জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রচনামূলক বা সৃজনশীল প্রশ্ন বাদ দিয়ে কেবল বহুনির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা নেওয়া। বিষয় ও পূর্ণমান (পরীক্ষার মোট নম্বর) কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের দুই পত্র একীভূত করা। পাশাপাশি ২০০ নম্বরের বদলে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া। কিন্তু উভয়ক্ষেত্রেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। অর্থাৎ সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কেন্দ্রের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করে এই পরীক্ষা নেওয়ার কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

এমনটি সম্ভব না হলে এসএসসির ক্ষেত্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলের ৫০ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্ট ও ক্লাস অ্যাকটিভিটিসের ওপর ৫০ শতাংশ ফলাফল নিয়ে ফল প্রস্তুত করা হতে পারে। এইচএসসির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর এসএসসির ফলের ৫০ শতাংশ, জেএসসির ২৫ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ফলের ২৫ শতাংশ সমন্বয় করে ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। সেটি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির কাছে পাঠানো হয়েছে। সে বিষয়টি তুলে ধরতে চলতি সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন করে তা জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এর ভিত্তিতে শিক্ষা বোর্ডগুলো ফলাফল প্রকাশের কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের গতকাল বলেন, চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কবে সেটি হবে এখনো নির্ধারিত দিন ধার্য করা না হলেও চলতি সপ্তাহে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।

সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহের ১৪ অথবা ১৫ জুলাই এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হতে পারে। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী যে দিকনির্দেশনা দেবেন, তা বাস্তবায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিন এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৪ দিনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করা হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা সেটির ওপর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হঠাৎ করে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব তা শিক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিকল্প পদ্ধতি খোঁজা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নেহাল আহমেদ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আটকে আছে। সেটি আর নেওয়া সম্ভব হবে কি না বা বিকল্প পদ্ধতিতে পাস করানো হবে সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেবেন।