ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভর্তি জালিয়াতি চক্রের তথ্য ফাঁস

তিতলি দাস, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
🕐 ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াতি চক্রের তথ্য ফাঁস হয়েছে। জালিয়াত চক্রের সদস্যের ফাঁস হওয়া সাত মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডে বেরিয়ে এসেছে মূল চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকা সবার তথ্য। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির রহমানের কাছ থেকে পাওয়া যায় এ রেকর্ডটি।

অডিও রেকর্ড থেকে জানা যায়, আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায় প্রক্সি অথবা প্রশ্ন পত্রফাঁসের বিনিময়ে প্রতি পরীক্ষার্থীকে চান্স পাইয়ে দেওয়ার শর্তে লেনদেন করে থাকে এ চক্র। বর্তমানে প্রক্সি জালিয়াত তাদের জন্যে নিরাপদ হয়ে উঠেছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে এক শিক্ষার্থীকে প্রক্সি প্রক্রিয়ায় ভর্তি করিয়ে দিবে এমন একটি চুক্তি করার কথোপকথন রেকর্ড আকারে ফাঁস হয়। যেখানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শফিক খানের সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে এসেছে। ফাঁস হওয়া রেকর্ডে বলা হয়েছে শফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন সিন্ডিকেট।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতে ঝামেলা হলে সব সমস্যার সমাধান করে থাকেন শফিক খান। ভর্তি বাণিজ্যের উপার্জিত অর্থে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন শফিক।

এছাড়া এবারের পরীক্ষায় সাতজন পরিক্ষার্থী আছে সাব্বিরের। যাদের প্রক্সি জালিয়াতি করে ভর্তি করা হবে। তার একমাত্র ইচ্ছা এবারের টাকা দিয়ে একটা বাইক কিনবে।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ চক্র সক্রিয়। সাব্বির কেবল কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, জাহাঙ্গীরনগর, শাবিপ্রবি, মাওলানা ভাসানীতেও এ জালিয়াতি করে থাকে।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ডি’ ইউনিটে প্রথম শিফটের প্রকাশিত ফলাফলে জালিয়াতি করে পঞ্চম স্থান অধিকার করেন মারুফ রহমান নাম এক শিক্ষার্থী। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, সিএসই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী তুষার জিন্না ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আপেল মাহামুদ আকাশের মাধ্যমে শফিকের নেতৃত্ব দেওয়া জালিয়াত চক্রের সদস্য সাব্বিরের মাধ্যমে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে।

তবে আপেল মাহমুদ আকাশ জানান, এটি মিথ্যা। এগুলোর সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি কেবল তুষার ভাইয়ের কথায় মারুফের বাসায় কথা বলেছি।

সাব্বিরের জড়িত থাকার বিষয়ে স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানিয়া আফরিন তন্বী বলেন, অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনবে প্রশাসন। তবে সাব্বিরের নামের সঙ্গে যেহেতু আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী পরিচয়টা রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, জালিয়াতি করে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী আটক হয়েছে এবং তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও দুজন শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে এসেছে। যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

 
Electronic Paper