ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্যাসিনো রোধে আলোচনা

মেসবাহ হাসান
🕐 ১:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯

স্বাধীনতার পর বৈচিত্রে ভরা এ দেশ একটি শক্তিশালী, সুস্থ সংস্কৃতিসম্পন্ন দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে বলেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি যুব সমাজ আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে। ওদের সবকিছুই তারা অন্ধভাবে অনুকরণ করছে, যা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তেমনি একটি সংস্কৃতি ক্যাসিনো সংস্কৃতি। সারাদেশে যখন এই ক্যাসিনো সংস্কৃতির বিরোদ্ধে অভিযান চলছে তখনই স্টামফোর্ড বিশ^বিদ্যাল এগারজন শাখা আয়োজন করেছে মুক্ত আলোচনার আসর।

কিভাবে হলো ক্যাসিনো সংস্কৃতির উদ্ভব? এই সংস্কৃতি থেকে যুব সমাজ কিভাবে বেঁচে থাকবে এসব বিষয়ে কথা বলছিলেন খোলা কাগজের পাঠক সমাবেশ এগারজনের সদস্যরা।

খাদিজা খাতুস স্বপ্না বলেন, যুব সমাজের অবস্থা আজ পালহীন নৌকার মতো কেন? এ নিয়ে পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। যুব সমাজের অধঃপতনের পর্যালোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই একটা কথা বলে রাখা ভালো, দেশের সব যুবক-যুবতীই যে অতলে তলিয়ে যাচ্ছে এমন নয়, তবে সে পথ ধরে চলার সংখ্যাই বেশি। তাই যুব সমাজের মধ্যে অধঃপতন ঘটছে বলে ধরে নিতে হবে। পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানি করতে অবশ্য ঠিকাদারের ভূমিকা নিয়েছে একশ্রেণির ইলেকট্রনিক মিডিয়া। দেশে এসব প্রচার মাধ্যমের দাপট বেশি।

তাই শিক্ষিত অসচেতন যুবক-যুবতীর পক্ষে ভালমন্দ বিচার-বিবেচনা করাটা কঠিন ব্যাপার। তারা যা চোখের সামনে দেখে সেটাকেই ঠিক বলে ধরে নিচ্ছে। এদিকে বিত্তবান ও উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের যুবক-যুবতীরা নিজেদের লাইফ স্টাইল অন্যদের থেকে আলাদা দেখাতে গিয়ে বিদেশি সংস্কৃতিকে আকড়ে ধরছে। মদ গাঁজা, ইয়াবা, জুয়ার সাথে নিজেদের মিশিয়ে নিজেদের অত্যাধুনিক ভাবছে। এটা তাদের অজ্ঞতা। সাধারণ অর্থে শিক্ষিত হলেও যারা সত্যিকার অর্থে শিক্ষিত নয়, তারাই এভাবে নিজেদের ও দেশের সর্বনাশ ডেকে আনছে।

এস কে শাওন বলেন, যুব সমাজের শিল্প-সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। আমাদের রাজনীতিতে ক্ষমতা দখলের লড়াই এবং দুর্বৃত্তায়ন প্রবেশ করার পর থেকেই বলা যায় যুব সমাজের উপর খাড়া নেমে এসেছে। শাসন ব্যবস্থা, একশ্রেণির রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি আমলার আচরণ যুব সমাজের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে। নিজেদের স্বার্থে একশ্রেণির রাজনৈতিক নেতা যুবক-যুবতীদের ব্যবহার করছেন। সেসব নেতার কথা ও কাজে আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখা দেওয়ায় প্রতারিত হচ্ছে যুবক-যুবতীরা। দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বেকার বাড়ছে। সরকার এদের কর্মসংস্থানে ব্যর্থ। যুব সমাজের জন্য সুসংহত কোনো নীতিও গ্রহণ করা হচ্ছে না। খেলাধুলা, শিল্প-সংস্কৃতি, পড়াশোনার ক্ষেত্রে সরকারের সুনজর বাড়াতে হবে। মুখে অনেক কিছু বলা হলেও কার্যক্ষেত্রে প্রতিফলন খুবই সামান্য। এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে যে, এক শ্রেণির যুবক-যুবতী অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পাচ্ছে, নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। যোগ্যরা হচ্ছে বঞ্চিত। এছাড়া দেশের সব অঞ্চলের প্রতি সরকার সমদৃষ্টি দিচ্ছে না।

এজন্য বঞ্চিত হচ্ছে, অবহেলিত হচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলের যুবক-যুবতীরা। সরকারের এ অসম আচরণ যুব সমাজের মধ্যে শুধু হতাশারই জন্ম দেয়নি, জন্ম দিয়েছে হিংসারও। বিভিন্ন এলাকা ও রাজনীতির নামে যুব সমাজের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক নয়। বর্তমান যুব সমাজের উন্মাদনার নেতিবাচক দিকটা তুলে ধরলে যা দেখা যাবে, তা সত্যিই ভয়ঙ্কর। এটা একটা স্বাধীন দেশের জন্য মোটেই কাম্য নয়।

এছাড়া অন্যন্যরা বলেন, যুব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করার জন্য আকাশসংস্কৃতির রগরগে ছবি, পর্নোগ্রাফি, দেশের শাসন ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা যতটুকু দায়ী, ততটুকুই দায়ী যুবক-যুবতীদের অভিভাবকগণ। গোটা দেশের কথা বাদ দিয়ে যদি বিভিন্ন শহরের বর্তমান যুব সমাজের উন্মাদনার দিকগুলো তুলে ধরা যায়, তাহলে দেখা যাবে যে, সে চিত্রটা আমাদের ভাবিয়ে তোলার পক্ষে যথেষ্ট।

এই মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন, খোলা কাগজের স্টাপ রিপোর্টার ছাইফুল ইসলাম মাছুম, আকরাম হোসেন নাঈম, হাসিব জুবায়ের সিয়াম, শোভনসহ স্টামফোর্ড এগারজনের সদস্যরা।

সভাপতি, এগারজন
স্টামফোর্ড

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper