ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কাঠগড়ায় জাবি ভিসি

প্রক্টর-ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁস

তুষার রায়
🕐 ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) উন্নয়ন প্রকল্পের বিশাল বরাদ্দ থেকে এক কোটি টাকা শাখা ছাত্রলীগ (জাবি শাখা) নেতাদের বণ্টনের অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে। সদ্য অব্যাহতি পাওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের ফোনালাপে এ কথা উঠে আসে। ওই ফোনালাপে দাবি করা হয়, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ঈদ সালামি হিসেবে জাবি ভিসি এক কোটি টাকা দিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে।

অডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনা চলছে। এই ডামাডোলের মধ্যেই গতকাল ফাঁস হলো জাবি প্রক্টর অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল হাসান ও জাবি শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তরের ফোনালাপের অডিও। এটি ভাইরাল হওয়ার পর অন্তর অভিযোগ করেছেন, সাদ্দাম-রাব্বানীর ফোনালাপের দায় তাকে দিচ্ছেন প্রক্টর। স্যার আমাকে হুমকিও দিয়েছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক ফিরোজ-উল হাসান। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে জাবি প্রশাসন।

এদিকে এ ঘটনায় বিএনপি জাবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। কয়েকটি ছাত্র সংগঠন এ ঘটনা তদন্তের দাবি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, উপাচার্য ফারজানার বিরুদ্ধে অভিযোগ বড় ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এখন এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। এটা অনেক বড় নৈতিকতার প্রশ্ন।

চাউর হয়, প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য ভিসি জাবি শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের এক কোটি ষাট লাখ টাকা দিয়েছেন। এরপরই আসরে নামেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তারা ভিসির সঙ্গে দেখা করে পাঁচ থেকে ছয় পারসেন্ট চাঁদা দাবি করেন বলে জানান ভিসি। ভিসি রাজি না হওয়ায় তারা অশোভন আচরণও করেন। এ খবর পৌঁছে যায় খোদ প্রধানমন্ত্রীর কানে। এ ছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগে গত শনিবার তাদের ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি দেন শেখ হাসিনা। এরপরই ভিসির সঙ্গে টাকা ভাগাভাগির বিষয়ে রাব্বানী ও সাদ্দাম হোসেনের কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়।

ওই কথোপকথন অনুযায়ী, উপাচার্য যাদের টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ এসেছে, তাদেরই একজন টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করছেন। উপাচার্যের বাসবভনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চল, সহ-সভাপতি তাজসহ সাদ্দাম নিজেই উপস্থিত ছিলেন।

কথোপকথনের এক পর্যায়ে টাকা ভাগবাটোয়ারা প্রসঙ্গে রাব্বানীকে সাদ্দাম জানান, ‘উপাচার্যের সঙ্গে তাদের বনিবনা হয়েছে এবং হলে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জাবি ছাত্রলীগকে এক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬০ লাখ টাকা টাকার ব্যাপারে জুয়েল ও চঞ্চলের সঙ্গে ভিসির আলাদা বনিবনা হতে পারে। তবে জুয়েলকে ৫০ লাখ, চঞ্চলকে ২৫ লাখ এবং তাকে (সাদ্দাম) ২৫ লাখ টাকা করে উপাচার্য নিজেই ভাগ করে দিয়েছেন। ’

উপাচার্য নিজেকে এবং তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ দিয়েছেন বলে মনে করেন রাব্বানী। তবে এ কথোপকথনকে ‘অসত্য, উদ্দেশ্যমূলক ও সাজানো’ বলছে জাবি কর্তৃপক্ষ।

সোমবার এক সংবাদ জাবি প্রশাসন জানায়, ‘উপাচার্য কাউকে টাকা দেননি। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই ফোনালাপের গল্প তৈরি করেছেন রাব্বানী। ’
এদিকে অপসারিত হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা এক চিঠিতে রাব্বানী বলেন, ‘উপাচার্য ম্যামের স্বামী ও ছেলে জাবি ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে কাজের ডিলিংস করে মোটা অঙ্কের কমিশন বাণিজ্য করেছে।’ তবে ফারজানা ইসলাম গত শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শোভন-রাব্বানীর মূল উদ্দেশ্য ছিল যে, তারা ঠিকাদারের কাছ থেকে কিছু শতাংশ (টাকা) নেবে। কিন্তু আমার কাছে এসে তারা হতাশ হয়েছে। আমি কাউকে টাকা দেইনি।’

এদিকে জাবি প্রক্টর ফিরোজ-উল হাসানের সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে অন্তর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ ব্যাচ পর্যন্ত এই টাকার ভাগ পেয়েছে। এটি অস্বীকার করার কিছু নেই স্যার।’

এ সময় প্রক্টর জানতে চান সাদ্দাম যে কথাগুলো বলছে, এ কথাগুলো কতটুকু সত্য। তখন অন্তর বলেন, সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের দায়িত্ব আমার না। একপর্যায়ে প্রক্টর ওই ফোনালাপের দায় অন্তরকে দেন। এই অডিও ফাঁসের পর প্রক্টর তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অন্তর। তবে প্রক্টর বলেন, আমি হুমকি দেইনি।

এদিকে সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অর্থ লেনদেনের ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই নেতার শাস্তি হয়েছে। উপাচার্যের কী হবে? উপাচার্যকেও অপসারণ করা উচিত।’

এ ঘটনার জেরে জাবি শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনগুলো আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেছে। একটা অংশের মতে, উপাচার্য ষড়যন্ত্রের শিকার। আরেকটা অংশ মনে করে, উপাচার্য ছাড়াও তার স্বামী ও ছেলের নাম জড়িয়ে গেছে এখানে। বিষয়টি গুরুতর। তাই স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করা হোক। কারণ জাবি উপাচার্যের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, যেভাবেই হোক ফারজানা ইসলাম অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন। সত্যটা কি, তা প্রমাণে তার আরও কিছু করার আছে। সরকার প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে বের করুক।

এবার প্রক্টর-ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁস
এবার ফাঁস হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতার ফোনালাপের অডিও। একের পর এক অডিও ফাঁসের ঘটনায় ক্যাম্পাসে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কোটি টাকা লেনদেন নিয়ে ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁসের কয়েক ঘণ্টা পরই নতুন এ অডিও ফাঁস হয়।

প্রক্টরের ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হামজা রহমান অন্তর। হামজা নিজেই এ ফোনালাপ ফাঁস করেন। ফোনালাপের একপর্যায়ে অন্তর বলেন, ‘টাকার কথা এখন টক অব দ্য টাউন। এটা তো অস্বীকার করার কিছু নেই স্যার।’

ছাত্রলীগের পদ হারানোর আগে অন্তরের মোবাইল ফোন দিয়ে টাকা লেনদেনের খবর নিয়েছিলেন রাব্বানী। টাকার বিষয়ে জানতেই প্রক্টর ফিরোজ-উল-আলমকে ফোন করেন অন্তর। তাদের ফোনালাপেও টাকা লেনদেনের তথ্য ওঠে আসে। লেনদেনের অডিও ভাইরালের পর জাবি ছাত্রলীগের এ নেতা খোলা চিঠিও দিয়েছেন।
কথোপকথনের সময় অন্তর দৃঢ়তার সঙ্গে প্রক্টরকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ ব্যাচ পর্যন্ত এ টাকার ভাগ পেয়েছে। এটি অস্বীকার করার কিছু নেই, স্যার।

প্রক্টর ফিরোজ-উল-আলম ও হামজা রহমান অন্তরের কথোপকথনটি পাঠকের আগ্রহ বিবেচনা করে গ্রন্থিত হলো-

অন্তর : স্যার, আসসালামু আলাইকুম।
প্রক্টর : অন্তর, তুমি তোমার ফোন থেকে এমন একটা অডিও বানাইলা কেন?
অন্তর : স্যার আমি তো কিছু জানি না।
প্রক্টর : তোমার ফোন থেকেই তো কথা হয়েছে।
অন্তর : কথা তো হয়েছে দু’পক্ষ থেকে স্যার, আমার ফোন থেকে কিছু হয়নি স্যার, এইটা শিউর থাকেন।
প্রক্টর : তুমিই তো কথা বললা, তোমার ফোন থেকেই তো কথা বলাই দিলা।
অন্তর : আমার ফোন থেকে কথা হইছে, কিন্তু ওই পাশে তো রাব্বানী ভাই ছিল। এখন রেকর্ডটা কি ওই পাশ থেকে হইছে নাকি গোয়েন্দা সংস্থা করছে সেটা তো আমি জানি না।
প্রক্টর : কবে তোমার সঙ্গে এই কথা হইছে?
অন্তর : স্যার, পরশু দিন রাতে যখন রাব্বানী ভাইদের কমিটি ভেঙে যাচ্ছিল। তখন আমারে হঠাৎ করে ফোন দিছে রাব্বানী ভাই। তখন আমার সঙ্গেই ছিল। তখন আমি বললাম, ভাই আমি তো বেশিকিছু জানি না, আপনি সাদ্দাম ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাদ্দাম ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলল। কথা বলে, আমার ফোন তো লক দেওয়া আছে, আমার ফোনে তো কিছু করার সুযোগ নেই। ফোন কাটার সঙ্গে সঙ্গেই ফোনটা আমার হাতেই চলে আসে।
প্রক্টর : কিন্তু তোমার ফোন থেকেই তো কথোপকথনটা হলো রাব্বানীর সঙ্গে।
অন্তর : স্যার, আমার ফোন থেকে কথোপকথন কিন্তু ওই পাশে তো রাব্বানী ভাই ছিলেন।
প্রক্টর : রাব্বানীর যদি এমন রেকর্ড থাকে তাহলে এতদিন করেনি কেন? এতদিন তোমার সঙ্গে কথা বলে আজকে সেটা প্রকাশ করতেছে কেন? ওই দিন করত, কালকে করত। নিজের হাতে ক্ষমতা নেই বলে বিশ্ববিদ্যালয়টাকে নষ্ট করতে চায় কেন?
অন্তর : স্যার, আমি তো বেশি কিছু বলিনি, আপনি হয়তো শুনেছেন। আমি ধরাই দিছি ফোনটা।
প্রক্টর : হ্যাঁ, তুমি ধরাই দিছো ফোনটা। কিন্তু আল্টিমেটলি ফোনটা তো তোমার।
অন্তর : স্যার, আমার ফোনে ফোন দিতে পারে না স্যার? সে আমার নেতা না?
প্রক্টর : না, ফোন দিতেই পারে। কিন্তু এই যে গল্পগুলো; এই গল্পগুলো আগে বলেনি কেন? যদি এই গল্পগুলো থাকে?
অন্তর : স্যার, এই গল্পগুলো তো এখন টক অব দ্য টাউন। এটা তো অস্বীকার করারও কিছু নাই স্যার। জাহাঙ্গীরনগরের এইটা তো একটা চলমান ইস্যু। আমি কি এইটা অস্বীকার করব। রাব্বানী ভাই যখন আমারে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করছে আমি কি অস্বীকার করব? সে আমার নেতা না?
প্রক্টর : তুমি কি অস্বীকার করবা, তোমাকে কি অস্বীকার করতে বলছি? তোমাকে তো আমি কিছু অস্বীকার করতেই বলিনি। তুমি স্বীকার করবা বা অস্বীকার করবা সেটা তো তোমার ব্যাপার।
অন্তর : স্যার, আপনি তো ভালো করেই জানেন। আমি হয়তো বাইরে একরকম বলব, কিন্তু আমার ঘরে যখন কেউ জিজ্ঞাসা করবে তখন তো আমি আর মিথ্যা বলব না।
প্রক্টর : আমি তোমাকে তো সত্য-মিথ্যা বলতে বলছি না।
অন্তর : আমার ফোন থেকে কিছু হয়নি স্যার, এইটা শিউর থাকেন।
প্রক্টর : কিন্তু এই যে সাদ্দাম যে কথাগুলো বলছে, এই কথাগুলো কতটুকু সত্য?
অন্তর : স্যার, সত্য-মিথ্যার বিষয়টা তো জাস্টিফিকেশনের দায়িত্ব আমার না। রাব্বানী ভাই যদি সাদ্দাম ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলত সেটাও ফাঁস হইত। কিন্তু আমার ফোন থেকে কথা বলে ফাঁস হয়ে তো এটা কিছু হয়ে আসে না। এই জিনিসটা তো স্যার সবাই জানে, আপনিও জানেন।
প্রক্টর : না, আমি বলি তোমাকে, ফোনটা যেহেতু তোমার। দায়টা কিন্তু তোমাকেই নিতে হবে।
অন্তর : স্যার, ফোনালাপ ফাঁস হয় না? নির্বাচনের আগে দেখেননি আওয়ামী লীগ নেতাদের...।
প্রক্টর : হ্যাঁ হয়। কিন্তু যেহেতু তোমার ফোনে করছে তুমি কি দায়টা এড়াইতে পারো?
অন্তর : স্যার, আমার কোনো দায় নেই স্যার, কারণ আমি করিনি স্যার।
প্রক্টর : তুমি করনি ঠিক আছে, কিন্তু ধর বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে এত বড় ষড়যন্ত্র। ওর অস্তিত্বে টান পড়ছে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এরকম করবে সে?
অন্তর : বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ষড়যন্ত্র, বিষয়টা এরকম না স্যার। ছাত্রলীগ নিয়েও তো ষড়যন্ত্র চলতেছে স্যার গত চার-পাঁচদিন ধরে।
প্রক্টর : এইটা তো জাহাঙ্গীরনগরের ইস্যুর সঙ্গে না, তাদের বিরুদ্ধে তো পুরা গ্লোবাল ইস্যু আছে।
অন্তর : স্যার, আমি জাহাঙ্গীরনগরে না পড়লেও ছাত্রলীগ করতাম। আমার কাছে ছাত্রলীগ আগে।
প্রক্টর : সেটা তোমাকে আমি বলিনি। ছাত্রলীগ আগে ভালো কথা। কিন্তু এখন জাহাঙ্গীরনগরে যেহেতু পড় জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রলীগ করো।
অন্তর : জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রলীগ তো আর জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে তৈরি হয়নি। এইটা সেন্ট্রাল ছাত্রলীগের একটা ইউনিট।
প্রক্টর : তুমি কিন্তু উল্টা দিকে কথা বলতেছো অন্তর।
অন্তর : না স্যার, আমি যৌক্তিক কথা বলতেছি। আমি আমার বাইরের লোক জিজ্ঞাস করলে আমি একটা কথা বলব। কিন্তু ঘরের লোক জিজ্ঞাস করলে আমি কি উল্টাপাল্টা কথা বলব? আমি কি বলব, ভাই হ্যাঁ এরকম কিছু ঘটেনি।
প্রক্টর : আমি তোমারে বলি, তুমি জাহাঙ্গীনগরে যদি না পড়তা, জাহাঙ্গীনগরের ছাত্রলীগ হিসেবে কিন্তু ইস্টাবলিস হতে না। জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রলীগ হিসেবেই তোমার পরিচয়।
অন্তর : স্যার, ক্যাম্পাসের ৪৪ থেকে ৪৫ ব্যাচ পর্যন্ত টাকা পাইছে। আমি এটা গোপন রাখার কে স্যার?
প্রক্টর : আচ্ছা তোমাদের কে টাকা দিল আর কে টাকা দেয়নি সেটা দেখার দায়িত্ব কি আমার?
অন্তর : স্যার আমাকেও তো টাকা সাধছে, আমি তো নেইনি স্যার।
প্রক্টর : না তোমাকে কে সাধছে, না সাধছে সেটা তো আমি জানি না। কে দিয়েছে সেটা দেখার দায়িত্ব আমার নাকি?
অন্তর : স্যার, আপনি যদি চান আমি আপনাকে প্রমাণ দেখাতে পারব। ৪৪ থেকে ৪৫ ব্যাচও টাকা পাইছে।
প্রক্টর : আরে বাবা, এইটা নিয়ে কেন তুমি পড়ে আছো? টাকা কে দিছে, আমি তো সেটা জিজ্ঞাস করছি না।

ফোনালাপটি ফাঁস করায় প্রক্টর তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অন্তর। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর ফিরোজ-উল-আলম বলেন, অন্তরের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভালো। আমি আসলে ফোনালাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ফোন দিয়েছি। সে অভিযোগ করেছে আমি হুমকি দিয়েছি। আসলে এখানে হুমকিস্বরূপ একটা শব্দও নেই। অন্তর আসলে হতাশা থেকে এমন অভিযোগ করেছে।

 
Electronic Paper