স্বপ্নের ক্যাম্পাসে প্রথম দিন
মালেক সরদার
🕐 ২:২৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯
প্রতিটা শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। আর সে স্বপ্নপূরণের জন্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকেই ভর্তিযুদ্ধের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করার জন্য পাওয়া যায় কয়েক মাস সময়। এ সময়টা যারা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে তারাই হয় সফলকাম। সুযোগ হয় প্রিয় ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করার। হাজার হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে নিজের জন্য একটি আসন অর্জন করতে পারে অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস। নবীনদের পদচারণায় মুখরিত হতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। গত ২১ জানুয়ারি সব বিভাগে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে একঝাঁক নবীনের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পথচলা।
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে যেতেই দেখা গেল ফুল হাতে এক দল শিক্ষার্থী। তাদের দেখে খুব একটা বুঝতে অসুবিধা হলো না যে তারাই সদ্য ভর্তি হওয়া ক্যাম্পাসের অনুজ। শহীদ মিনার চত্বর, প্যারিস রোড, সাবাস বাংলাদেশ মাঠ, শহীদ জোহা চত্বর, বুদ্ধিজীবী চত্বর, আমতলা, টুকিটাকি চত্বর, ইবলিশ চত্বরসহ সব খানেই নবীনদের পদচারণা। সবার চোখে-মুখে যেন এক অন্যরকম প্রাপ্তির আনন্দ। স্বপ্নের ক্যাম্পাসে প্রথম দিন।
এ জন্য সবার মধ্যে যেন এক ধরনের বাড়তি উত্তেজনা কাজ করছে। শহীদ মিনার, প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে ছবি তোলায় ব্যস্ত অনেকেই। কজন একসঙ্গে আবার কখনো বা দলবেঁধে ছবি তুলতে ব্যস্ত তারা।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন আব্দুস সবুর লোটাস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্কুলজীবন থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। যেদিন প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল সাদা বাস দেখেছিলাম ঠিক সেদিন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার করার ইচ্ছাটা আরও সুদৃঢ় হয়। ভর্তি পরীক্ষার দিন ক্যাম্পাসে এত পরীক্ষার্থী দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল। যেদিন ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলো সেদিন খুব চিন্তায় ছিলাম। যখন দেখলাম আমি আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি তখন কি যে খুশি হয়েছিলাম সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেই মুহূর্তে চোখে পানি চলে এসেছিল। মনে হয়েছিল আমার অধ্যবসায় বৃথা যায়নি।
ইসলামিক স্টাডিজে ভর্তি হওয়া সুরাইয়া সুলতানা বলেন, আমার বাসা রাজশাহীতেই। তাই আমার স্বপ্নটা ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে। অনেকে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হয়তো একটু ব্যতিক্রম। আমার স্বপ্ন ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। আর এ জন্য আমি নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করি। যদিও ভয় কাজ করছিল, চিন্তিত ছিলাম কিছুটা। তবুও আমি সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হলো। পড়াশোনা করার সুযোগ পেলাম। যেদিন জানলাম আমি আমার লালিত স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি সেদিন কি যে ভালো লাগছিল সেটা এখন ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
নবীন শিক্ষার্থী শরিফ আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাসে এসে প্রথমেই মনে পড়ে গেল সবুজ শ্যামল প্রকৃতির কথা। এখন ঠিকমতো পড়াশোনা আর ক্যাম্পাস জীবনটা সুন্দরভাবে উপভোগ করতে চাই।