জবির ছাত্রী হল উদ্বোধনের দুই মাসেও হয়নি নীতিমালা
তৌফিকুর রহমান, জবি প্রতিনিধি
🕐 ১০:২০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ০৪, ২০২১
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব (ছাত্রী) হল উদ্বোধনের দুই মাস পার হয়ে গেলেও এখনো নীতিমালা তৈরি করেনি। নীতিমালা তৈরি না করেই তড়িঘড়ি হল উদ্বোধন করায় ছাত্রীরা অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। লিফটের কাজ বাকি রেখেই হলের উদ্বোধন করায় শিক্ষার্থীদের সিট বণ্টনেও পদক্ষেপ নিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ এখনো পুরোপুরি দেওয়া হয়নি। লিফটের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধারে কাজ চালাচ্ছে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে। এ ছাড়া কনস্ট্রাকশন, বিদ্যুৎ ও লিফটের কাজে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ পাওয়ায় রয়েছে সমস্বয়হীনতা। হলের জন্য অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। এখন থেকে পুরোদমে কাজ চালালেও সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ন্যূনতম আরও ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগবে বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গত ২০ অক্টোবর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রথম ছাত্রী হল উদ্বোধন করা হয়। নতুন বছরে ছাত্রী হলে শিক্ষার্থী ওঠানোর কথা বলা হলেও প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। এই নিয়ে হলের সিট প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা রয়েছেন অন্ধকারে। হল উদ্বোধনের পর অনেক ছাত্রী মেসবাসা ছেড়ে দেন। ইতোমধ্যে তারা বছরের শুরু থেকে হলে ওঠার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করায় আবারও মেস বাসা ভাড়া নিতে ছুটছেন ছাত্রীরা, এতে করে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
লিফট শ্রমিকরা বলেন, আামদের কাজের সুবিধার্থে প্রথমে একটি লিফট চালু করব। এই লিফটের জন্য মাত্র গাইডের কাজ শুরু হয়েছে। পুরোদমে কাজ করলে গাইডের কাজ শেষ হতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। এরপর লিফট চালু করতে আরও ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। কিন্তু আমাদের শ্রমিক কম, নিয়মিত আসে না। আর কিছু কিছু কাজ আছে বিদ্যুতের যারা টেন্ডার পেয়েছেন তাদের। তারা লাইন টানতে কম তার দিয়ে কাজ করে, আমাদের তার লাগে বেশি। আবার লিফটের জন্য যে স্পেস রাখা হয়েছে, সেটাও খুব সরু। দেয়াল ভেঙে কাজ করতে চাইলেও কনস্ট্রাকশনের লোকজন দেয় না। এভাবে সমন্বয়হীনতা চলতে থাকলে আরও এক বছরেও কাজ শেষ হবে না।
লিফটের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনসেপ্ট এলিভেটর অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আলম বলেন, কাজটা মূলত এম এস চৌধুরী নামে একটা ফার্মের। তাদের থেকে আমরা নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ শেষ করে দেওয়ার। কিন্তু কিছু ঝামেলার কারণে আমাদের মালামাল আসছে না। তবে প্রথমিক কাজগুলো এগিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। গাইডের কাজ চলছে। এরপর দরজা, কেবিনের কাজ করব। মোটামুটি আরও সময় লাগবে।
হলের প্রভোস্ট ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস এম আনোয়ারা বেগম বলেন, নীতিমালার কাজ অনেক এগিয়েছে। আমরা একটা নীতিমালা খসড়া করে প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় এখনো খোলেনি। এর মধ্যে সরকার ছুটি বাড়িয়েছে। তবে আমরা দাপ্তরিক কাজগুলো এগিয়ে নিয়েছি। রেগুলার আমরা কাজ করছি। হলে ছাত্রী ওঠানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রত্যেক বিভাগে যারা মেধাবী, প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী, ঢাকায় যাদের থাকার ব্যবস্থা নেই এবং আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ করা হবে। যেহেতু এখানে যাচাই-বাছাই করতে হবে, তাই সময় লাগবে। হলের কাজও আমরা নিয়মিত তদারক করছি।