পরিবার সংস্কৃতির সূতিকাগার হওয়া উচিত
তৌফিকুল ইসলাম
🕐 ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
ড. ইনামুল হক বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চা, নতুন শিল্পীদের উঠে আসা ও নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে।
দুরন্ত টিভিতে ‘গল্প শেষে ঘুমের দেশে’ নাটকে একটি বিশেষ পর্বে অভিনয় করেছেন। বাচ্চাদের এ টিভি চ্যানেল সম্পর্কে আপনার মতামত কি?
বাচ্চাদের চ্যানেল হিসেবে দুরন্ত টিভি বেশ ভালো কাজ করছে। বাচ্চারা এ চ্যানেল থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছে, খেলাধুলাসহ অনেক কিছু শিখতে পারছে। দুরন্ত টিভি হওয়াতে আমার মনে হয় ভালোই হয়েছে। শুধু বাচ্চাদের নিয়েই কাজ করছে তো আমি এটাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি। ওদের জন্য নানা ধরনের গল্প, গানের অনুষ্ঠান হয়, গান ও নাচ শেখানো হয়, সবকিছুই বাচ্চাদের নিয়ে। এ ধরনের চ্যানেল করাতে কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ দিতেই হয়। আমি দেখেছি যে তারা খুব আন্তরিক। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে, এভাবে চলতে পারলে ভালোই হবে। এ জাতীয় আরও কিছু বিষয় যদি তারা সংযোজন করে, তাহলে সেটা ইতিবাচক হবে।
বাচ্চাদের সঙ্গে কাজ করতে কেমন লেগেছে?
বাচ্চাদের সঙ্গে আমি বিটিভিতেও কাজ করেছি। বাচ্চাদের সঙ্গে কাজ করতে আমার ভালোই লাগে। ওদের মধ্যে যে সরলতা আছে, ওরা অনেক বেশি আন্তরিক। ওদের যদি ওভাবে বোঝানো যায়, ওরা ভালোভাবে সিরিয়াসলিই করে।
নতুন যারা আসছে, তাদের সম্পর্কে আপনার বক্তব্য...
নতুন প্রজন্মের যারা আসছে, তারা কাজ করছে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে। আমার মনে হয় আরও সুন্দর একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে তাদের কাজটা হলে ভালো হত। কাজ হচ্ছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে লুক আফটার করার একটা ব্যাপার আছে।
আরও একটি নতুন বছর চলে এসেছে ক্যালেন্ডারের পাতায়, এ বছরে সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে আপনার প্রত্যাশা...
এখন তো নতুন ছেলেমেয়েরা যারা গান গাচ্ছে, শিখছে। ছায়ানটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের আরও একটু নার্সিংয়ের দরকার। তাদের উৎসাহ দেওয়ার প্রয়োজন আছে। উৎসাহ পেলে ওরা আরও ভালো কাজ করবে। পারিবারিকভাবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা সংস্কৃতি অঙ্গনে কাজ করছে তাদের অনুপ্রেরণা দেওয়া দরকার। তাদের বেশ ভালোই সম্ভাবনা আছে। সেটাকে প্রোপারলি বের করে আনাটা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চা সামগ্রিকভাবে কোন অবস্থানে আছে বলে মনে করেন?
বেশ ভালো অবস্থায় আছে এটা আমি বলব না। কারণ, সংস্কৃতি চর্চা অনেক কঠিন একটি চর্চা। এ চর্চাটা করার জন্য যে মানসিকতা দরকার, তা সবার মধ্যে আছে বলে আমি মনে করি না। সংস্কৃতির চর্চাটা পারিবারিকভাবে হওয়া দরকার। কারণ ছোটবেলায় সংস্কৃতিমনা না হলে পরবর্তীতে আর সেটা হয় না। এ জন্য ছোটবেলা থেকেই গ্রুমিংটা ওইভাবে দরকার। এটা পরিবার থেকেই হবে, আমি মনে করি পরিবার সংস্কৃতির সূতিকাগার হওয়া উচিত।
বিশ্বে বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চার প্রসারে আমাদের করণীয়...
আমাদের দেশে যে অ্যাম্বাসিগুলো আছে, সেগুলোকে যদি বিশেষভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চা বিশ্বব্যাপী প্রচার পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যাদের নিয়োগ করা হবে, তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যদি তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে বেড়ে উঠেছে এমন কি না, এটা যদি দেখা হয়, তাহলে ভালো হয়।
নতুন সরকারের কাছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রত্যাশা সম্পর্কে বলুন...
নতুন সরকার তো সংস্কৃতিবান্ধব। তবে সবকিছু আরও মনিটরিং করা দরকার। পুরো সংস্কৃতি চর্চাটা সেভাবে বেড়ে উঠছে কি না, সেটা দেখা উচিত। শিল্পকলা সংশ্লিষ্ট সবাই কতটা কাজ করছে, তা নিয়মিত দেখার বিষয়।