মুষড়ে পড়েছেন মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৬:২০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৬, ২০২০
করোনা মহামারির কারণে সঠিক সময়ে হয়নি মাধ্যমিক বা এসএসসির ফল প্রকাশ। মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় ভালো ফল করেও ভালো নেই শিক্ষার্থীরা। কেননা এখনো একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এতে মুষড়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। করোনার এই সময়ে কবে নাগাদ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। ঘুরেফিরে সবার মনেই জাগছে সেশনজটের শঙ্কা।
ভিকারুননিসা থেকে এবার মাধ্যমিক পাস করেছেন সাদিয়া মৌটুসী। করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বেচ্ছায় ঘরকুনো হয়েছেন।
এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। এমন চমক জাগানিয়া ফলাফল করেও তিনি খুশি হতে পারছেন না। কারণ ফল ঘোষণা হয়েছে ঠিকই কিন্তু কোথাও ভর্তি হতে পারছেন না। সাদিয়া বলেন, আমি ভেবেছিলাম অনলাইনে ভর্তি করে ভিডিও কলিংয়ে হয়তো ক্লাসও শুরু হয়ে যাবে। অনেক বিশ^বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছে। আমার বড় বোনও ভিডিও কলে ক্লাস করছেন। কিন্তু আমরা পড়ে গেলাম সেশনজটে। এখন যদি এক বছর ক্ষতি হয়
একই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নুমায়েরও। ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ থেকে সাধারণ জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছেন। এরপর থেকে প্রতিদিন কলেজে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছেন। কলেজ নিয়ে অনেক ফ্যান্টাসিও রয়েছে তার। তবে এখন তিনি ধারণা করছেন একাদশে হয়তো এবছরেই ভর্তি সম্ভব হবে না। নুমায়ের বলেন, প্রথম বছরটা হয়তো পড়াই হবে না। সরাসরি দ্বাদশে ভর্তি হতে হবে। সেক্ষেত্রে পড়াশোনার চাপ থাকবে বেশি। এই চাপ পড়বে বিশ^বিদ্যালয় জীবনে এবং ক্যারিয়ারে। জানি না কি হবে!
তবে শিক্ষার্থীরা এমন শঙ্কা প্রকাশ করলেও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব কমিটি প্রধান মু. জিয়াউল হক বলেছেন, এবারের এসএসসি উত্তীর্ণরা যথাসময়েই এইচএসসিও শেষ করতে পারবেন। তাদের জন্য সেভাবেই পরিকল্পনাও সাজানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এটা সত্য যে দেরি হচ্ছে। এই দেরিটা আমরা ইচ্ছা করে করছি না। করোনার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। সময় ঠিক থাকলে এতদিনে হয়তো ক্লাস শুরু হয়ে যেত। এখন সেটি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সময়ের ঘাটতি পূরণ করতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একটি সূত্র বলছে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম জুলাই মাসের মাঝামাঝি কিংবা শেষ দিকে শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরো আবেদন প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হবে অনলাইনে। এমনকি স্কুল ফি কিংবা ভর্তি ফি-ও জমা নেওয়া হবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে একাদশের ক্লাস শুরুর সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, সময়ের কারণে চাইলেও অনেক কিছু করা সম্ভব হয়ে উঠে না। আমরা চাইছি শিক্ষাঙ্গনগুলো শিক্ষার্থীদের কোলাহলে আবারও মুখর হয়ে উঠুক। কিন্তু সেটি করতে পারছি না। করোনার কারণে যতটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটি পুষিয়ে নেওয়া হবে। খুব শিগগিরই এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এ বছর এই পরীক্ষায় ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ গড়ে অর্থাৎ ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী।