অপেক্ষা
জাহিদ হাসান মিহাদ
🕐 ৩:৩০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৮, ২০১৯
এই ইট-পাথরের শহরে সে আমাকে শিখিয়েছিল ভালোবাসা অন্যভাবেও হয়। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়। আমরা দু’জন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্তোরাঁয় কখনো দেখা করিনি, আমাদের দেখা হতো খোলা আকাশের নিচে। টঙের দোকানের কড়া লিকারের চা ছিল তার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। আমার পরিচিত মানুষগুলো আমাদের ভালোবাসা দেখে ঈর্ষা করতো। ভালোবাসা এত সাধারণ হয়ে কীভাবে?
ভালোবাসার চাহিদা এত অল্পতেই মিটে যায় কি করে!! এই ব্যস্ত শহরে আমাদের অবসর কাটতো নদীর ধারে, নীরব প্রকৃতি উপভোগ করতে করতে সে আমাকে বলতো, ‘বুড়ো হবে একসঙ্গে?’ আমার কাছে তার চাওয়া-পাওয়া ছিল নিতান্তই অল্প। শত ব্যস্ততার মাঝেও তাকে দেওয়া একটু অবসর সময়টাতেই মিটে যেত তার সকল চাওয়া-পাওয়া। মানুষ এত সহজে কীভাবে হাসিখুশি থাকতে পারে তা আমি তার কাছ থেকে দেখে শিখেছি। এই পৃথিবীর শত পাষাণ হৃদয়ের মানুষের ভিড়ে সে ছিল আমার হৃদয়ের এক বিন্দু পরিমাণ শীতল আবছায়া।
আমি তার চোখে চোখ রেখে রাজ্যের স্বপ্ন দেখতাম, তার অর্থহীন বুলি কথাগুলোও আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। তার অট্টহাসিতে আমি সারাক্ষণ মেতে থাকতাম !! হঠাৎ একদিন কোনো এক অজানা ঝড়ে সে আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেল। তার সঙ্গে আমার আর দেখা হয়নি, কথা হয়নি। কিন্তু সে কোথায় হারালো, কেন হারালো? সেই উত্তর আমার জানা নেই। আমি আজও সেই উত্তর জানার জন্য এই পৃথিবীর সবচেয়ে আগ্রহী শ্রোতা হয়ে অপেক্ষা করছি। তার সঙ্গে কাটানো শতশত স্মৃতিগুলো আমার জীবনের বেঁচে থাকার অক্সিজেন হয়ে আজও অম্লান হয়ে আছে। নাটক, সিনেমায় কত প্রেমের মধুর মিলন হয়! আমি সেই আশায় আজও বিভোর হয়ে আছি !! হয়তো সে আর ফিরবে না আমার জীবনে, কিন্তু অন্তত সে কেন এভাবে অতীত হয়ে গেল সে উত্তরটা জানার জন্যই আমার এই বেঁচে থাকার মিথ্যে অভিনয় !!
সদস্য
এগারজন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228