ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তালা খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২১

তালা খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের

করোনা মহামারীতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপযোগী করে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চললেও আপাতত সবার প্রতিদিন ক্লাসে যেতে হচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার একদিন আসবে। এদেিক ২০২১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।

চলতি বছরের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এর আগে আভাস দিয়েছিলেন। গতকাল রোববার তিনি সংসদে বলেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রস্তুতি নিতে বলেছি। এরপর জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শ নিয়ে ঘোষণা করব কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলব।’ করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। একই সঙ্গে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। এ গাইডলাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিকল্পনা করা হয়েছে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার।

জানা যায়, প্রাথমিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার একদিন আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বছর যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তারা এক বছর সরাসরি ক্লাস করতে পারেনি। অনলাইন ও টিভিতে অনেকে ক্লাস করেছে। কিছু শিক্ষার্থী একেবারেই ক্লাস করেনি। এ বছরের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়, তাহলে পরে কয়েক মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পাঠদান শেষে পরীক্ষা নেওয়া যাবে। এদিকে চলতি শিক্ষাবর্ষের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে চাচ্ছে না। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই শিক্ষাবর্ষে আমরা কতদিন পেতে পারি সেটার ওপরও অ্যাসেসমেন্ট করছি। পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য নূ্যূনতম যে দক্ষতাগুলো অর্জন করতে হবে তা কারিক্যুলামের মাধ্যমে কতটুকু দিতে পারবো তা বিবেচনায় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। অবশ্যই আমরা শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাদের সবাকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে অধিকাংশ অভিভাবকই স্বাগতম জানিয়েছেন সরকারেরএ সিদ্ধান্তকে। রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যলয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বদিউজ্জামান খোকন বলেন, ‘করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা কিন্তু নিয়মিতই বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে। আমার মনে হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সময় এসেছে।’ মোহাম্মদপুরের কিশোলয় বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ওপরের ক্লাসগুলো আগে খুলে পরিস্থিতি দেখা উচিত। সরকার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার যে চিন্তা-ভাবনা করছে তা সম্পূর্ণই সঠিক।’

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে গতবছর পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা নেয়নি সরকার। তবে শিক্ষার্থীদের কোথায় দুর্বলতা তা বোঝার জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। আর গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ফল ঘোষণা করা হবে অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলফলের ভিত্তিতে। সেজন্য রোববার সংসদে আইন সংশোধন করে বিল পাস করা হয়।

 
Electronic Paper