ঢাকা, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩ | ১৭ চৈত্র ১৪২৯

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফ্যাশনে বুটেক্স ইজ দ্যা বেস্ট

মুঃ গোলাম কবীর হিমুল, বুটেক্স
🕐 ৮:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০২৩

ফ্যাশনে বুটেক্স ইজ দ্যা বেস্ট

ফাগুনের মাতাল হাওয়া, তার সাথে বাংলা, আরব্য, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং আমেরিকান মিউজিকের তালে বুটেক্স শিক্ষার্থীরা যে ফ্যাশন শো প্রদর্শন করলো তাকে কি নামে অভিহিত করা যায়? অনেক খুঁজেও তা বের করতে পারলাম না। তবে যা বের করতে পারলাম তা হলো- নো ইস্ট নো ওয়েস্ট ফ্যাশনে বুটেক্স ইজ দ্যা বেস্ট।

দিনটি ছিল ভাষা শহীদ দিবসের পরদিন। সকাল থেকেই সাজ সাজ রব রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র তেজগাঁওয়ের ছোট্ট ছায়া সুনিবিড় বুটেক্স ক্যাম্পাসে। সকালে অনুষ্ঠানস্থলের স্টেজের নির্মানশৈলী দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ব্যতিক্রম কিছু হতে চলেছে বুটেক্স ক্যাম্পাসের চতুর্ভুজ আকৃতির খেলার মাঠের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে। সন্ধ্যার পর সেখানে যা হলো তা ধারণাকেই ছাড়িয়ে গেলো। উপস্থিত সবার মন ছুঁয়ে গেলো বুটেক্স ক্যাম্পাসের নতুন ক্লাব, ‘বুটেক্স ফ্যাশন ক্লাব’র আধুনিক রুচিশীল ফ্যাশন শো এর মাধ্যমে।

ছিল না কোনো নামীদামি তারকা মডেল। তবে বুটেক্সের টেক্সটাইল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের করা ডিজাইনে যে মডেলরা পারফর্ম করলো তা প্রফেশনাল মডেলদের থেকে কোনো অংশে কম ছিল না। মসলিনের পুনরুদ্ধারে সম্প্রতি নেতৃত্ব দিয়েছেন বুটেক্সের অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামান। সেই অধ্যাপকের সামনেই মসলিনের আদলে তৈরি শাড়ি পরে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ঢংয়ে যে ক্যাটওয়াক দেখলো দেশের নামকরা ফ্যাশন হাউজ এবং টেক্সটাইল মিলের মালিকেরা। তাতে তারা মুহুর্মুহু করতালি দিতে বাধ্য হয়েছে। মুহুর্মুহু করতালিও যেন কম পড়ে যাচ্ছিল এমন প্রদর্শনীর জন্য। প্রাচীন আমলের বাঙ্গালী নারী পুরুষদের রুচিশীল পোশাকের আধুনিক রুপে রাজা রাণীর পোশাকে বুটেক্স শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত সবাই যেন হারিয়ে গিয়েছিল স্বপ্নপুরীর রাজ্যে। আফ্রিকান হিপহপ স্টাইল সাথে এশিয়ান ট্রেডিশনাল পোশাকের মেলবন্ধন ছিল একই মঞ্চে। আরব্য উপন্যাসের মহুরী যেন হেটে বেড়াচ্ছিল বিএফসির ক্যাটওয়াক মঞ্চে।

ধর্ম অনেক সময় মানুষের পোশাক নির্ধারণ করে দেয়। বিষয়টি মাথায় রেখেই বোধহয় মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঘরোনার ডিজাইনে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে বিএফসির ফ্যাশন ডিজাইনাররা। চোখ ধাঁধানো সেই ক্যাটওয়াকে ইউরোপ ও আমেরিকান স্টাইলও ছিল চোখে পড়ার মত। সবমিলিয়ে পৃথিবীর ৭ মহাদেশের হাল আমলের ফ্যাশনের মিলনমেলা বসেছিল বুটেক্স মাঠে। মরুর বুকে যেভাবে ক্যাটওয়াক স্টেজ তৈরি করে বিশ্বের নামকরা ফ্যাশন হাউজগুলো। তেমনিভাবে সবুজ ঘাসের মাঠের ওপর যেন মরুর বুকের চিত্তাকর্ষক আল্পনা তৈরি করলো বুটেক্সের ফ্যাশন ডিজাইনাররা। সব মিলিয়ে বুটেক্সের মাঠ যেন হয়ে উঠেছিল দুবাই কিংবা কাতারের কোনো পাঁচতারকা হোটেলের গ্রাউন্ড।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প যে আজ এত বড় শিল্পে পরিণত হয়েছে তার পুরোটা না হলেও অধিকাংশ কৃতিত্ব বুটেক্স দাবি করতেই পারে। এখানকার বস্ত্র প্রকৌশলীদের হাত ধরেই এই শিল্প আজ এত বড়। বাংলাদেশের অবকাঠামো শিল্পে যেমন বুয়েটের অবদানটা সবথেকে বেশি। তেমনিভাবে তৈরি পোশাক শিল্পে বুটেক্সের অবদানও সবথেকে বেশি সেটা একবাক্যে সবাই স্বীকার করে নেবেন।

নানারকম সীমাবদ্ধতার পরও বুটেক্সের শিক্ষার্থীরা এই শিল্পের সব জায়গাতেই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তারই জলন্ত উদাহরণ যেন বিএফসি বা বুটেক্স ফ্যাশন ক্লাব। নতুন এই ক্লাবের শুরুটা যেভাবে হলো তাতে আমাদের মনে এই আশার সঞ্চার হতেই পারে যে, বাংলাদেশের যে কোনো ফ্যাশন হাউজকে ছাড়িয়ে বিএফসি একদিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে পারফর্ম করবে।

 
Electronic Paper