ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘রমণীয়’ শব্দটি পুরুষতান্ত্রিক

খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ৯:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯

শাড়ি নিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের রচনাটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ফেসবুকে। অনেকেই তাঁর লেখাটিকে অশ্লীল সাব্যস্ত করেছেন। কেউ কেউ এই রচনায় ব্যবহৃত নারীশরীর-সংক্রান্ত ‘দেহবল্লরী’, ‘আঁকাবাঁকা’, ‘উঁচুনিচু’ শব্দে আপত্তি জানিয়েছেন। কিন্তু বিস্ময়কর, রচনাটিতে ব্যবহৃত একটি শব্দ এড়িয়ে গেছেন সবাই। তা হচ্ছে, ‘রমণীয়’। শব্দটি খুব পুরুষতান্ত্রিক, এর অর্থও গভীরভাবে পুরুষতান্ত্রিক।

নারীবাদী সংবেদনশীলতার চাপে শব্দটি সমাজ থেকে বিতাড়িত হয়েছিল; টিকেছিল কেবল অভিধানেই। গত দুই দশকে এর ব্যবহার আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ শব্দটিকে সমাজে ফিরিয়ে আনলেন। ‘রমণ’ শব্দের কয়েকটি অর্থের একটি হলো ‘রতিক্রিয়া’; ‘রমণী’ শব্দটি তৈরি হয়েছে ‘রমণ’ থেকেই। আর ‘রমণীয়’ শব্দের অর্থ অভিধানে যত ‘সুন্দর’, ‘মনোরম’, ‘প্রীতিকর’ হোক না কেন, তা মনে করিয়ে দেয় ‘রমণ’ শব্দের ওই পুরনো অর্থকেই। ‘দেহবল্লরী’ বরং যথেষ্ট শ্লীল, কেননা এতে শরীরকে আলঙ্কারিকভাবেই দেখা হচ্ছে। অর্থাৎ লতা, মঞ্জরি, মুকুলের রূপকে দেহকে দেখানোর অভিপ্রায় শব্দটিতে স্পষ্ট। কিন্তু সমস্যা হলো, পুরুষের পৃথিবীতে শব্দটি বরাদ্দ হয়েছে নারীর জন্য, আর লেখক যদি নিজের লৈঙ্গিক পরিচয় নিয়ে তাঁর রচনায় হাজির হতে চান, সে-অধিকার তাঁর রয়েছে।

এটা ঠিক যে, শাড়ি অপটিক্যাল ইলিউশন বা দৃষ্টিবিভ্রম তৈরি করে। কিন্তু এর ব্যাখ্যায় নারীশরীরের প্রতি লেখক এত মনোযোগী হয়েছেন, ভাষা সেই চাপ সামলে উঠতে পারেনি। নারীশরীর যতটা উন্মোচিত হয়েছে এই রচনায়, তার চেয়ে বেশি প্রকাশ্য হয়ে গেছে তাঁর পুরুষসত্তাটি। এত প্রতিক্রিয়ার কারণ এটাই।

প্রাচীন গ্রিক-রোমান-মিসরীয়দের মধ্যেও পোশাক হিসেবে ড্রেপিংয়ের প্রচলন ছিল। উপমহাদেশের নারী এই প্রাচীন পরিধেয়টিকে নিজেদের মতো করে আজও ধরে রেখেছে শাড়ির আঙ্গিকে। তা কি শুধু দৈহিক উচ্চতার সীমাবদ্ধতা আড়াল করার জন্য? নিজেদের ‘রমণীয়’ করে তোলার জন্য?

চঞ্চল আশরাফ
কবি

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper