ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পাঠদানে ফেরার আকুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০২০

শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে দ্রুতই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্যপরিষদ। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। শিক্ষার্থী থেকে আয়নির্ভর এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে করোনার শুরু থেকে। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেক শিক্ষক অসম্মানজনক পেশায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন। করোনার এ সময়ে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র, পর্যটন, হাটবাজার, মার্কেট, রাস্তাঘাটে যাচ্ছেন, গণপরিবহন চলাচল করছে। তাহলে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো কেন খোলা যাবে না বলে প্রশ্ন রাখেন তারা।

এদিকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলো বিধিমালাগুলো মানতে নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। সরকারের দেওয়া সব শর্ত এবং করোনাকালের স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনেই পাঠদান কার্যক্রমে ফিরতে চায় দেশের ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন। কিন্ডারগার্টেন মালিকদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত আবেদন জানানোর প্রস্তুতিও চলছে। তবে সর্বাগ্রে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতির বিষয়েও সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মানতে চায় তারা। শিগগিরই সাংগঠনিকভাবে এবং লিখিত আকারে সরকারের কাছে আবেদন জানাবে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্যপরিষদ।

এ ছাড়া সরকারি কোনো প্রকার সাহায্য ছাড়া সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯৯ শতাংশ ভাড়াবাড়িতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত, যা সম্পূর্ণরূপে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর নির্ভরশীল। ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় করতে না পারায় মার্চ থেকে এ পর্যন্ত অনেকেই বাড়িভাড়া, শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিলসহ কোনো প্রকারের বিল পরিশোধ করতে পারেনি।

অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা পাওনা পরিশোধের চাপে অনেকেই অসুস্থ হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। এ অবস্থা আঁচ করতে পেরে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্যপরিষদের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্যপরিষদের সভাপতি এম ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, দেশের সব কিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। অফিস-আদালত, হাট-বাজার, কল-কারখানা, ব্যাংক-বীমা, মার্কেট, দোকান, বিভিন্ন বিনোদন স্থান, পর্যটনকেন্দ্র গণপরিবহন থেকে শুরু করে সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে বা স্বাভাবিকভাবে চলছে।

এ ছাড়াও মাদরাসার হিফজখানাও খুলে দেয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারীর কারণে সরকারি ঘোষণায় গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আর এই ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে যদি দ্রুততম সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়, তা হলে শিক্ষকদের আন্তরিকতায় লেখাপড়া কিছুটা হলেও রিকভারি করা সম্ভব হবে।

দেশের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোকে নিবন্ধন নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। গত বৃহস্পতিবার বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঞা স্বাক্ষরিত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এতে স্কুল পরিচালনা বিধিমালা পুরোপুরি মেনে চলার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। জরুরি বিজ্ঞপ্তির নির্দেশনায় বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৭ সালের ৫ জুন নির্দেশিত ১৯৬২ সালের রেজিস্ট্রেশন অব প্রাইভেট স্কুলস অর্ডিনেন্সের ক্ষমতা বলে বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নীতিমালা-২০১৭ মোতাবেক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিবন্ধন নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে ওই নির্দেশনার আলোকে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিলেও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নেওয়া থেকে বিরত রয়েছে। ওই বিধিমালার আবেদন ফরম ‘ক’ অনুযায়ী তথ্যাবলী পূরণ করে নির্ধারিত ফিসহ আবেদন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

 
Electronic Paper