ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভাইরাল সুন্দরী

হামীম রায়হান
🕐 ৫:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০১৯

সাইমা পতেঙ্গা বিচে বাদাম বিক্রি করে। সাইমার বয়স বারো কী তের। দেখতে খুব সুন্দর, হাসিটাও খুব মিষ্টি। সাইমার বাবা রোড অ্যাক্সিডেন্টে পা হারিয়ে ঘর বসা কয়েক বছর যাবৎ। মা তার একটা বাসায় কাজ করে। এতে তাদের সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে সাইমা বাদাম বিক্রি করে। এতে কিছুটা সংসারে উপকার হয়।

সেদিন বিচে একটা ছেলের কাছে বাদাম বিক্রি করে সাইমা। ছেলেটি দুই টাকা বেশি দিলে, সাইমা একটা হাসি দেয়। সাইমার হাসি দেখে ছেলেটি বলে, ‘বাহ! তোমার হাসি তো বেশ সুন্দর। দাঁড়াও তোমার একটা ছবি তুলি।’

এরপর চলে যায় আরও কয়েকদিন। একদিন সকালে পাড়ার নাজিম ভাই দৌড়ে এসে সাইমাকে বলে, ‘আরে তুই তো নায়িকা হইয়া গেছস। ফেসবুকে খালি তোর ছবি। সবাই তোর ছবিতে লাইক মারছে। তুই তো নায়িকা হইলিরে। দেখ! দুই হাজার লাইক পড়েছে তোর এই ছবিতে। সবাই তোর নাম ঠিকানা জানতে চাইতেছে।’

সাইমা প্রথমে এসবের কিছুই বুঝতে পারে না। এতটুকু বুঝতে পারে, সবাই তার ছবি পছন্দ করছে। নাজিম ভাই আরও বলে, ‘তোরে তো সবাই ভাইরাল করে দিল।’ সাইমা ভাবে ভাইরাল জিনিসটা খুব ভালো। সে খুশি হয় যদি এতে তার আয়-রোজগার বাড়ে।

পাড়ার সবাই তাকে ‘ভাইরাল সুন্দরী’ বলে ডাকতে থাকে। বিচেও সবাই তাকে এ নামে ডাকতে থাকে। বিচে গেলেই সবাই তাকে ঘিরে ধরে।

সবাই তার সঙ্গে ছবি তুলতে চায়। প্রথমে এগুলো সাইমার ভালো লাগত, কিন্তু এতে তার আয় কমতে থাকে। আগের মতো রোজগার হয় না। কেউ আর বাদাম কিনে না, খালি তার সঙ্গে ছবি তুলতে চাই।

আস্তে আস্তে এসব তার অসহ্য হয়ে ওঠে। বাবার অসুখটাও বেড়ে গেছে। টাকার দরকার। কিন্তু বাইরে বের হলেই সবাই ছবি নিয়েই ব্যস্থ হয়ে ওঠে। তা ছাড়া পাড়ার লোকেরা তাকে নিয়ে বিভিন্ন কুকথা বলা শুরু করেছে। বাইরে বের হওয়ায় বন্ধ হয়ে যাই সাইমার। পরিবারে নেমে আসে কষ্ট ও অভাব। বিভিন্নজন তাদের সাহায্য করবে বললেও কেউ তাদের সাহায্য করে না। ফলে ঘরের কোণে চোখের জলে দিন কাটতে থাকে ভাইরাল সুন্দরীর।

সভাপতি এগারজন, পটিয়া, চট্টগ্রাম

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper