ভারতের রায় যেন আমাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি না করে
ফিরোজ আহমেদ
🕐 ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
ভারতীয় আদালতের রায়টি রাজনৈতিক রায়। এর সঙ্গে ইতিহাসের যুক্তির, আইনের যুক্তির কিংবা মানবিকতার যুক্তির কোনো সুদূর সম্পর্ক নাই। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে একটা ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক উত্থানের নবীন সূচনা হয়েছিল ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে, তার জের এখনো চলছে। সেই নারকীয়তাকেই আইনি বৈধতা দিলো এই রায়।
বাবরি মসজিদ ভাঙাতে আলাদা করে ইসলাম কিংবা মুসলমানের কোনো ক্ষতি নেই, মুসলমানেরও না। ক্ষতিটা মুসলমান ও হিন্দু নির্বিশেষে সবার। প্রত্নতত্ত্বেরও বটে, ভারতীয় উপমহাদেশে নতুন আমলের সূচনা ঘটানো সম্রাট বাবরের নামাঙ্কিত একটি স্মৃতিচিহ্ন মুছে গেল, যিনি আসলে ভারতের ইতিহাসের দীর্ঘস্থায়ীতম সাম্রাজ্যটির প্রতিষ্ঠা ঘটিয়েছিলেন, যে সাম্রাজ্যটি আদতে আধুনিক ভারতীয় পরিচয়টির ভিত্তি নির্মাণ করেছিল। সেই অর্থে ভারত রাষ্ট্রও স্থায়ী একটি গ্লানির শিকার হতে থাকবে যুগ যুগ ধরে।
কিন্তু স্মরণ রাখতে হবে যে, ভারতের এই ঘটনার দায়, এর লাভ কিংবা ক্ষতি তারাই ভোগ করুক। প্রতিবেশী হিসেবে আমরা তাদের মঙ্গল চাই, কারণ তা আমাদের জন্যও ভালো। কিন্তু ভারতের আদালতের কোনো কাজ যেন আমাদের মাঝে কোনো বিভক্তি-বিদ্বেষ-উত্তেজনার খোরাক না হয়। বরং তিনি অনেক বড় অপরাধী হয়ে থাকবেন, নিজের ধর্মগোষ্ঠীর, নিজের দেশের ক্ষতি করবেন, যিনি এই কারণে নিরপরাধ কারও ওপর আক্রোশ মেটাতে চেষ্টা করবেন কিংবা এই সুযোগটিকে ব্যবহার করে হানাহানি তৈরি করতে চাইবেন।
আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে ‘হে মানবজাতি, তোমরা একের অন্যায়ে অন্যকে দায়ী করবে না। পিতার অপরাধের জন্য পুত্রকে এবং পুত্রের অপরাধের জন্য পিতাকে দায়ী করবে না।’ ফলে খুব পরিষ্কার কথা, তেমন যে কোনো উসকানি প্রতিরোধে প্রতিটা নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিককে যেন উদ্বেগে আক্রান্ত না হতে হয় ভারতীয় আদালতের পক্ষপাতদুষ্ট রায়ের কারণে।
বাংলাদেশের কোনো মানুষের জীবন-মর্যাদা-সম্পত্তি যেন আক্রমণের শিকার না হয়, সে বিষয়ে প্রতিটা নাগরিককে সচেষ্ট থাকতে হবে।
ফিরোজ আহমেদ
লেখক
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228