বালিশাচার
হামীম রায়হান
🕐 ২:৩৪ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০১৯
মাথা মানুষের খুব মূল্যবান অঙ্গ। মানুয়ের হাত বা পা কেটে নিলে বাঁচতে পারে। কিন্তু মাথা কেটে নিলে মানুষ বাঁচে এমন খবর বা নজির নেই। যদিও তেলাপোকা বাঁচতে পারে। আবার ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডে অঙ্গরাজ্যের লর্ড ওলসেন নামের এক কৃষক তার পোষা মুরগি জবাই করলে বেঁচে ছিল আঠারো মাস!
এবার আসি মানুষের মাথার কথায়। এ পৃথিবীতে যত উন্নয়ন সব মানুষের দ্বারাই হয়েছে। এতে কারও সন্দেহ নেই। মানে এত সব উন্নয়ন মানুষের মাথা থেকেই বেরিয়েছে এবং বেরুচ্ছে। মানুষের মাথা হলো পরশ পাথর, যেখানে লাগবে সেখানেই সোনা ফলবে।
আপনার মাথা যদি আইনস্টাইনের মাথা হতো তবে এর দাম হতো কোটি কোটি ডলার। তাই তো আইনস্টাইন তার দামি মাথাটা লম্বা চুল অগোছাল করে ঢেকে রাখতেন, যাতে সেদিকে কারও নজর না যায়।
মাথার সঙ্গে বালিশের গভীর মিতালী। এই মাথাকে বালিশ কোনো নালিশ ছাড়াই পরম যত্নে ধারণ করে। এই ধারণের ফলে মাথার কিছু মেধা বালিশে টান্সফার হয়ে যায়।
ফলে মাথার সঙ্গে সঙ্গে বালিশও মূল্যবান হয়ে ওঠে। গাইতে গাইতে গায়েনের মতো। বড় বড় মনীষীরা যেসব বালিশে ঘুমাতেন সেগুলো তো আর যেন তেন বালিশ নয়!
এ কথা নিশ্চয় আমাদের বোঝার সামর্থ্য হয়েছে। এ যেমন ধরুণ, আইনস্টাইন সাহেবের ব্যবহৃত বালিশখানা আপনি কী চাইলেই পাবেন? রবীন্দ্রনাথের বালিশটা চাইলেই জোগাড় করা যাবে! পেলেও এগুলো দাম শুনে আপনি নিশ্চিত মূর্ছা যাবেন। লাখ লাখ টাকা খরচ করেও পাবেন না এমন বালিশ। আর এমন বালিশ কিনে আনার খরচও নিহাত কম নয়। চার স্তরের নিরাপত্তা দিয়ে আনতে হবে। সামান্য ৫৯৭৫ টাকার বালিশ ও বহন খরচ ৭৬০ টাকা শুনে সারা দেশ যেভাবে বালিশাচারে (নিজ উদ্ভাবিত শব্দ) লিপ্ত তা বড়ই পীড়াদায়ক! এটা কোনো কথা হতে পারে না।
বাংলাদেশের বড় বড় স্থাপনাগুলোতে দুর্নীতি ও মেধাহীনতার পরিচয় আমরা অনেক পেয়েছি। বহাদ্দারহাট ফ্লাইওভার ভেঙে কত মানুষ মারা গিয়েছিল তা নিশ্চয় সবার মনে আছে। এমন আরো অনেক দুর্নীতির উদাহরণ দিতে পারি। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের লোকরা ভাবল আমরা মেধাহীনতার পরিচয় দেব না, আমরা দুর্নীতি করব না।
আমরা মহামনীষীদের বালিশ ব্যবহার করব আর চিরতরে দুর্নীতি নির্মূল করব। কত মহৎ তাদের ভাবনা! আর এদিকে আমরা কিছু না জেনেশুনে শুরু করলাম ব্যাঙের মতো ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ! আরে আগে গিয়ে দেখুন এটা কোনো মহামনীষীর বালিশ? যদি তাই হয় তবে তা অনেক সস্তায় পেয়েছে বলে তাদের বাহবা দেবেন।
এমন বালিশ যে অমূল্য রতন। এমন বালিশে ঘুমাতে পারাটাও পরম সৌভাগ্যের হেতু। চোখে দেখাটাও সম্মানের। আমি সরকারের কাছ উদাত্ত আহ্বান জানাবো এমন বালিশ দেশে আরও আমদানি করা হোক এবং জনসম্মুখে একদিন উন্মুক্ত রাখা হোক। খেয়াল রাখতে হবে এ বালিশ যেন আবার পাচার হয়ে না যায়। আর যদি বিক্রি করা হয় তবে আমি এমন একটা বালিশ কিনতে আগ্রহী। আমার জন্য রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত বালিশখানা হলে ভালো হয়। এটার বহন খরচ আমি দিতে রাজি আছি। সর্বোপরি এ বালিশ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হোক এ কামনা।
সভাপতি
এগারজন, পটিয়া চট্টগ্রাম
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228