ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিক্ষার্থীদের ভাবনা

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
🕐 ২:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২১

শিক্ষার্থীদের ভাবনা

শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষক ছাড়া যোগ্য সমাজ ও উজ্জ্বল জীবন কল্পনাতীত। তাদের শিক্ষার আলো যেমনি শিক্ষার্থীদের সামনের পথ চলাকে সুদৃঢ় করে, তেমনি তাদের স্নেহ, মমতা, ভালোবাসা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে। ২০০৩ সালে ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গীকার নিয়ে তৎকালীন সরকার ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ চালু করে। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের শিক্ষক ও ছাত্র সমাজ ১৯ জানুয়ারি ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। জাতীয় শিক্ষক দিবস নিয়ে এগারজন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের ভাবনা তুলে ধরেছেন সভাপতি মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

অনন্য প্রতীক রাউত

শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ

একজন মানুষের জীবনে সফলতা অর্জনের পিছনে যার সুনিপুণ দক্ষতা বা দিক-নির্দেশনা থাকে তিনি হচ্ছেন শিক্ষক। আলোর মতো সরলরেখায় অবিরাম বিলিয়ে যান জ্ঞানের ভান্ডার। এক সময়কার বটতলা ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্রকালের বিবর্তনে বদলেছে সত্যিই তবে কমেছে গুণগত মান। গদমুখস্ত আর জিপিএ নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা আটকে গেছি। বাড়ছে নম্বরের বোঝা তবে কমছে মনুষ্যত্ব বোধের অবস্থান হৃদয় থেকে। এটার জন্য আমরা যেমন দায়ী তেমনী অনেক অপেশাদার শিক্ষক নামধারী কিছু অশিক্ষক দায়ী? যারা নিজের অর্থ বিত্ত বা ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে ক্রমাগত পথ ভ্রষ্ট করাচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে। ধ্বংসের মুখে ফেলে দিচ্ছেন দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ধারাকে। স্বাভাবিকতার মাঝে কিছু অস্বাভাবিকতা থাকেই। সেজন্য, পুরো শিক্ষক সমাজের দিকে আঙ্গুল তোলা বোকামির শামিল। শিক্ষক দিবসের মতো মহান দিনে নেতিবাচকতার দিকে ইঙ্গিত দিতে চাই না আর। তবে, পরিবর্তন ঘটা খুব জরুরি। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষকের বাইরে সবার জীবনে একজন স্রষ্টা প্রদত্ত শিক্ষক থাকেন। যিনি পৃথিবীতে সন্তানের সবচেয়ে আপন এবং অকৃত্রিম বন্ধু। শুভ কামনা সকল আলোর দিশারীদের তরে।সমৃদ্ধ জাতি গড়ার কারিগরদের বিনম্র শ্রদ্ধায় করি স্মরণ।


রুকাইয়া মিজান মিমি
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

শিক্ষা যেমন জাতির মেরুদন্ড ঠিক তেমনি আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র। শিক্ষক মানেই যেন একটি সম্মানিত শব্দ, জ্ঞানের বিশাল ভান্ডার, সকল মানবিক গুণের অধিকারী। আমাদের জাতীয় জীবনে শিক্ষকের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তাই ভাষায় বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। একজন আদর্শ শিক্ষক শুধুমাত্র সুকৌশলে পাঠদানই করেন না, ছাত্রদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে তাদের সুপ্ত প্রতিভাকেও জাগিয়ে তোলেন। তার হাতে গড়ে ওঠে বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, ডাক্তার, আইনজীবী, আমলা, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, তথা আগামীর ভবিষ্যৎ। তিনি যেন প্রজন্ম গড়ার কারিগর! ব্যক্তিত্ব, দৃষ্টিভঙ্গি গঠনেও শিক্ষক প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলছে। বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষকের আচরণ, মূল্যবোধ, সততা প্রতিটি কোমল শিশুর জীবনেই ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
তারা তাদের প্রিয় শিক্ষকটির অনুসারী হতে চায়, তার আচরণগুলো আয়ত্ব করে নিজের জীবনে প্রতিফলিত করে। তাই একটি জাতিকে আলোকিত ও সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী করতে সুশীল শিক্ষক সমাজের কোনো বিকল্প নেই, শিক্ষকরা আমাদের জাতীয় জীবনে একেকটা আশীর্বাদ। তাই জাতির প্রতি তাদের দায়িত্ববোধের জায়গাটাও অনেক বেশি। প্রতিটি শিক্ষক ভালো থাকুক, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা আরও সমৃদ্ধ হোক।


সানজিদা মাহমুদ মিষ্টি, শিক্ষার্থী শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

শিক্ষা যদি জাতির মেরুদন্ড। আর শিক্ষকরা সেই মেরুদন্ড তৈরির শ্রম শিল্পী। গোটা মনুষ্য সমাজের মধ্যে নৈতিকতার বিচারে শিক্ষক একটি মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। শিক্ষক তার সুচিন্তিত জ্ঞানের মাধ্যমে অপশিক্ষা, কুশিক্ষা, অন্ধত্ববাদ থেকে বের করে এনে জাতিকে আলোর পথ দেখায়। বিশ্বকে নতুনভাবে চিনতে শেখায়। একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে যেমন স্নেহ-ভালোবাসা পেয়ে বড় হয়, তেমনি শিশুর ভবিষ্যৎ লক্ষ্যে পৌঁছাতে শিক্ষকেরা আলোর দিশারি হয়ে কাজ করেন। দক্ষ কাঠমিস্ত্রি ব্যতিত যেমন একটি ঘর তৈরি করা যায় না, তেমনি দক্ষ শিক্ষক ছাড়া একটি দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলা যায় না। স্নেহ, ভালোবাসা সহমর্মিতা, চরিত্র গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় এসব আমরা তার কাছে শিখতে পারি। তাছাড়া আমাদের আচরণের বহিঃপ্রকাশ কেমন হবে, শিশু বয়স থেকেই উচিত-অনুচিত বোধশক্তি, সততা, ন্যায়-নীতি, মনুষত্ববোধ, দেশ প্রেম প্রভৃতি বিষযয় গুলো আমরা শিক্ষকের মাধ্যমে উপলব্ধি করতে পারি। তাই আমাদের আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জ্ঞান বিজ্ঞানের সব তত্ব আবিষ্কারের পিছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দান করেন একমাত্র শিক্ষক। তাদের স্নেহ-ভালোবাসা, শাসনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত, সৎ, সাহসী ও বিনয়ী মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।


মেহরাব হোসেন অপি, শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান বিভাগ

শিক্ষা ও শিক্ষক শব্দ দুটি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। বলা হয়ে থাকে, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। এই মেরুদন্ড গঠনের কারিগরই হলেন শিক্ষক। আর শিক্ষকদের সম্মানার্থে যেই দিবস পালিত হয় তাই শিক্ষক দিবস। শিক্ষক শুধুমাত্র ছাত্রদের পড়াশোনায় সাহায্য করেন না, বরং শিক্ষার্থীদের সৎচরিত্র গঠন করে তাদেরকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে উঠতে এবং তাদের লক্ষে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। বস্তুত ছাত্রছাত্রীর জীবনে একজন যোগ্য শিক্ষকের অসামান্য অবদান বিদ্যমান। একজন মানব শিশুকে জন্ম দেন তার পিতামাতা। আর সেই সন্তানকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন শিক্ষক। এজন্যই বলা হয়ে থাকে শিক্ষক জাতি গঠনের কারিগর। শিক্ষককে বলা হয় মানসপিতা। জন্মিলেই কেউ মানুষ নয়। মানুষ হতে হলে তাকে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হয়। মানুষকে সঠিক পথের দিশা দেওয়ার মহান ব্রত নিয়েই আমাদের দেশ, সমাজ এবং সারা বিশ্বে শিক্ষকরা কাজ করে গেছেন যুগের পর যুগ। এটি এমনই এক ব্রতের নাম যা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাতা। একজন শিক্ষকই পারেন একটি জাতিকে উন্নতির সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছে দিতে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় নয়, বাস্তবিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। জাতি গঠনের কারিগর শিক্ষকদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা, সম্মান ও সালাম।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper