ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাধ্যমিকে বড় পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২০

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিবর্তন আনতে পুরো কারিকুলাম পর্যালোচনা হচ্ছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত পদক্ষেপ চূড়ান্ত আকারে প্রকাশ করবে সরকার। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য অনুযায়ী, এ স্তরের শিক্ষার্থীদের কোনো বিভাগ থাকবে না, সব বিষয়েই তাদের পড়ানো হবে। তবে সরকারের এ উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে কি-না, তা নিয়ে ভাবনায় বিশেষজ্ঞরা। তারা এক্ষেত্রে শিক্ষকদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

শিক্ষার মাধ্যমিক স্তরে পরিবর্তনের কথা জানিয়ে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জাতীয় সংসদে বলেন, ‘আমাদের কারিকুলামের পুরো পর্যালোচনা হচ্ছে। শিগগিরই চূড়ান্ত রূপটি প্রকাশ করব। সেখানে কিন্তু আমাদের সব ধরনের শিক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসা- এই বিভাগগুলো নবম-দশম শ্রেণিতে আর রাখছি না। সব শিক্ষার্থী সব ধরনের শিক্ষা নিয়ে স্কুলের ১০টি বছর শেষ করবে।’

শিক্ষামন্ত্রীর ভাষ্যমতে, দশম শ্রেণি পর্যন্ত মৌলিক বিষয়গুলো সব শিক্ষার্থীকে পড়তে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, দশম শ্রেণি পর্যন্ত মৌলিক বিষয়গুলো সবাইকে পড়ানোর সিদ্ধান্ত ভালো। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হবে যোগ্য শিক্ষকের অভাব। কিছু শিক্ষক আছেন, যাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে তোলা যাবে। কিন্তু অনেকেই আছেন, যারা প্রশিক্ষণযোগ্যও নন এবং এদের সংখ্যাই বেশি। প্রশিক্ষণ গ্রহণের যোগ্যতাই তাদের নেই। অধ্যাপক ছিদ্দিকুর বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় ছয় লাখ শিক্ষক আছেন, যাদের অনেকের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ভালো অবকাঠামো না থাকলেও চলে, কিন্তু ভালো শিক্ষকের বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নবম শ্রেণির বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ উঠিয়ে দেওয়ার পর ২০২২ বা ২০২৩ সাল থেকেই নতুন কারিকুলাম ও বই দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে। এ প্রস্তুতি চলছে গত বছর থেকেই।

এ বিষয়ে আলাপ করলে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিভাগ বিভাজন না থাকাই ভালো, কারণ নবম শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীরা নিজের ইচ্ছার চেয়ে অভিভাবক কিংবা শিক্ষকদের ইচ্ছাকেই বিভাগ পছন্দের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাতে তাদের আগ্রহকেন্দ্রিক শিক্ষাগ্রহণ কঠিন হয়ে পড়ে।

শিক্ষা বিষয়ক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘গণসাক্ষরতা অভিযান’র নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের আলোকে সরকার কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে, যাকে ইতিবাচক বলেই মনে করি। এর আগে আলোচিত ‘কুদরত-ই খুদা’ কমিশনেও একই সুপারিশ করা হয়েছিল। বরং এটি আগে বাস্তবায়ন না করে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা তো ও-লেভেল পর্যন্ত মৌলিক সব বিষয়েই পড়াশোনা করে। তাহলে স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা তা থেকে এতদিন বঞ্চিত হলো কেন?

 
Electronic Paper