ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অভিন্ন নীতিমালা

অননুমোদিত নিয়োগ বন্ধ করতে হবে, আইনের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১

বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অভিন্ন নীতিমালা

বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা আনতে একটি অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, দেশের কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। এ সমস্যা উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সরকার ও ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক অর্থ ব্যয়ের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

গতকাল সোমবার ইউজিসিতে আয়োজিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন শীর্ষক দু’দিনব্যাপী  কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কাজী শহীদুল্লাহ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ যে কোনো প্রতিষ্ঠান সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য একটি ভালো আর্থিক শৃঙ্খলা প্রয়োজন। কারণ কোনো প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে আর্থিক শৃঙ্খলার ওপর।

ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ ও ইউজিসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

কর্মশালায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কারো ব্যক্তিগত স্বার্থে আইনের অপব্যবহার করা যাবে না। যে কোনো পর্যায়ের চাপে নতি স্বীকারও করা যাবে না। আইনের অপপ্রয়োগকারী দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় কর্তৃপক্ষকে তিনি সরকার ও ইউজিসির বিদ্যমান আইন, বিধিবিধান ও নীতিমালা মেনে চলার আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক ও কন্ট্রোলাররা যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন সে ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে উপাচার্যদের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অননুমোদিত জনবল নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। অস্থায়ী, মাস্টার রোল, এডহক, চুক্তি ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক চাকরি বন্ধ করতে হবে। নিয়ম বহির্ভূত সিটিং অ্যালাউন্সও দেওয়া যাবে না। এসব নিয়ম বহির্ভূত পদে কেউ বেতন ভাতা দিয়ে থাকলে তাদের (বিশ্ববিদ্যালয়কে) এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর আবু তাহের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাজেট প্রণয়নে উচ্চশিক্ষায় গুণগতমান নিশ্চিত করা, গবেষণা ও উদ্ভাবনে মনোযোগ দেওয়া, আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। বাজেট বাস্তবায়নে কোনো পর্যায়ে সমস্যা দেখা দিলে কমিশন সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

প্রফেসর আবু তাহের বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় জনগণের করের টাকায়। তিনি বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ সদ্ব্যবহার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

সভায় বক্তারা এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় না করা, অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়া, সঠিক সময়ে অর্থ ব্যয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়ানো, উপর্যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে সিন্ডিকেট গঠনসহ বেশ কিছু পরামর্শ দেন। এছাড়া বক্তারা আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন ও ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফ্রি কমানোর আহ্বান জানান।

কর্মশালায় পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ-হিসাব বিভাগের প্রধান ও বাজেট কর্মকর্তা অংশ নেন।

 
Electronic Paper