শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে করের বোঝা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:২৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২১
বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলসহ বেসরকারি শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব এসেছে এবারের বাজেটে। এই কর বর্তাচ্ছে শিক্ষার্থীদের ওপর। ফলে বেসরকারি শিক্ষায় ব্যাপক প্রভাব পড়ায় তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এই করা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরাও। যে ভ্যাট চাপানো হয়েছে সেটা শিক্ষার্থীদের ওপর এসে পড়বে বলে তারা মন্তব্য করেছেন তারা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ৩ জুন তার বাজেট বক্তব্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১৫ শতাংশ করারোপের কথা বলেন।
বাজেট প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রযোজ্য সাধারণ করহার হ্রাস করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ থেকে উদ্ভূত আয়ের ১৫ শতাংশ হারে কর নির্ধারণ করা হয়েছিল। সংসদে আমি এ করহার অর্থ আইনের মাধ্যমে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, শিক্ষা খাতের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের ৪ শতাংশই প্রযুক্তি খাতের। বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় ছুটিই বাড়ছে, লেখাপড়ার বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে না। এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে ৫ লাখ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করাচ্ছে তাদের ওপর ১৫ শতাংশ কর চাপানো হয়েছে যা শেষ বিচারে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়বে।
জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, ভ্যাট নির্ভরশীলতাকে গরিববিরোধী প্রতিক্রিয়াশীলতা বৈষম্যমূলক রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া। বেসরকারি শিক্ষার ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রস্তাব জাসদ বিরোধিতা করছে।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘বাজেটে বেসরকারি শিক্ষা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। বাজেটে ন্যক্কারজনকভাবে বেসরকারি শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে।’
বাজেট প্রস্তাবের পরপরই একজন শিক্ষার্থী বলেছিলেন, ‘অন্য দেশের সরকার শিক্ষায় ভর্তুকি দেয়, আর আমরা করারোপ করি। বেসরকারিতে পড়া স্টুডেন্টরা আম নাকি যে দেখলেই পাড়তে মন চাইবে?’ এ কথাটিও তিনি সংসদে তুলে ধরে সমালোচনা করেন।
এর আগে সরকার ২০১৫ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করলে টানা কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তা প্রত্যাহার করে নেয়।
এবার বাজেট প্রস্তাবের পর থেকেই বেসরকারি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা এর প্রতিবাদ করে আসছে। বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ট্রাস্টের অধীন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ট্যাক্স-ভ্যাট প্রযোজ্য নয়।