সৌদি আরব বিএনপির পশ্চিম অঞ্চল কমিটি প্রত্যাখান
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৬:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২১
অসাংগঠনিক ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় গঠিত ও সদ্য ঘোষিত সৌদি আরব বিএনপির (পশ্চিম অঞ্চল) আহবায়ক কমিটি প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছে একটি অংশ।
সৌদি আরব স্থানীয় সময় রাত ১০টায় বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ১০ জুলাই গতকাল শনিবার জেদ্দা আজিজিয়া মেহেরান ভিআইপি হলে সাংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটির অন্যতম সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী নূরুল আমিন, সভা পরিচালনা করেন সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সৌদি আরব বিএনপির (পশ্চিম অঞ্চল) অর্ন্তভূক্ত জেদ্দা, মক্কা, মদীনা, তায়েফসহ সকল প্রাদেশিক বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অন্যান্য অংগ ও সহযোগী সংগঠন এবং উপস্থিত বিভিন্ন অঞ্চল কমিটির নেতারা।লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী নূরুল আমিন।
তিনি বলেন, গত ২রা জুলাই ২০২১ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপি’র ৬১ সদস্যের একটি কমিটি দেখতে পাই। তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই যে বর্তমান চলমান ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল জলিল, অন্যতম সহ সভাপতি-আবুল কালাম আজাদ ও সহ সভাপতিবৃন্দ, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী নূরুল আমিনসহ (সুপার -৭) এবং প্রচার সম্পাদক রৌশন জামিল শিপু, দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম,যুব সম্পাদক বাহার উদ্দিন বাদল, শ্রম সম্পাদক আতিকুর রহমান শিপন, মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক এরফান আলী, যোগাযোগ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সেলিম মোল্লাসহ ৯০% সম্পাদকমন্ডলী এবং কমিটির সদস্যদেরকে না জানিয়ে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করে।
চলমান কমিটির কোন জরুরী/সাংগঠনিক/ বর্ধিত সভা না করে বা মতামত না নিয়ে সর্ম্পূণ অসাংগঠনিক ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় একটি ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন ও ঘোষণা করা হয়। আমরা পশ্চিম অঞ্চলের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ও সকল তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্য থেকে আজকের সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আহম্ম আলী মুকিবের নতুন আহবায়ক (পকেট কমিটি) কমিটি প্রত্যাখান করলাম। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর কাছে এই কমিটি বাতিল করে জরুরী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানাই।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ঠিক একই কায়দায় পশ্চিম অঞ্চলের স্বঘোষিত আহবায়ক আহম্মদ আলী মুকিবকে তৎকালীন বিএনপি’র পশ্চিমাঞ্চল কমিটির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক, ক্লিন ইমেজের প্রবাসী নেতা জনাব শহিদুল ইসলাম নান্নুর নেতৃত্বে তৎকালীন কমিটির প্রায় সকল নেতৃবৃন্দ (৯৫%) মুকিবের অসাংগঠনিক কার্যকলাপ, যত্রতত্র যখন তখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে হুমকি ধামকীর প্রতিবাদ স্বরূপ আহম্মদ আলী মুকিব ও তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক পূর্নাঙ্গ কমিটির সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান তপনকে জরুরী সভা করে অধিকাংশ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে তাদের ২ জনকে দল থেকে অব্যাহতি দেন। তার কিছুদিন পর মুকিব শহীদুল ইসলাম নান্নুসহসহ প্রায় সকলকে বাদ দিয়ে একেই কায়দায় নতুন আহবায়ক কমিটি (পকেট কমিটি) কেন্দ্র থেকে নিয়ে আসেন।
বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে,৯৭ সালের গোড়ার দিকে ভিন্ন ভিন্ন নামে জেদ্দায় বিভাজনের মধ্য দিয়ে বিএনপি’র রাজনীতি শুরু হয় এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বর্তমান কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (জাতীয় কমিটি) জনাব আব্দুর রহমান ও বর্তমান সভাপতি আহম্মেদ আলী মুকিবের ২ গ্রুপের বিভেদ চরমে রূপ নিলে এই অঞ্চলের বিএনপি সংগঠন সর্ব মহলে নানা রকম সমালোচনার মুখে পড়ে। এখানে উল্লেখ্য যে, আব্দুর রহমানের পক্ষে পশ্চিম অঞ্চল বিএনপি ও অংগ সংগঠনের ৯০% নেতা কর্মীর সমর্থন ছিলো যা এখনো আছে। দলের জন্য দেশ বিদেশে তিনি প্রচুর টাকা খরচ করেন। অপর দিকে মুকিবের পক্ষে অতীত ও বর্তমানেও ১০% নেতা কর্মী সমর্থনে আছে।মুকিব নিজের স্বার্থ ব্যতিত দলের জন্য কোন টাকা খরচ করেন না। তিনি দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষে বিএনপি চেযারপার্সনের মতামত নিয়ে আব্দুর রহমান সকল বেদাবেদ ভুলে ঐক্যের কোন বিকল্প নাই চিন্তা চেতনাকে সামনে রেখে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা ও পরবর্তীতে ২ গ্রুপের মধ্যে ঐক্যেও প্রয়োজনীতার উপর সম্মতি প্রকাশ করেন। আবদুর রহমানের সরাসরি পদক্ষেপ ও তদারকিতে ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় ২০১৫ সালের ৩১শে ডিসেম্বর রাতে এক ঐতিহাসিক ঐক্য ঘোষণার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে এক ঐতিহাসিক ঐক্যের উদাহরণ সৃষ্টি করেন। যাহা সেই সময়ে দেশে বিদেশে সর্ব মহলে ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়। সেই থেকে অদ্যাবদি আমরা আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে এই সংগঠনটি প্রবাসের মাটিতে নানা রকম কর্মসূচী পালনসহ জাতীয় রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে, বাংলাদেশে দলীয় নানা প্রায়োজনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি”।
সাংবাদ সম্মেলনে আহম্মদ আলী মুকিবের বিরুদ্দে দুর্নীতি,সেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, সাংগঠনিক অদক্ষতা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাংগিয়ে মধ্যেপ্রাচ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার, মধ্যপ্রাচ্যের সাথে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রহমানসহ সৌদি আরবে বিএনপির প্রবীন নেতাদেরকে বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে যাচ্ছেন। নিজের ইচ্চামত কমিটি তৈরী ভাংগাসহ অসংখ্য তথ্য প্রমানসহ অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। তারা নবগঠিত আহবায়ক কমিটি বাতিল ও আহম্মদ আলী মুকিবের বহি:স্কারের দাবী জানান।
বর্তমান আহবায়ক কমিটির জটিলতা ও পরিস্থিতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে সৌদি আরবে বসবাসকারী বিশিষ্ঠ ব্যাবসায়ী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, নতুন কমিটি তিনি ফেইজবুকে দেখতে পেয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবিহিত করেছি এবং মহাসচিবকে লিখিত চিঠি দিয়ে সমস্যা সমাদানের কথা উল্লেখ করেছি।
তিনি আরো বলেন, অতীতেও এ ধরনের সমস্যা হয়েছিল দলের হাই কমান্ট সে সমস্যা গুলি দ্রুত সমাধান করেছেন। আশা করি উনারা দলের ঐক্য অটুট রাখার জন্য দ্রুত সমস্যা সমাধান করবেন।