পথে যাদের জীবন...
ইমরান হাসান
🕐 ১২:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২০
শহরের বা উপশহর এর অতি পরিচিত দৃশ্য হচ্ছে, বস্তা হাতে টোকাই বা পথ শিশুদের বিচরন। রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে থাকা বস্তুগুলো কুড়ানোই এদের মূল কাজ। প্রায়শই খালি গায়ে কিংবা ছেড়া জামাকাপড় পরে ঘুরে বেড়ায় এই সব শিশুরা। নিছক জীবিকা বা বাবা-মাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগানোর জন্য শিশু এবং বাল্য বয়সে তাদের এই রকম জীবন যাপন শুরু হয়।
আচ্ছা আমাদের কি কিছুই করার নেই এদের জন্য? আমরা দেশের জন্য কত কিছুই তো করতে চাই। সকলের সম্মিলিত একটু চেষ্টায় এই সকল পথ শিশু পেতে পারে একটু মানবিক জীবন যাপনের সুযোগ একটু সহায়তা পারে সুন্দর একটি জীবন উপহার দিতে। পথ শিশুদের একটি বড় অংশ তাদের পরিবার ছাড়াই দিনে এবং রাতে রাস্তায় অবস্থান করে, বেড়ে ওঠে তিলতিল করে।
কিছু শিশু সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে পরিবারে ফিরে আসে অনেকর আবার ঠিকানা হয় বিভিন্ন শপিং মলের সামনে ফ্রাই ওবার এর নিচে। অপরদিকে দেশের নগর বন্দর শহরে দিনে দিনে ছিন্নমূল পথ শিশুদের মিছিল প্রসারিত হচ্ছে। চোরাচালান মাদক বিক্রি সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে শিশুদের ব্যবহার। জড়িয়ে যাচ্ছে চুরি ছিনতাই কিংবা নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে। জন্ম নিবন্ধনে আওতায় এদের অধিকাংশ আনা সম্ভব হয়নি। এদের একটি অংশের প্রতিদিন রাত কাটে রাস্তা ও ফুটপাতে।
বাবার কোলেঅপার স্নেহ আর মায়ের আঁচলে মুখ লুকানোর স্বর্গীয় সুখ তাদের কপালে জোটেনি অনেক সময় চাইলেও পারে না এই সুখ, স্নেহ। ভূমিষ্ট হওয়ার পর থেকেই ওরা অনাদর, অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার হয়েছে ধাপে ধাপে। রাস্তার পাশে জেগে উঠা আবর্জনার স্তূপ, বাস টার্মিনাল-রেলস্টেশন এখানে- সেখানে নোংড়া অপরিচ্ছন্ন স্থানটুকুই আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয় ওরা বাঁচার তাগিদে।
কাগজ কুড়ানো কিংবা ভিক্ষাবৃত্তি দিয়েই ওরা জীবন শুরু করে। সব্যসাচী মানুষের ধিক্কার, চড়-থাপ্পরসহ নানা শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে হয় প্রতিনিয়ত। অবহেলা যেন তাদের জন্ম পাওনা, ওরা যেন সমাজের সর্বোচ্চ অবহেলিত মানুষ। ওদের নিয়ে ভাবনার সময় হয় না কারো। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়সহ সকল প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ওরা কারো সহানুভূতি পায় না কখনো। বেঁচে থাকার আহার টুকু কখনো রোজগার করতে না পারলে পেটের জ্বালায় ওরাই বেছে নেয় চুরি, ডাকাতিসহ নানা সামাজিক অপরাধমূলক কাজ। সমাজের এসব পথ শিশুরা কারো কাছে ‘টোকাই’ হিসেবে পরিচিত।
রেলস্টেশন ছিন্নমূল পথশিশু বা টোকাইদের একটি বড় অংশের বিচরণস্থল। এছাড়া বাজারের আশেপাশে বিভিন্ন রাস্তার পাশে, কল-কারখানার আবর্জনার স্তূপে অনেক টোকাই ছেলেমেয়েদের কাঁধে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ ঝুলিয়ে কাগজ কুড়াতে দেখা যায়। তাছাড়া বাসস্ট্যান্ডে অনেক পথ শিশুকে বাসের কন্টাক্টারের সাথে সাথে যাত্রী হাঁকতে দেখা যায় হকার এর কাজেও এদের দেখা যায়।
আবার কখন ফুল বিক্রি করতে দেখা যায় নানা জায়গায় জীবন এর তাগিদে নানা কাজ করে থাকে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তাদের সাথে কথা বলে তারা বলে আমরা দিন আনি দিন খাই। একদিন ফুল বিক্রি না করলে না খেয়ে থাকতে হয় কিংবা কাগজ কুড়াতে না পারলে মালিক টাকা দেয় না তখন তাদের খাবার জোটে না। তারা আর বলে আমাদের পড়াশুনা করতে ইচ্ছা হয়। আমাদের অনেক স্বপ্ন আছে।
আমাদের ইচ্ছা আমরা বড় হয়ে ডাক্তার, শিক্ষক, উকিল, পুলিশ হব সেই সাথে ভাল মানুষ হব। নাম প্রকাশে একজন বলে আমার মতো অনেকে আছে যারা নানা রকম অসামাজিক কর্মকাণ্ড জড়িত তারা একটু সুযোগ সাহায্য পেলে তারা পরিশ্রম করে সামাজিক জীবন যাপন করতে চাই। আমরা ভালো মানুষ হতে চাই অবহেলা থেকে মুক্তি চাই সুস্থ বাবে জীবন যাপন করতে চাই।
সহ-সম্পাদক, এগারজন
শ্রীপুর, গাজীপুর
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228