ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক থা সা মা ন্য @ খোলা কাগজ

কমেডি ছবির আবেদন সর্বজনীন

তৌফিকুল ইসলাম
🕐 ১২:৫১ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৯

দেবাশীষ বিশ্বাস বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে

পথের প্যাঁচালী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আপনার উপস্থাপনা শুরু, দীর্ঘদিনের পথ চলায় দেবাশীষ বিশ্বাস হয়ে ওঠার গল্পটা বলুন...
প্রথম বিষয় হচ্ছে দিলীপ বিশ্বাস আমার বাবা। অনেক বড় একটা নাম এবং অনেক বড় একটি মুখ। সে জায়গা থেকে আমি আসলে নিজেকে একটু আলাদা করে গড়ার চেষ্টা করেছিলাম। আমার বাবার নামে পরিচিত হতে পারাটা অনেক ভাগ্যের বিষয়, ভালো লাগার বিষয়। পাশাপাশি নিজের যদি কোনো পরিচয় থাকে, সেজন্য চেষ্টা করেছিলাম। একজন উপস্থাপক হিসেবে ইউনিভার্সিটি লাইফ থেকেই আমার পরিচয়টা শুরু এবং শুরুটা আসলে খুব অদ্ভুতভাবে, কারণ উপস্থাপক হওয়ার প্রবণতা, ইচ্ছে, চর্চা কোনোটাই আমার মধ্যে ছিল না।

উপস্থাপনার শুরু...
একটা অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে হঠাৎ করেই উপস্থাপক বনে যাওয়া। আমি যখন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, তখন সেখানে কালচারাল একটা মহল ছিল সে মহলে গিয়ে প্রথম নিজেকে ফাইন্ড আউট করলাম যে আমি গান করতে পারব, এর পাশাপাশি সেখানে অভিনয় করতে পারারও একটি জায়গা তৈরি হয়েছিল। সেখানে সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে মিলে আমরা ঠিক করলাম একটা অনুষ্ঠান করব। তখন সে অনুষ্ঠানের প্ল্যান করা হলো। উপস্থাপক-নির্ভর অনুষ্ঠান, কিন্তু সেখানে আমরা উপস্থাপক খুঁজে পাচ্ছিলাম না। যেহেতু সবকিছুর অ্যারেঞ্জমেন্ট হয়ে গিয়েছিল, তাই খেলার মাঠে যখন অরিজিনাল খেলোয়াড় আহত হয় বা খুঁজে পাওয়া যায় না, তখনকার সময়ের বদলি খেলোয়াড়ের মতো আমি দলে নাম লেখালাম। কাউকে যেহেতু আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না, প্রিপারেশন হয়ে গেছে, খরচও হয়ে গেছে সেহেতু দুটো এপিসোড না হয় আমরা নিজেরাই শুটিং করি। ওই ভাবেই উপস্থাপনাটা শুরু করা এবং পরবর্তীতে যখন আমরা একুশে টিভিতে অনুষ্ঠানটি জমা দিলাম, তখন তারা এটাকে এত বেশি অ্যাপ্রিশিয়েট করল এবং পরবর্তীতে তারা তাদের নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা মানে একুশে টেলিভিশনের আওতায় এটিকে নিয়ে নিল। এভাবেই আসলে আমার শুরু, মানে হঠাৎ করে উপস্থাপক হয়ে যাই। আমার কোনো প্ল্যান ছিল না উপস্থাপক হওয়ার। এমনকি আমি নিজে উপস্থাপনা পারতাম কি না জানতামও না।

দীর্ঘদিন ধরে উপস্থাপনার পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করছেন, কোরবানির ঈদে মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকা ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ ছবির কাজ কি শেষ হয়েছে?
হ্যাঁ, কাজ সব শেষ। এখন শুধু কালার কারেকশন আর ব্যাকগ্রাউন্ডের কাজ চলছে, বাকি সব শেষ।

এ ছবিতে তো অপু বিশ্বাসের সঙ্গে শাকিব খানের বদলে বাপ্পী চৌধুরীর জুটি দর্শক দেখতে পাবে, এ জুটি প্রসঙ্গে...
আমি আসলে জুটি বানিয়ে ছবি বানাইনি। দুজনকে আলাদা আলাদা নিয়েছি, এক ছবিতে পড়ে গেছে। একজন নায়কের ভূমিকা করছে, একজন নায়িকার ভূমিকা করছে। দর্শক এটাকে জুটি বানাতে চাইলে বানাবে, আর বানাতে না চাইলে আমার তো কিছু করার থাকবে না।

ছবিটি নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
সব ছবি নিয়েই ডিরেক্টররা আশাবাদী হয়, মানে আশা নিয়েই ছবি বানানো হয়। আমিও আশাবাদী। আমার পয়েন্টের জায়গাটা এ রকম, বাংলাদেশে শত রকমের ছবির ভেতরে বা অনেক রকমের ছবির ভিড়ে অনেক দিন পিওর কমেডি ছবি হয় না। এটা বহু বছর পর বাংলাদেশে একেবারে আউট অ্যান্ড আউট কমেডি সিনেমা হচ্ছে। আর কমেডি ছবির আবেদনটা সর্বজনীন। কারও অ্যাকশন ফিল্ম ভালো লাগে, কারও রোমান্টিক ফিল্ম ভালো লাগে, আগেকার সময়ের মানুষ সামাজিক সিনেমা পছন্দ করত। এ বৈচিত্র্যের মাঝে কমেডি ফিল্মের আবেদন সব সময় ছিল, আছে ও থাকবে। সে জায়গা থেকে আমি আশাবাদী।

এ ঈদে কী কী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন?
এবারের ঈদে আমি সে অর্থে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করিনি। দু-একটা অনুষ্ঠান করেছি, কারণ আমি এবার ছবি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।

অনেক দিন ধরে উপস্থাপনা করে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। এখন তো অভিনয় বা গান করার পাশাপাশি যে কেউ উপস্থাপনা করছে। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
এখন সময়টা অস্থির। তারা নিজেরাও অস্থির। উপস্থাপনা একটা সাধনার বিষয়। প্রতিটি শিল্পই বড় শিল্প এবং শিল্পে একজনকে যদি একটা অবস্থানে আসতে হয় তাহলে পুরোটাই সাধনার বিষয়। এখনকার সময়ে উপস্থাপনার ক্ষেত্রে যেটা বলব কারও সে রকম ধৈর্য নেই, মনোযোগ নেই, তারা তাদের ছবিটা ফেসবুকে এলো কি না ঠিকমত তাকে দেখতে ভালো লাগল কি না এই ব্যাপারগুলো নিয়েই ব্যতিব্যস্ত বেশি থাকে। আসল কাজ তারা কিছুই করে না।

শেষ প্রশ্নে আসি, আপনার জীবনের স্বপ্ন...
জীবনটা তো মৃত্যু এলে শেষ হয়, যখন আমি মারা যাব তখন যেন মানুষ আমাকে নিয়ে বলতে পারে লোকটি ভালো ছিল বা লোকটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু একটা করতে পেরেছে বা তার কোনো অবদান আছে। এটিই আমার জীবনের স্বপ্ন।

 
Electronic Paper