‘গুণী-বীরের সম্মানেই জাতি সম্মানিত হয়’
ক্যাম্পাস রিপোর্ট
🕐 ১:২৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ০৭, ২০২২

আজকের স্বাধীন, সমৃদ্ধ এবং মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ নির্মাণে ভূমিকা রয়েছে অনেক বীর সেনানী, বুদ্ধিজীবী, কবি সাহিত্যিক ও শিল্পীদের। তাদের কারো আত্মত্যাগ, কারো মেধা-শ্রমে আজকের ভাস্বর বাংলাদেশ। তাঁদের এমন অবদানের কাছে জাতি হিসেবে আমরা চিরঋণী। কিন্তু সে ঋণশোধ বা তাঁদের সম্মানে আমরা কতটা করছি?
প্রায়ই গণমাধ্যমে উঠে আসে তাদের বা তাদের পরিবারের কেউ খেতে পায় না, ঘর নেই, বাস্তভিটা রক্ষা হয় না, শেষ স্মৃতিচিহ্ন মুছে যাওয়ার পথে। তবে কী জাতি হিসেবে আমরা বড় অকৃতজ্ঞ হয়ে যাচ্ছি? অথচ জাতি সম্মানিত হয় এমন মানুষের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে। এমন দু:খজনক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে মতামত তুলে ধরেছেন মো. নাজমুচ্ছাকিব...
কীর্তিমানদের সম্মান দিন
দিলরুবা ইসলাম জিন্নাত
কবি, লেখক, মুক্তিযোদ্ধা এবং যারা সাহসিকতার দৃষ্টান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন অর্জন এবং মুক্তি সংগ্রামে অবদান রেখেছেন তারা নিঃসন্দেহে দেশের সম্পদ। কলমকে ব্যবহার করে নিজের মেধা খাঁটিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন এমন দৃষ্টান্ত চোখ মেললেই পাওয়া যায়। তাদেরকে দেখে আমরা বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বুকে সাহস সঞ্চার করি। ইতিহাস পড়ার সাথে সাথে যদি দৃষ্টান্তও মেলে তাহলে অনুপ্রেরণার ঝুড়ি আরো গাঢ় আকার ধারণ করে। তাই বিভিন্ন কবি, লেখক, বীরশ্রেষ্ঠদের ত্যাগের অবদান শুধু জাদুঘরে কিংবা সংগ্রহ শালায় না দেখে আমরা যদি তাদের নিজেদের পায়ের ছাপ পড়েছে, নিজ দেহের অস্তিত্ব বিরাজ ছিল এমন জায়গা দেখার কিংবা স্পর্শ করার সুযোগ পাই তাহলে হয়ত আরো বেশি শক্তি, সাহস এবং অনুপ্রেরণা পাবো।
শিক্ষার্থী, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোনা।
স্মৃতিফলক থেকেও শেখার আছে
এস এম নাজমুস সাকিব
পৃথিবীতে আমরা যা-ই দেখি, সবকিছু খেকে শিক্ষা নেওয়া যায় বা শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ কারণে আল্লাহ তাআলা জায়গায় জায়গায় তাঁর কুদরতের শেআর বা নিদর্শন ছড়িয়ে রেখেছেন আর হুকুম করেছেন ঘুরে ঘুরে দেখার জন্য। অতএব, মহান আল্লাহপ্রদত্ত শেআরগুলোর যথাযথ হেফাজত করা আবশ্যকীয় বিষয়। ঈমানদার ব্যক্তিবর্গের জন্য এটি একটি পরীক্ষা। ঠিক তদ্রুপ, পৃথিবীতে অনেক মানুষকে আল্লাহ পাক প্রেরণ করেন। যারা পরবর্তীতে নিজেরাই শেআর বা নিদর্শন হয়ে যান। তাদের মৃত্যুর পরও তারা অমর থাকেন বা বরণীয় হোন। তাই তাদের ব্যবহৃত, আবিষ্কৃত, পালনকৃত সবকিছুই শিক্ষণীয় হয়ে যায়। দর্শকবৃন্দ দেখে ভাবতে থাকেন, এমনি ছিলো তাদের জীবনাচরণ। এ কারণে আমি বলবো, বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের যেকোন ধরনের অর্থমূলক স্মৃতিফলকগুলো বিলীন বা বিলুপ্ত না করে সযত্নে রেখে দেওয়া উচিত।
শিক্ষার্থী, দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা, ঢাকা।
গুণী-বীর সোনালি প্রজন্মের শিখা
রবিন ভট্টাচার্য
আমাদের দেশে কতশত কীর্তিমানের ভিটেমাটি তছনছ হচ্ছে অযত্ন অবহেলায়। তাঁদের ভিটেমাটি এভাবে হাঁরিয়ে গেলে আমাদের অস্তিত্বেরও শঙ্কা তৈরি হয়। তবুও আমরা জাতি হিসাবে একটু লজ্জাবোধ করছি না। তাদের ভিটেমাটিসহ নানা স্মৃতি এভাবে হারালে সোলালি প্রজন্ম বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারবে না। কারণ তাদের শিকড় থেকে আমরা কোনো বাস্তব শিক্ষা নিতে পারছি না। আমাদের দেশে তুলনামূলক ভাবে গুণীদের কদর খুব নগণ্য। তাঁদের ভিটেমাটির উপর দিয়ে এভাবে নানা প্রকল্প করা বন্ধ না হলে জাতি সোনালি প্রজন্মকে নিয়ে বেশিদূর যেতে পারবে না। তাই এগুলো দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অঙ্কুরিত ভবিষ্যত নতুন কাজের স্পৃহা ও গতি সমরেখ ভাবে পাবে। কর্তৃপক্ষ এখনই কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে সোনালি শিখায় আলো জ্বলবে না আর জাতি আলোকিত হতে পারবে না।
শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
