একটি সাদা সারস ও লাল কাঁকড়ার গল্প
মাহাথির মোবারক
🕐 ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০১৯
এক জলাশয়ে বাস করত একটি লাল কাঁকড়া। আর সেই জলাশয়টা ছিল বিভিন্ন মাছে ভরপুর। মাছগুলো ছিল দেখতে অনেক সুন্দর। লাল কাঁকড়া আর মাছদের সঙ্গে বন্ধুত্বটা ছিল দেখার মতো। তারা একসঙ্গে খায়-দায় খেলা করে আবার একসঙ্গে আপদে-বিপদে এগিয়ে আসে। জলাশয়টা অনেক পুরনো ও প্রাচীন। এ প্রাচীন জলাশয়টিতে আগিলা দিনে হিন্দুরা এখানে পূজা করে মূর্তি ডোবাত। কিন্তু এখন আর জলাশয়টা কেউ ব্যবহার করে না, তাই এখন বিভিন্ন পশুপাখি এই জলাশয়ে বাসা বেঁধে নিয়েছে।
দিনে হাজারও পাখি এখানে পানি খেতে আসে, মাছ খেতে আসে। তারা যখন এই জলাশয়ের পাশ দিয়ে যায় তখনি তারা নেমে এসে জলাশয়ের পানি দ্বারা তাদের গলা ভিজিয়ে যায়। একবার আশ্বিন মাসে মাথার ওপর সূর্যের প্রখর তেজ। রোদ্রে পুরো গ্রাম খাঁ খাঁ করছে। কোথাও কোনো বাতাস নেই, মানুষগুলো গরমে অস্থির হয়ে পড়ছে। আর জলাশয়টা রোদের তাপে পানি গরম হয়ে আছে, মাছগুলোর অনেক কষ্ট হচ্ছে। তার মাঝে আবার এই গরমের কারণে অনেক মাছ মরেও যাচ্ছে। তাই মাছেরা এবার লাল কাঁকড়ার কাছে বলল, বন্ধু! আমরা এখন কী করতে পারি, রোদের তাপে আমাদের মাছ বন্ধুরা তো একে একে সবাই মরে যাচ্ছে! তুমি আমাদের এমন একটা পথ বলে দাও, যেন আমরা অন্তত মৃত্যুর হাত থেকে রেহায় পাই। লাল কাঁকড়া তার মাছ বন্ধুদের মুখে এমন বিপদের কথা শুনে নিজেও পেরেশান হয়ে গেল। চিন্তা করতে লাগল কী করা যায় এখন। জলাশয়ের পানিও আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। যদি এভাবে পানি কমে যায়, তাহলে তারা থাকবে কোথায়? কাঁকড়ার আর ঘুম নেই, কীভাবে কী করা যায় এ চিন্তায়। একদিন ঠিক দুপুরের রোদের মাঝে কাঁকড়া সব মাছগুলোকে নিয়ে পানির ভেতর বসে আছে। এমন সময় হঠাৎ কাঁকড়ার গা ঘেঁষে পানিতে নামল একটি সাদা সারস। সারসটি দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে। সারস জিজ্ঞেস করল কাঁকড়া ভাই জলাশয়টা তো অনেক চমৎকার লাগছে আমার কাছে। আমি তো প্রতিদিন এখান দিয়েই খাবারের খোঁজে যাই; কিন্তু জানিই না এখানে যে এত সুন্দর একটি জলাশয় আছে। আর তোমার মতো এত ভালো একজন বন্ধুও আছে। তখন লাল কাঁকড়াটা ওই সারসের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিল, সারসও কাঁকড়াকে বন্ধু হিসেবে মেনে নিতে কোনো কষ্ট হয়নি।
সারস পাখিটি খাবারের জন্য অনেক দূরে যেতে হতো, তাই সে মনে মনে ভাবতে লাগল এখন যেহেতু কাছেই একটা জলাশয় পেয়ে গেছি, তাহলে এখন আর কষ্ট করে দূরে যেতে হবে না। এখান থেকেই সব মাছ খেয়ে সাবাড় করে দেব। তার আগে মাছদের সঙ্গে ভালো একটা বন্ধুত্ব করে ফেলি, তারপর তারা একে একে সবাই আমার পেটে যাবে। এ কথা ভেবে সারস পাখিটি এখন থেকে প্রতিদিন এই জলাশয়ে আসে। সেই সকালে জলাশয়ে আসে আর যখন ঘুটঘুটে সন্ধ্যা নেমে আসে তখন বাসায় চলে যায়।
এভাবে প্রতিদিন সাদা সারস পাখিটি জলাশয়ে যাওয়া আসা করতে লাগল। মাছগুলোও সারসের মতো একটি নতুন বন্ধু পেয়ে অনেক খুশি হলো।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228