ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাবির দুর্বার ৬৪

তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

আলী ইউনুস হৃদয় ও রাশেদ শুভ্র
🕐 ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০১৯

শীতের সকালের মিষ্টি রোদের মাঝে ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণ শিক্ষার্থী ছুটে চলেছে। আনন্দ আড্ডায় জড়িয়ে ধরছে প্রিয় সহপাঠীদের। কেউ কেউ মার্কার হাতে নিয়ে সাদা টি-শার্টে মনের অগোছালো ভাষাগুলোকে লিখতে ব্যস্ত। তারা প্রত্যেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালের এই দিনে ক্যাম্পাসে পা রেখেছিল এই তরুণ প্রাণের দল। দিনটিকে স্মৃতির ফ্রেমে ধরে রাখতে ব্যাচ ডের আয়োজন করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার পূর্ণ হয়েছে তাদের ক্যাম্পাসে আগমনের কাক্সিক্ষত দ্বিতীয় বছর। শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উল্লাস আর বর্ণিল সাজে সেজেছিল ক্যাম্পাস। ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৯টা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে চোখে পড়ে শিক্ষার্থীদের জটলা। সবার চোখে-মুখে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস। পাশেই উচ্চস্বরে বাজছে হরেক রকম গান। সকাল ১০টায় কেক কেটে ব্যাচ ডের উদ্বোধন পর্ব সম্পন্ন হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া বলেন, এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আনন্দের। এই আনন্দ বিরাজ করুক সবসময়ের জন্য। আলোর পথে দুর্বার গতিতে ছুটে চলুক ‘দুর্বার-৬৪’। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ হাসান বিজয় বললেন, ক্যাম্পাসের আনন্দময় দিনগুলোর মধ্যে আজকের দিনটি অন্যতম। সবার মনে অমলিন হয়ে থাকবে আজকের দিনের এই স্মৃতি। সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিম হোসাইন বলেন, অনেকগুলো অপরিচিত মুখ এই দিনে আপন হয়ে গেছে। শক্ত হয়েছে বন্ধুত্বের বন্ধন। এই বন্ধন অটুট থাকবে পুরো ক্যাম্পাস জীবনে, এটাই প্রত্যাশা।

সাবাশ বাংলাদেশ মাঠের আমেজ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে। বেলা ১১টায় শহীদ শামসুজ্জোহার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বের হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি। র‌্যালি কিছুদূর এগুতেই বর্ষণ হতে থাকে রঙের ঝড়। আবিরের মাখামাখিতে তখন একাকার শিক্ষার্থীদের শরীর, ক্যাম্পাসের রাস্তা ও বাতাস। সাদা টি-শার্টগুলো ছেঁয়ে যায় লাল, নীল, সবুজসহ বিভিন্ন রঙের বাহারে। শুধু বাইরে নয়, সেই রঙের আবের তাদের মনেও ছড়িয়ে পড়ে।

আয়োজনের আরেক চমক ফ্ল্যাশমব অনুষ্ঠিত হয় বেলা ১২টায়। এই আয়োজনের আনন্দ শুধু নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, ছড়িয়ে পড়েছিল ক্যাম্পাসের অন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে। রবীন্দ্র ভবনের পাশের রাস্তায় শিক্ষার্থীদের ফ্ল্যাশমব দেখতে ভিড় জমে বিভিন্ন বর্ষের হাজারো শিক্ষার্থীর।

সূর্যটা যখন পশ্চিম দিগন্তের পানে, তখন শেষ না করে হয় না আয়োজন। লাকী কুপন বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে শেষ হয় আয়োজন। প্রত্যেকের শরীর ক্লান্ত হলেও মনের আনন্দের জোয়ারে বিলীন হয়ে গিয়েছিল সে ক্লান্তি। এক মধুর স্মৃতি মনের ডায়েরিতে যুক্ত করে সবাই ঘরে ফেরে। যে স্মৃতি চির অম্লান হয়ে থাকবে ‘দুর্বার-৬৪’র প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হৃদয়ে।

 
Electronic Paper