে, তারা সত্যকে জানতে চায়, মানতে চায়।

তারা বুঝতে শিখেছে তাদের গর্ব করে বলার মতো সুদীর্ঘ রক্তক্ষয়ী এক সংগ্রামী ইতিহাস রয়েছে। আছে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রেরণাময়ী এক শক্তি। মহান মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী হয়ে তরুণ প্রজন্ম একদিন স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। নবজাগরণ আসবেই, অবশ্যম্ভাবী।

 
Electronic Paper