ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মান্নাহীন এক যুগ

বিনোদন প্রতিবেদক
🕐 ১২:৫৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০

চিত্রনায়ক মান্না। পুরো নাম এ এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। টাঙ্গাইলের আসলাম তালুকদারকে ঢাকাই সিনেমার দর্শকরা মান্না হিসেবে চেনেন। সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে আসন করে নেন দর্শকের হৃদয়ের মনিকোটরে। তার প্রমাণ মেলে সেই মান্না যেদিন মারা যান, তাকে একনজর দেখার জন্য জনতার ঢল নেমেছিল পথে। বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে হয়েছে, বেদনার্ত ভক্তদের লাঠিপেটা করতে হয়েছে পুলিশকে।

 

তারপরও পাগলভক্তদের দমাতে পারেনি তারা। ঢালিউড সুপারস্টার মান্নাকে হারানোর এক যুগ পার হয়ে গেল গত সোমবার। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তায় থাকাকালীন আকস্মিকভাবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মান্না।

১৯৮৪ সালে বিএফডিসি আয়োজিত নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমে মান্না চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। নায়ক রাজ রাজ্জাক মান্নাকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ করে দেন। ওই বছরই তার প্রথম অভিনীত ছবি ‘তওবা’। কিন্তু প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘পাগলি’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমায় একক নায়ক হিসেবে প্রথম সুযোগ পান তিনি। ছবিটির ব্যবসায়িক সাফল্যের কারণে মান্না ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পান। কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমা দুটিতে অভিনয় করে একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান মান্না। মান্না প্রায় সাড়ে তিনশ’ ছবিতে অভিনয় করেছেন।

অনেকে বলে থাকেন সমসাময়িক নায়কদের মধ্যে মান্না কেন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তাদের উত্তরে চলচ্চিত্র বোদ্ধারা বলে থাকেন- মান্নার প্রায় সব সিনেমায় দর্শক মান্নাকে পেয়েছেন ক্ষমতাশালীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকায়। কোনো সিনেমায় মান্না সন্ত্রাসী লালনকারী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সৎ পুলিশ কর্মকর্তা, কোনো সিনেমায় অসৎ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বস্তি রক্ষায় নিয়োজিত প্রতিবাদী যুবক। এসব দেখে সমাজের অসহায় শ্রেণির দর্শকরা সাময়িক শান্তি পেয়েছেন, আনন্দ পেয়েছেন। বাস্তবে তারা যা করতে পারেন না, পর্দায় তাদের প্রতিনিধি হয়ে মান্না সেসব করে দেখিয়েছেন। মান্না যেন নিম্নবর্গের দর্শকের কাছে তাদের একমাত্র কণ্ঠস্বর।

সেই নব্বইয়ের দশকে অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণের ধারা শুরু হলে যে কজন প্রথমেই এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে নায়ক মান্না অন্যতম। সে সময় মান্না রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন অশ্লীল চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে। এসব চলচ্চিত্রের নির্মাতাদের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছিলেন। মান্না শুধু চলচ্চিত্র অভিনেতাই ছিলেন না, তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে যত ছবি প্রযোজনা করেছেন, প্রতিটি ছবি ব্যবসা সফল হয়েছিল। ছবিগুলো হচ্ছে ‘লুটতরাজ’, ‘লাল বাদশা’, ‘আব্বাজান’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’ ও ‘মান্না ভাই’।

দিনটির স্মরণে গত সোমবার মান্না ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও নায়ক মান্নার স্ত্রী শেলী মান্নার নেতৃত্বে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। তার মধ্যে রাজধানীর উত্তরার বাসায় মান্নার জন্য কোরআন খতম ও দোয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া মান্নাকে স্মরণ করে বিএফডিসিতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

 
Electronic Paper