ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক থা সা মা ন্য @ খোলা কাগজ

উপস্থাপনাতেই নিয়মিত থাকব

তৌফিকুল ইসলাম
🕐 ৮:৫২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯

উপস্থাপিকা মারিয়া নূর সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন। এতে অভিনয়, নিয়মিত উপস্থাপনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে

‘শুধু তোমার ঘিরে’ মিউজিক ভিডিওতে সঙ্গীতশিল্পী ইমরানের সঙ্গে আপনার রসায়ন বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এ কাজটি নিয়ে বলুন...
মিউজিক ভিডিওর কাজটি করতে ভালো লেগেছে। আমি সবসময়ই একটু বাছাই করে কাজ করি, গড়পড়তা কাজ করি না। আমি অল্প কাজই করি, অল্প কাজের ভেতরেই এমনভাবে বাছাই করি, যাতে কাজটা আসলে স্ট্যান্ডার্ড একটা কাজ হয়। সে জায়গা থেকেই মিউজিক ভিডিওতে কাজের যতই অফার আসুক না কেন, কখনো করিনি।

এটা করার কারণ হচ্ছে- ইমরানের সঙ্গে আমার একটা ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সে গানটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল, ও যখন গানটা আমাকে প্রথম পাঠিয়েছে এবং আমাকে যখন জিজ্ঞেস করল তুমি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করবে? আমি তখন গান পাঠাতে বললাম এবং গানটি শুনে আমার মতামত জানাব বললাম। গানটা শুনে ওকে বলেছি, খুব ভালো লেগেছে তারপর ও বলল পরিচালক হচ্ছেন ভিকি জাহেদ, আর তিনি অনেক ভালো একজন ডিরেক্টর। এসব কিছু চিন্তা করে ভাবলাম যে, ঠিক আছে একটা মিউজিক ভিডিও করা যায়। এভাবেই মিউজিক ভিডিওটি করা।

এখন তাহলে মিউজিক ভিডিওতে নিয়মিত কাজ করবেন?
না, আমি নিয়মিত করব না।

তাহলে একটা মিউজিক ভিডিও-ই থাকবে আপনার কাজের তালিকায়?
একটাই থাকবে কি-না সেটা বলতে পারব না। তবে নিয়মিত আমি কখনোই হবো না। আমি উপস্থাপনাতেই নিয়মিত থাকব।

মিউজিক ভিডিওটিতে আপনার অভিনয় খুব ভালো ছিল, এক্সপ্রেশনটা খুব দারুণভাবে ফুটে উঠেছে...
থ্যাংক ইউ।

উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আপনার অনন্যতার জায়গাটি দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। এখন যারা ভবিষ্যতে উপস্থাপনায় আসতে চায় বা একজন মারিয়া নূর হয়ে উঠতে চায়, তাদের উদ্দেশে কী বলবেন?
সবার আগে যেটা হচ্ছে একজন মারিয়া নূর হতে হবে সেটা না, কখনো কাউকে কপি করা যাবে না; এটা হচ্ছে প্রথম বিষয় যে কোনো কাজের ক্ষেত্রেই। এটা অভিনয়ে হোক, উপস্থাপনা হোক বা যে কোনো ক্ষেত্রেই হোক না কেন। এক্সকে এক্সই হতে হবে, ওয়াইকে ওয়াই-ই হতে হবে, জেডকে জেডই হতে হবে। নিজের পরিচয়ে দাঁড়াতে হবে। তবে শেখার জায়গাটা রয়েছে, সেক্ষেত্রে উপস্থাপনার জায়গাটা এটা কথা বলার জায়গা তো, তাই এ জায়গাটাতে অনেক নলেজ রাখতে হয়।

যখন যে কাজটাই আমরা করতে বসব না কেন, যে শো-টাই হবে সেটা একটা মিউজিক্যাল লাইভ শো হোক, স্পোর্টস শো হোক, সেলিব্রেটি টক শো হোক, সেক্ষেত্রে রিসার্চ করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু স্ক্রিপ্টের কথা মুখস্থ করে বলা বা স্ক্রিপ্টের কথা না বলে নিজে জানাটা, যে বিষয়ে কথা বলবে সেটা রিসার্চ করে একটু পড়ালেখা করে তারপর উপস্থাপনা করা উচিত এবং উচ্চারণের দিকে খুব ভালোভাবে খেয়াল রাখা উচিত। সেটা বাংলায়ই বলি আর ইংরেজিই বলি।

আপনার বেড়ে ওঠার গল্পটা বলুন...
সবসময় আমার ক্ষেত্রে যেটা ছিল, কাজের ব্যাপারে আমাকে খুব একটা কিছু করতে হবে; সেরকম চিন্তা-ভাবনা বা মনোভাব আমার কখনোই ছিল না। আমি সবসময়ই এমন একটা জায়গা রেখেছি, যেটাই আসছে সেটা আমার মন মতো হচ্ছে কি-না বা আমার পছন্দ মতো হচ্ছে কি-না, সেটা স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হবে কি-না সেটা খেয়াল রেখেছি। নিজেকে গড়ার ক্ষেত্রে খুব এফোর্ট দিয়েছি। যে কাজটাই করব সেটা যাতে দর্শকদের মন ছুঁতে পারে সেটার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি।

মিডিয়াতে অনেক কিছুই করেছেন, মিডিয়ার কাজের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং আপনার জীবনের স্বপ্ন নিয়ে বলুন...
আমি অভিনয় করেছি অনেকবার, কিন্তু অভিনয় যতই করি না কেন, আমি সেটাতে নিয়মিত হতে চাইনি। যেমন এই মিউজিক ভিডিওর ক্ষেত্রে বললাম আমি কখনো নিয়মিত হতে চাই না। আমি এ জায়গাটাতেও একটা স্ট্যান্ডার্ডই মেইনটেইন করতে চাই। উপস্থাপনাকে আমি সবসময় মুখ্য জায়গায় ধরে রেখেছি। আমার স্বপ্ন হচ্ছে উপস্থাপনার জায়গাটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা।

আমি শেষ পর্যন্ত উপস্থাপনাটাকে নিজের কাছে সুন্দরমতো লালন করতে চাই। এটা আমার ভালো লাগার জায়গা আর আমার জীবনের স্বপ্ন হচ্ছে পুরো পৃথিবী ঘুরে দেখা। এ ছাড়া ক্যারিয়ার নিয়ে আমার আলাদা কোনো কথা বলার নেই।

উপস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশের মিডিয়ার বিভিন্ন রকম দিকই দেখতে পাচ্ছেন। আমাদের মিডিয়ার বর্তমান অবস্থান নিয়ে আপনার বক্তব্য...
মিডিয়া সেক্টরটা এখন যে জায়গায় অবস্থান করছে, সেক্ষেত্রে বড়দের মতো করে কিছু বলব না; আমি আমার জায়গা থেকে বলতে পারি। আমার কাছে মনে হয়, আমরা একটা ছকে বেঁধে ফেলেছি সবকিছু। সেটা নাটকের ক্ষেত্রে হোক বা প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে হোক। সবসময় বাজেটের কথা বলে দেখা যায় যে, ছক থেকে বের হয়ে যে একটা নতুন কিছু করব সে জিনিসটা হয় না। কখনো দেখা যাচ্ছে, একজন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বলা হচ্ছে দুই দিনের মধ্যে নাটক নামাতে হবে।

একটা এক ঘণ্টার গল্প সেটাকে দুইদিনে শুটিং করা, সেটা ডেফিনিয়েটলি খুব পরিশ্রমের একটা কাজ। সেরকম করে একটা উপস্থাপনার ক্ষেত্রেও আমার কাছে মনে হয়, যে কোনো একটা প্রোগ্রামে বাজেটের কথা না বলে যদি ছকের বাইরে কিছু করা যায়। সে একইভাবে মিউজিক্যাল লাইভ শো, একই ফরম্যাটে হয়ে যাচ্ছে বারবার। সেলিব্রেটি টক শো সে একই ফরম্যাটে হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো রিসার্চ ওয়ার্ক নেই।

এক্ষেত্রে সমাধান কী হতে পারে?
একজন উপস্থাপক যদি নিজে রিসার্চ করে তাহলে ভালো কিছুর সুযোগ থাকে বা কিছু কিছু ভালো চ্যানেল রয়েছে, তারা করছে যেমন মাছরাঙা টিভিতে আমি শো করতে খুব পছন্দ করি। কারণ সেখানে রিসার্চের একটা আলাদা টিম রয়েছে। কিংবা নাগরিকেও আমার শো করেছি সবসময়, খুব ভালো লেগেছে। নাগরিকেরও একটা আলাদা রিসার্চ টিম রয়েছে। এরকম একটা রিসার্চ টিম থাকা, একটু পরিশ্রম করে ছকের বাইরে কিছু দেওয়া। আউট অব দ্য বক্স চিন্তা করে কিছু নিয়ে আসা, একটা নতুন কিছু নিয়ে আসা সেটা আসলে খুব জরুরি হয়ে গেছে।

সবাই মনে করছে যে, দর্শক এটা দেখতে চায়। আসলে দর্শককে যতদিন আমরা নতুন কিছু না দেব, দর্শকের দোহাই দিয়ে লাভ নেই যে দর্শক এটাই চায়। দর্শক আসলে নতুন কিছু দেখতে চায় বলেই টেলিভিশন দেখা কমিয়ে দিচ্ছে। তাই দর্শক যাতে টেলিভিশন আরও বেশি দেখে, সেটার দায়িত্বটা আমাদের সবার।

সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।

 
Electronic Paper