শাবিপ্রবির ঘটনায় রাবিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের প্রতিবাদ
রাবি প্রতিনিধি
🕐 ৮:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২২
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকদের একাংশ।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের ব্যানারে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে অবস্থান কর্মসূচি করে তারা।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ছাত্র এবং শিক্ষকদের মধ্যে যদি সুসম্পর্ক বজায় না থাকে, ছাত্রদের যদি মত প্রকাশের পরিসর না থাকে, যদি তাদের দাবি না মানা হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ভালোভাবে চলতে পারে না। শাবিপ্রবি উপাচার্য একদিকে পুলিশবাহিনী দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে আবার অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে অত্যন্ত অশোভন মন্তব্য করেছে। এরপরে আমি মনে করি তার উপাচার্য পদে থাকার আর কোনো নৈতিক অধিকার নেই। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে ১২০ ঘণ্টার বেশি অনশনে আছে, তাদের দিকে না তাকিয়ে, তাদের সাথে সুরাহার চেষ্টা না করে, সরকার যদি উপাচার্যের পক্ষে সমর্থন দেয়, তাহলে সরকার একটা বড় ভুল করবে। সরকারের প্রতি শিক্ষার্থীদের অনাস্থা আরও বেড়ে যাবে।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌভিক রেজা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্র চর্চার জায়গা, অধ্যাদেশে উপাচার্য নির্বাচনের কথা বলা আছে। কিন্তু গত ত্রিশ বছর ধরে এই অধ্যাদেশ মতো উপাচার্য নিয়োগ হয় না। অনির্বাচিত উপাচার্য ও প্রশাসকের কাজ থাকে তাদের দল তৈরি করা। এজন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে উপাচার্য নির্বাচন হওয়া একান্ত জরুরী।
তিনি আরও বলেন, শাবিপ্রবির ঘটনা এক দিনের বিস্ফোরণ নয়। ফুঁসে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। তাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক উপাচার্য প্রয়োজন।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘শাবিপ্রবিতে খুব বড় কোনো ঘটনা ছিলনা। প্রশাসন চাইলেই এটার খুব সুন্দর একটা সমাধান করতে পারত। কিন্তু তারা তা না করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ফলশ্রুতিতে যেটা আজ উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। যারা তৃতীয় পক্ষের খোঁজ করছেন, সেই তৃতীয় পক্ষ কারা? সেই ছাত্রলীগ, সেই পুলিশ। তারা তো সরকারের সহায়ক শক্তি। এই সমস্যার সমাধানের ওপর নির্ভর করবে আগামীতে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে কী ধরনের পরিস্থিতি ঘটবে। তাই এই সমস্যার একটা সুষ্ঠু ফয়সালা জরুরী প্রয়োজন।
কর্মসূচিতে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তরের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার, রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক রিদম শাহরিয়ার, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক রনজু হাসান প্রমুখ।