ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আগের ‘আওয়ামী লীগ মডেল’ চাই

আবুল হাসনাৎ মিল্টন
🕐 ৯:৪৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০১৯

ক্ষমতাসীন দল তার পছন্দমতো প্রশাসন সাজাবে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তার পছন্দের লোকজনকে বসাবে, এটা গণতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমেরিকা, ক্যানাডা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত বিশ্বে এটা গ্রহণযোগ্য একটা ব্যাপার। বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম প্রত্যাশা করি না।

তবে দলীয়করণের বেলায় আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত-বিএনপির মধ্যে আগে মৌলিক একটা পার্থক্য ছিল, যেটা এখন আর নাই। আওয়ামী লীগ সরকার আগে যোগ্যতার ব্যাপারটিকে বেশি গুরুত্ব দিতো। দলীয় সমর্থক এবং যোগ্যতার সমন্বয়ে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ করতো। অনেক ক্ষেত্রে, যোগ্যতার কারণে ভিন্নমতাবলম্বী লোকদেরও গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হতো।

জামায়াত-বিএনপি কখনো যোগ্যতার প্রতি খেয়াল রাখতো না, নিজের দলের লোক হলেই হতো। প্রতিষ্ঠানের কাজের গুণগতমানের চেয়ে তাদের অধিক মনোযোগ ছিল লুটপাটের দিকে। এ ব্যাপারে তাদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটাও বেশ। কোনো রকম চক্ষুলজ্জার ব্যাপার ছিল না, নিজেদের মধ্যে চমৎকার সমন্বয় করে লুটপাট-ভাগাভাগি চলতো।

গত পাঁচ-ছয় বছরে আওয়ামী লীগের দলীয়করণের ধারা বদলেছে। আগের মতো যোগ্যতার ব্যাপারে তারা আর তেমন মনোযোগী নয়। বরং এই সময়ে অযোগ্য বহু লোককেই তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে। লাভজনক পদসমূহে এ সময়ে জামায়াত-বিএনপির লোকদের অনেককেই পদায়ন করা হয়েছে। এর একটা সম্ভাব্য কারণ হলো কিছু আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতাদের চক্ষুলজ্জাটা একটু বেশি। নিজ দলের লোকজনের সামনে নিজের মুখোশটা খুলে পড়ুক, অনেকেই তা চান না। তার চেয়ে বরং জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে মিলেমিশে লুটপাট-ভাগাভাগি অনেক স্বাচ্ছন্দ্যের।

আওয়ামী লীগে ইদানীং আবার কিছু সবজান্তা শমসের এবং কানকাটা রমজানের দেখা মিলেছে। এসব সবজান্তা শমসেরদের সব কমিটিতেই থাকতে হবে। হোক তা ‘জাতীয় টয়লেট পরিষ্কার কমিটি’ বা ‘বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ বা ‘জাতীয় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কমিটি’। নিজের আদৌ ওইসব কমিটির সদস্য হওয়ার মতো যোগ্যতা আছে কি না তা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। ফলে প্রতিটি কমিটিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বদনাম হচ্ছে সরকারের।

ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডের চেয়ে দেশের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর এসব অযোগ্য লোককে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে কাজের ক্ষতিসাধন এবং লুটপাট-ভাগবাটোয়ারা করা এসব অযোগ্য লোকদের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অচিরেই সরানো দরকার। পাশাপাশি দলের দুর্নীতিবাজ কানকাটা রমজান এবং সবজান্তা শমসেরদেরও ঝেটিয়ে বিদায় করার এখনই সময়। আওয়ামী লীগ অনুসারীদের মধ্যে কি যোগ্য লোকের অভাব? সকল প্রকার রাজনৈতিক-প্রশাসনিক শুদ্ধি অভিযানের প্রতি শুভ কামনা। জয়তু শেখ হাসিনা।

আবুল হাসনাৎ মিল্টন
লেখক

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper