ক থা সা মা ন্য
ঢাকা শহরের প্রতি একটি প্রেমপত্র
তৌফিকুল ইসলাম
🕐 ৩:৩৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
বাংলাদেশের প্রথম অমনিবাস (অ্যান্থলজি) চলচ্চিত্র ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ মুক্তি পাবে আগামী ১৫ নভেম্বর। এ ছবিতে অভিনয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গে শারমিন আঁখি কথা বলেছেন তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে
‘ইতি তোমারই ঢাকা’ ছবিটি নিয়ে বলুন...
বর্তমান সময়ের ঢাকা শহরের ১১টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে নির্মিত অমনিবাস চলচ্চিত্র ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’। প্রতিটি গল্পের দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ মিনিট।
এক টিকিটেই ১১টি ছবি দেখার সুযোগ মিলবে। ১১ নির্মাতার ১১ গল্পে ঢাকার মানুষের জীবনযাপন, তাদের সংগ্রাম ও বেঁচে থাকার নিরন্তর যুদ্ধ এবং সেই সঙ্গে ঢাকার নিজস্ব এক সংস্কৃতি এক সুতোয় ফুটে উঠে ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ চলচ্চিত্রটিতে। প্রতিটি গল্পই ঢাকা শহরের সঙ্গে এই শহরের মানুষের অনুভূতি নিয়ে বানানো। এই শহরটিকে তো ভালোবাসা কঠিন। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় নির্মিত এই চলচ্চিত্রটিকে বলা যায়, এই ঢাকা শহরের প্রতি একটি প্রেমপত্র।
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে এ ছবি প্রশংসিত হয়েছে, বাংলাদেশে এ ছবি কতটা সাড়া ফেলবে বলে মনে করেন?
ইতোমধ্যে বিশ্বের সব মহাদেশ ঘুরে ফেলেছে এই ছবি। দেখা দিয়েছে ২৩টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। এর ভেতর বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কার জিতেছে। কুড়িয়েছে প্রশংসা। প্রত্যেকটা কাজেরই একটা ভিন্নতা থাকে। নিজস্ব একটা ধরন থাকে। ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ ছবির ধরনটাও একটু ভিন্ন। একটা নতুনত্ব আছে যেটার সঙ্গে আমাদের দর্শক এবার প্রথম পরিচিত হচ্ছে। তাই কাজটা মানুষের কাছে উপভোগ্যই হবে। এবারই প্রথম দর্শক নতুন কিছু পাবে এই ছবির মাধ্যমে। এক সঙ্গে ১১ ভিন্ন নির্মাতার ভিন্ন ১১টি গল্পে দর্শক তাদের নিজের জীবনকে কানেক্ট করতে পারবে।
যেখানে ঢাকা শহরের প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া দুঃখ, ক্রাইসিস, আনন্দ সব আছে। যে গল্পে মানুষ নিজের প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার ছায়া দেখবে সেই গল্পকে তো অবশ্যই আপন করে নেবে। মোদ্দাকথা, গত বছর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রগুলোর নাম সবচেয়ে বেশি আলাপের সূত্রপাত ঘটিয়েছে, তার ভেতর অন্যতম ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’। এই সাফল্যই বলে দেয় বাংলাদেশেও দারুণ সাড়া ফেলবে ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’।
ছবিতে আপনার অভিনীত চরিত্র প্রসঙ্গে...
দেশ স্বাধীনের পর যেসব বিহারি সম্প্রদায় বাংলাদেশে রয়ে যায়, তাদের বয়ে যাওয়া সংকটের একটা গল্পে কাজ করেছি আমি। পরিচালনায় কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। বিহারি সম্প্রদায়ের মানবিক অধিকার, যা থেকে তারা বঞ্চিত এমন একটা বিহারি বউয়ের চরিত্রে কাজ করেছি এই গল্পে। প্রাত্যহিক অভাব অনটন আর বাঙালি সমাজ ব্যবস্থায় কীভাবে গঞ্জনা স্বীকার করেও সংসারের ঘানি টেনে যেতে হয়েছে। যেখানে মানুষ হিসেবে সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকে এক নারী আর তার স্বামীর লড়াইয়ের গল্পে চেষ্টা করেছি গতানুগতিক অভিনয়ের বাইরে গিয়ে নতুন কিছু করতে। চরিত্র রূপায়ণে চেষ্টা করেছি দর্শককে ভিন্নতা দিতে, যেন গল্পে এবং চরিত্রে নতুন একটা ডাইমেনশন পায়। আশা করি ভালো লাগবে সকলের।
আপনার বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন...
কাজ করেছি নোমান রবিনের পরিচালনায় চলচ্চিত্র ‘এ কোয়ার্টার মাইল কান্ট্রি’-তে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নির্মিত এ চলচ্চিত্রে আমি রোহিঙ্গা নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। ইতোমধ্যে ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। আফজাল হোসেইন মুন্নার পরিচালনায় শর্ট ফিল্ম ‘শেভুলুশন’-এ একটি একক চরিত্রে অভিনয় করেছি। বায়স্কোপে পাওয়া যাচ্ছে ছবিটি। আরিক এনাম খানের পরিচালনায় ‘ট্রানজিট’-এর কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে।
ইমতিয়াজ সজিবের পরিচালনায় ফিচার ফিল্ম ‘জাস্ট এ জোক ডারলিং’-এর কাজ শেষ হয়েছে। নতুন দুটি ছবির ব্যাপারেও কথা হচ্ছে। সম্প্রতি শেষ করলাম ধারাবাহিক নাটক রবীন্দ্রনাথের ‘মধ্যবর্তিনী’-এর কাজ। ধ্রুপদী গল্প ‘মধ্যবর্তিনী’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এটি লিখেছেন আহমেদ খান হীরক এবং পরিচালনা করেছেন রাজু খান। প্রচার শুরু ডিসেম্বর থেকে দীপ্ত টিভিতে। এছাড়াও বুলবুল বিশ্বাসের পরিচালনায় বাংলালিংকের ৪টা ওভিসির কাজ ও তানভির তন্ময় এবং অভ্র মাহমুদের পরিচালনায় দুটি ওয়েব সিরিজের কাজ শেষ হয়েছে।
মিডিয়াতে কাজের ক্ষেত্রে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা...
অভিনয়ের হাতেখড়ি মঞ্চে। অভিনয়টা তাই রক্তে মিশে আছে। অভিনয় করছি। সামনেও করে যেতে চাই। তাই অভিনয়ের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারি না। ভিন্ন ভিন্ন গল্পে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের ভিন্নতা এমনিতেই বৈচিত্র্য এনে দেয়। সব ধরনের চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে এটা আমাকে অনেক পরিণত করেছে। তবে মূল ফোকাসটা এখন বড় পর্দায়।
স্বভাবতই একজন সফল অভিনয় শিল্পী হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই। তাই অভিনয় যাত্রাটা দীর্ঘ করে যেতে চাই। ভালো ভালো কিছু কাজ দর্শকদের উপহার দিয়ে যেতে চাই, যেন তারা আমার কাজগুলোর মধ্য দিয়েই আমাকে মনে রাখে।