মেস ভাড়া নিয়ে বিপাকে ঢাকায় থাকা শিক্ষার্থীরা
শাকিল আহমেদ, ঢাকা কলেজ
🕐 ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২০
বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের নাম করোনা। সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কবে খুলবে তারও নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় মেস ভাড়া নিয়ে বিপাকে আছেন বহু শিক্ষার্থী। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অনেক শিক্ষার্থী আছেন আরও বিপাকে। কারণ অনেকের টিউশনি বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের খণ্ডকালীন চাকরি চলে গেছে। অনেকে অবস্থান করছেন গ্রামের বাড়ি। যারা ঢাকা আছেন, তাদেরও চলে যেতে হচ্ছে। কিন্তু ভাড়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন মালিকরা।
ভুক্তভোগীরা বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় টিউশনি চলে গেছে। ঢাকায় থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় কীভাবে ভাড় দেব? মালিকরা বিষয়টি মানছেন না। অনেকে কাকুতি-মিনতি করে সময় নিচ্ছেন। ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, টানা দুই মাসের ও অধিক কলেজ বন্ধ। টিউশনটাও বন্ধ হয়ে গেছে। আর বাড়ি থেকে টাকা পাঠাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাবা-মাকে।
অন্যদিকে মেস ভাড়া দিতে চাপ প্রয়োগ করছেন মালিকরা। এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাড়ি চলে যাব। ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ। এ পরিস্থিতিতে ঢাকা থাকা খুব ভয়াবহ। কোচিংয়ে ক্লাস নিতাম। কিন্তু কোচিং বন্ধ থাকায় টাকা আয় করতে পারছি না। আর বাড়ি থেকে টাকা আনাও সম্ভব নয়। কেননা, দেশে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। এজন্য মেসে থাকা সম্ভব নয়।
তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকাতে পার্টটাইম একটা চাকরি করে লেখাপড়ার খরচ চালাতাম। করোনার পর হঠাৎ করেই বাড়িতে আসি। চাকরি নেই, বেতনও নেই। বাসামালিক একটানা ভাড়া চাচ্ছেন।
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজ অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের এমন কষ্ট অনুভব করি। তাদের জন্য সত্যি খুব কষ্ট হয়। সরকারের পক্ষ থেকে ভাড়াটিয়াদের প্রতি সদয় আচরণ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, সংকটপূর্ণ এ সময়ে মেস মালিক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সহনশীল হতে হবে। কেননা, এখন সবাই অবরুদ্ধ। অনেক শিক্ষার্থী নিজের খরচ নিজেই সংগ্রহ করে। তারা এখন ঘর থেকেই বের হতে পারছে না। আর অনেক অভিভাবকের রোজগারও বন্ধ।
এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ভাড়ার বিষয়টি মালিকদের মানবিক বিবেচনায় আনতে হবে। আবার মালিকদের অবস্থার কথাও ভাবতে হবে। অনেকের পরিবার-পরিজনের খরচ এ ভাড়া থেকেই আসে। আমার আহ্বান, সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকেন।