প্লিজ দেশি নাটক, সিনেমা দেখুন
সাজ্জাদ হোসেন
🕐 ৯:২৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৯
নুসরাত জাহান পাপিয়া নিজের অভিনয়ের ব্যস্ততা ও দেশি সিনেমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে।
আপনার অভিনয়ের সূচনা কীভাবে?
আমার পৈতৃক নিবাস সিলেট হলেও ছোটবেলা থেকে চট্টগ্রামেই বেড়ে ওঠা। কলেজজীবন থেকেই চট্টগ্রামের জনপ্রিয় নাট্যদল ‘তির্যক নাট্যগোষ্ঠী’র সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সেই থেকেই অভিনয়ের প্রতি একটা ভালোলাগা। পাশাপাশি তখন থেকেই মিউজিক ভিডিও এবং মডেলিং শুরু করি। আমার কাজ দেখে ঢাকায় যারা সিনিয়র ছিলেন তারা ঢাকায় আসতে বললেন। ২০১৬ সালের শেষদিকে ঢাকায় আসি এবং প্রথম নাটক ‘নীড় খোঁজে গাঙচিল’-এর মাধ্যমে টেলিভিশনের পর্দায় যাত্রা শুরু করি।
নাটকের পাশাপাশি মডেলিং করছেন?
আসলে শোবিজ থেকেই আমার নাটক কিংবা সিনেমায় আসা। মডেলিংয়ের মাধ্যমেই আমি পরিচিতি লাভ করি। তাই মডেলিংটাকে আর ছাড়তে পারিনি। চঞ্চল চৌধুরীর বিপরীতে হাই স্পিড হেয়ার কালারের একটি টিভিসি করেছি, এয়ারটেলের টিভিসিও করেছি। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে কোকাকোলার একটি ফটোশুটসহ কোকাকোলার একটি অ্যাড করেছি, তারপর প্যারাস্যুট অ্যাডভান্স হেয়ার অ্যান্ড কেয়ারের ওভিসি করেছি। বর্তমান আরও কয়েকটি অ্যাডের অফার আছে। তাই অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিংটাও ধরে রাখতে চাই।
মডেলিং থেকে সবাই ফিল্মে ঝোঁকে, আপনি নাটকে এলেন কেন?
সত্যি কথা বলতে, মডেলিংয়ের আগে তির্যক নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকায় নাটকের প্রতি একটা টান তৈরি হয়। সিনেমা, অ্যাড, মিউজিক ভিডিও কিংবা মডেলিং আসলে অনেক সংকীর্ণ জায়গা। কিন্তু নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিজেকে আবিষ্কার করা যায়। অনেক কিছু শেখা যায়। যেহেতু আমি সিনেমায় নতুন তাই চাই আরও বেশি শিখে পুরোপুরি সিনেমায় নামি। কারণ বর্তমান সময়ে সিনেমা একটি চ্যালেঞ্জিং জায়গা।
উল্লেখযোগ্য কি কি নাটকে কাজ করছেন?
নীড় খোঁজে গাঙচিলের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করার পর একে একে রুপালি প্রান্তর, ছায়াবিবি, পরী, পাসওয়ার্ড, বাবর আলীর হেলিকপ্টার রিটার্ন, ভেল্কিবাজি, এশিয়ান টিভিতে বর্তমান চলছে পিরীতপুর, সোহেল আরমানের ডিএসএলআরে কাজ করলাম। এ ছাড়া আরটিভিতে ক্রাইম ফিকশনে সময়ের গল্পের বেশ কটি পর্বে কাজ করেছি। টিভি নাটকের পাশাপাশি একটি ওয়েব সিরিজে যাচ্ছে সিনে স্পর্টে ‘ইন্দুবালা’ নামে। আরও বেশ কটি নাটক প্রচারের অপেক্ষায় আছে। বিশেষ করে ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে কয়েকটি নাটক প্রচারের অপেক্ষায় আছে। আশা করি, নাটকগুলো দর্শকদের পছন্দ হবে।
সিনেমাতে নিয়মিত হচ্ছেন কবে থেকে?
আসলে সে অর্থে বড় কোনো চরিত্রে হয়তো অভিনয় করিনি, কিন্তু এর মধ্যে বেশ কিছু সিনেমায় কাজ করে ফেলেছি। উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে এসকে মুভিজের চালবাজ, তারপর আরিফ জাহানের নায়ক সিনেমায় কাজ করেছি। মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের আনন্দঅশ্রু, দহন, সর্বশেষ জলঘড়ি নামের একটি নন-কমার্শিয়াল ফিল্মে কাজ করেছি। তবে সামনে সিনেমার অফারই বেশি পাচ্ছি। যেহেতু সিনেমায় নতুন তাই আমি একটু দেখেশুনে এগুতে চাই। শুরুটা ধীরে হলেও যেন ভালো হয়। তবে আশা করি, সামনের দিনগুলোতে ভালো সিনেমা উপহার দিতে পারব দর্শকদের।
বাংলা সিনেমার হারানো গৌরব কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়?
আসলে দর্শক কিন্তু এখনো ভালো সিনেমা হলে এসে দেখতে চান। সিনেমায় অশ্লীলতা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারলে বাংলা সিনেমার হারানো গৌরব এখনো ফিরিয়ে আনা সম্ভব। অস্বীকার করবার উপায় নেই বাংলা সিনেমায় একটি সংকটময় সময় পার করেছে, কিন্তু এখন পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। অনেক ভালো পরিচালকরা সিনেমার উন্নতিতে কাজ করে যাচ্ছে। আমি আশা করি, দর্শকদের আস্থা ফেরাতে আমরা সক্ষম হব।
দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
দর্শকদের উদ্দেশে আমি বলতে চাই, আপনারা বেশি বেশি বাংলাদেশি নাটক, সিনেমা দেখবেন। বিদেশি সিরিয়াল না দেখে আমাদের দেশি নাটক সিরিয়াল দেখবেন। ভারতীয় সিরিয়াল, নাটকের চেয়ে আমাদের নাটকের মান কোনো অংশে কম নয়, ক্ষেত্রবিশেষে আমরা অনেক জায়গায় তাদের চেয়ে এগিয়ে। আমরা এ দেশের দর্শকের জন্য অভিনয় করি আপনারা যদি আমাদের নাটক না দেখেন তাহলে আমরা কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলব। তাই আপনারা বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ঠেকাতে প্লিজ বাংলাদেশি নাটক, সিনেমা দেখুন। আমরা আপনাদের অনেক ভালো কাজ উপহার দিতে চাই।