ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আচ্ছা তোমাদের মাও কি এমন?

খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ৪:১৫ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০১৮

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই পরনের কাপড় ছাড়া আর একটা কাপড়ও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। স্বভাবতই ঘুম থেকে উঠেই টাওয়েল নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকি। কিন্তু টাওয়েলটাও পাচ্ছি না। কি ব্যাপার কিছুই বুঝলাম না!

টেবিলে র‌্যাক থেকে ব্রাশ নিতে গিয়ে দেখি র‌্যাকে তো মাথা থেতলে যাওয়া ৬ মাসের পুরনো ব্রাশ তো নেই-ই; উল্টো র‌্যাকও গায়েব।
রমজানের সকালে মাথা গরম হওয়ার জন্য এই ব্যাপারটা হলো যথেষ্ট! সিয়ামে আছি বিধায় কিছুই বল্লাম না। ঠান্ডা মাথায় ওয়াস রুমে ঢুকে দেখি মা আমার দুই বালতি জামা কাপড় ভিজায় রাখছেন।
মাথা গেলো এবার চুড়ান্ত খারাপ হয়ে।
বকাঝকা সব মায়ের সাথেই হয় বিধায় এবারও বকলাম। কিন্তু রোজা রেখেও হাসি মুখে যখন এই মহিলাটি আমার জামাগুলো ওয়াস করবে, তখন সেগুলো আমি পরবো?
হঠাৎই ঠান্ডা হয়ে গেলাম। মায়ের কাপড়গুলোও আজ ধুয়ে আমি রোদ দিয়ে আমি বসে আসি। আর ভাবছি, কিভাবে পারে একটা মহিলা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি এত কাজ করতে?
বাড়িতে আম ধরেছে, লিচু ধরেছে। আরো কয়েকটা সিজনাল ফল ধরেছে। মা ভোর রাতে উঠেই আর মা এগুলো দেখে আসবেন। যখন আমরা সবাই ঘুমাই। মহল্লায় কিছু ছেলে আছে। যারা অভাবে না; স্বভাবে এসব চুরি করে নিয়ে যায়। ইফতারে আমাদের এগুলো কেটে দেন। অথচ ইফতারে বকা দিই, কিছু আম টক বলে। একটু বুঝতেও চেষ্টা করি না, টক তো উনি বানান নাই।
আমরা এই গরমে জামা কাপড় খুলে যখন এসির নিচে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে থাকি। ঠিক তখন এই মহিলাটি ইফতার আর রাতের আয়োজন, ভোর রাতের আয়োজন নিয়েই ভাবেন। সারাদিন এগুলোই রান্না করেন।
কোনদিন লবন বেশি হয় নাই এই মহিলার রান্নায়।
মায়ের রান্না সত্যিই শ্রেষ্ঠ রান্না।
এই মাকে ইফতারে এই পর্ন্ত কথনো পাশে পাইনি।
ঐ যে বল্লাম, সূর্য ওঠা থেকে ডুবা অবধি করেই যান।
ইফতারের আজান দিচ্ছে। তখন উনি উনার পোষাপাখিগুলো নিয়েই ব্যস্ত।
তাদের খাবার দেয়া। বাসায় তুলে দেয়া। ইত্যাদি।
এইতো সেদিন, আমাকে সকালে বল্লেন, বাবা! আজ আসতে আমার জন্য বরফ নিয়ে আসবি। ইফতারে ঠান্ডা খেতে মন চায়। আমাদের ফ্রিজ ইচ্ছে করেই কিনি না। আমি আজ খুশিতে কিছু বাজারের ইফতার আনলাম। সাথে ঠান্ডা পানি। মনে খুব আনন্দ। আজ মা থাকবে ইফতারে। কিন্তু নাহ।
উনি একটা খেজুর নিয়েই চলে গেলেন কিচেনে। রাতের খাবার গুলো যে চুলায় পুড়ে যাচ্ছে।
খুব কষ্ট পেলেও নিজেকে কন্ট্রোল করলাম।
রুহ আফতার ঠান্ডা একগ্লাস শরবত নিয়ে দিয়ে আসলাম কিচেনে।
এটাই যে মা নামক বুয়ার ইফতার!

শাফায়েত মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ফেসবুক থেকে নেয়া

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper