ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

লিফটের প্রি-শিপমেন্ট দেখতে ভিসির বিদেশভ্রমণ!

খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৫, ২০১৯

জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আরও ৯ শিক্ষক নিয়ে লিফট-এর প্রি-শিপমেন্ট দেখতে সুইজারল্যান্ড এবং স্পেন যাচ্ছেন! দুনিয়ার ব্যবসা বাণিজ্য চলে অন্য নিয়মে। প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশনের নিয়ম হচ্ছে একটা থার্ড পার্টি, যাদের এই এক্সপার্টিজ আছে তারা এটা করে সার্টিফিকেট দেবে।

ধরা যাক বাংলাদেশের একটা গার্মেন্ট কারখানা চায়না থেকে প্রতি মাসে বিভিন্ন ধরনের কাপড় কিনে। এখন কন্টেইনারে কাপড় দিল নাকি খড় গুঁজে দিয়ে পয়সা নিয়ে নেবে, সেটা ধরার জন্য তো গার্মেন্টের লোকজন প্রতি মাসে চায়না যেতে পারবে না। সেজন্য আলাদা থার্ড পার্টি আছে। তারা কাপড় সম্পর্কে সবকিছু জানে। তখন বাংলাদেশের গার্মেন্ট কারখানা তাদের একটা নির্দিষ্ট ফি দিলে সেই ফি’র বিনিময়ে তারা ওই টেক্সটাইল মিলে গিয়ে কাপড় মিলিয়ে দেখবে।

কাপড়ের রঙ, বুনন, দৈর্ঘ্য প্রস্থ, প্রতি রোলে ট্যাগ অনুযায়ী কাপড় আছে কী না, কাপড় ওয়াশ করলে কতটুকু ছোট হয়ে যায়, কি মেথডে ওয়াশ করলে রং উঠে কি উঠে না-এসব দেখার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আছে। তারা সেই পদ্ধতিতে দেখে তারপর সার্টিফিকেট দেয় তারপর শিপমেন্ট হয়।

এই কোম্পানিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে আছে, তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে, সুতরাং তারা কখনো ভুয়া সার্টিফিকেট দেয় না। কারণ একবার যদি সুতি কাপড়কে সিল্ক কাপড় লিখে দেয়, তাহলে তাদের মিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় ধস নামবে। এসব কোম্পানি বড় বড় বিশেষজ্ঞ হায়ার করে রেখেছে।

এরা ইলেকট্রনিক্স, কাপড়, গুঁড়ো দুধ, আলপিন-মানে যা কিছু শিপমেন্ট হয় তার সবগুলোতেই নিজেদের ওই সেক্টরের বিশেষজ্ঞ দিয়ে টেস্ট করিয়ে সার্টিফিকেট দেয়। এরা প্রচণ্ড কড়াকড়ি করে। অনেক সময় এদের ফি শিপমেন্টের সঙ্গে ধরা থাকে এবং সাপ্লায়ার এদের ফি মিটিয়ে দেয়।

জাতীয় কবি নজরুলের নামে স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি লিফট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়ার কোনো কারণ নেই। হাজার খানেক ডলার দিয়ে এই প্রি-শিপমেন্ট বিশ্বের যে কোনো ভালো কোম্পানিকে দিয়ে প্রফেশনালি করিয়ে ফেলা সম্ভব। কিন্তু ভিসি গুচ্ছের টাকা খরচ করে ইউরোপ বেড়াচ্ছেন।
উনি জানাচ্ছেন, উনাদের ১০ জন শিক্ষকের এই ইউরোপ ভ্রমণের সব টাকা লিফট কোম্পানি দিচ্ছে।

মনে হচ্ছে লিফট কোম্পানি এ টাকা তাদের বাপের বাড়ির জমি বিক্রি করে এনে দেবে। এই টাকা লিফটের দামের সঙ্গে ধরা আছে, এর মানে এই টাকা আদতে সরকারের টাকা তথা জনগণের টাকা। এবং ভিসি এবং তার তাঁবেদার শিক্ষকরা এ টাকা ব্যক্তিগত ভ্রমণ সুখে গিয়ে নষ্ট করছেন।

উনাদের বিদেশ যাওয়া নিয়ে আমি যতটুকু বিরক্ত তার চাইতে বেশি বিমোহিত এই ভুংচুং বুঝিয়ে সেই যাত্রাকে হালাল করার যে চেষ্টা তারা করছেন, সেটা দেখে। এক কান কাটা রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটে যাতে কাটা কানটি রাস্তায় চলাচল করা লোকজন দেখতে না পায়। দুই কান কাটার লজ্জা ঢাকার উপায় নেই, তারা রাস্তার মাঝ দিয়ে হাঁটে। আমাদের দেশের ভিসিদের যে কুকা- একের পর এক বের হচ্ছে, মনে হচ্ছে এরা মাঝরাস্তা দিয়ে মিছিল করতে করতে যাচ্ছেন।

আরিফ জেবতিক
অ্যাক্টিভিস্ট

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper